সম্পাদিত পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য
ইরানের
প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি প্রাথমিকভাবে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তি মেনে চলার
ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর ৬ রাষ্ট্রের
সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার ইরানের পরমাণু ইস্যুতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
যতোদিন দেশগুলো এ চুক্তির শর্তসমূহ মেনে চলবে, ইরানও তার উল্টো পথে হাঁটবে
না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে
হাসান রুহানি বলেন, বিশ্বের দেশগুলোর অবশ্যই জানা উচিত যে, ঠকানোর কোন
উদ্দেশ্য নেই আমাদের। তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন,
বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রসমূহ যদি ‘একদিন ভিন্ন পথ অনুসরণের সিদ্ধান্ত
নেয়’, সেক্ষেত্রে ইরানের সামনে অন্য উপায় থাকবে। তিনি বলেন, যদি অপর পক্ষ
তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে, ইরানও তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।
রুহানি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব এখন ইরানের নিজ ভূখ-ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের
অধিকারকে মেনে নিয়েছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কারও জন্য হুমকি নয়। হাসান
রুহানি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও আমাদের সব পরমাণু প্রযুক্তি কেবলই
ইরানের উন্নতির জন্য। তিনি আরও বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও প্রযুক্তি
আঞ্চলিক কোন দেশ বা বিশ্বের বিরুদ্ধে নয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইরানকে পরমাণু
কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে। ইরান চুক্তির শর্ত মেনে চলার ফলস্বরূপ দেশটির
ওপর চাপানো অবরোধসমূহ প্রত্যাহার করা হবে। এর আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান ওই অঞ্চল বিশেষ করে
ইসরাইলের জন্য মারাত্মক হুমকি। হোয়াইট হাউস অবশ্য আশ্বস্ত করে বলেছে,
ইরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো
এমন কোন চুক্তি স্বাক্ষর করবে না, যা ইসরাইলের জন্য হুমকির কারণ হবে।
রুহানি বলেছেন, চুক্তিটি ইঙ্গি দিচ্ছে, ইরান বিশ্বের সঙ্গে পারস্পরিক
সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে পারে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল বলে
পুনর্ব্যক্ত ইরানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ইরান কখনও ‘দ্বিমুখী ছিল না’।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির সঙ্গে
যে আগামীতে কোন চূড়ান্ত চুক্তিতে উপনীত হওয়ার বিষয়টিকে তিনি সম্মানের
চোখেই দেখবেন। প্রাথমিক চুক্তি সম্পাদনের দিনটিকে ইরানের জন্য ‘ঐতিহাসিক’
বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রুহানি বলেন, কেউ কেউ মনে করেন, বিশ্বের সঙ্গে হয়
আমাদের লড়াইয়ে নামা উচিত বা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রসমূহের কাছে
আত্মসমর্পণ করা উচিত। আমরা বলি, এটা তার কোনটাই নয়। তৃতীয় একটি পথ রয়েছে।
আমরা বিশ্বের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।
No comments