বিদ্যুতের যন্ত্রণা, পানির কষ্ট by অরূপ দত্ত
গুলিস্তান–যাত্রাবাড়ী উড়ালসড়কের নিচে বিভাজকের খোপে যথেচ্ছ ব্যবহার। শেরেবাংলা স্কুলের সামনে থেকে তোলা ছবি l হাসান রাজা |
সকাল
১০টার দিকে হঠাৎ দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি। সঙ্গে সঙ্গে চলে গেল বিদ্যুৎ।
বাতাস-বৃষ্টি থেমে গেল আধা ঘণ্টার মধ্যেই। কিন্তু বিদ্যুৎ এল প্রায় আড়াই
ঘণ্টা পর। এর আধা ঘণ্টা পর আবারও গেল বিদ্যুৎ। এল বেলা সোয়া দুইটায়। এরপর
বেলা সাড়ে তিনটায় গিয়ে এল সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে।
আবার ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিদ্যুৎ গেল, এল ভোর পাঁচটায়। গত বুধবার দিন-রাতে বিদ্যুৎ-যন্ত্রণার চিত্র এভাবে তুলে ধরলেন রাজধানীর অভয় দাস লেনের ১৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আবুল কাশেম ও তাঁর পরিবার। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। এই পরিবারের প্রতিবেশী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ঝুমুর দেবনাথ বললেন, ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ যেতেই পারে। কিন্তু তাঁদের এলাকায় কোনো কারণ ছাড়াই দিনে তিন-চারবার বিদ্যুৎ যায়। বিদ্যুৎ না থাকলে পানিও থাকে না। হাটখোলার একটি মনিহারি দোকানের মালিক আবদুস সবুর বলেন, কয়েক দিন আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখন ২৪ ঘণ্টায় এক সেকেন্ডের জন্যও লোডশেডিং হয় না। তাহলে তাঁদের এলাকায় প্রতিদিন গড়ে চারবার বিদ্যুৎ যাওয়াকে কী বলবেন, লোডশেডিং নাকি ভুতুড়ে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট? অভয় দাস লেন ও হাটখোলা পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডে আরও আছে কে এম দাস লেন, রামকৃষ্ণ মিশন রোডের একাংশ, পেয়াদাপাড়া, জয়কালী মন্দির, ফোল্ডার স্ট্রিট, ভগবতী ব্যানার্জি রোডসহ আশপাশ। বিদ্যুৎ নিয়ে অভিযোগ এই ওয়ার্ডের প্রায় সব বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীর।
ওয়ার্ডবাসী বলেন, কখনো ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ, কখনো ওভার ভোল্টেজের কারণে তো বিদ্যুৎ যায়ই, এখন যায় কারণে-অকারণে। বুধবার সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা সাপ্তাহিক বাজারের মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করলেন পেয়াদাপাড়ার বাসিন্দা সোহাগী বেগম। শুধু বিদ্যুতের ভোগান্তি নয়; পানির কষ্ট, আবর্জনা, রাস্তায় খানাখন্দ, জলাবদ্ধতা, যানজট—সবই আছে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য ছোটাছুটি: গতকাল সকাল ১০টার দিকে কে এম দাস লেনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের হাতে কলস বা জারিকেন। কথা বলে জানা গেল, তাঁরা ছুটছেন স্বামীবাগ ও গোলাপবাগ পানির পাম্প থেকে পানি আনতে। তাঁদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ কামরুল ইসলাম বললেন, এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাসায় লাইনে ওয়াসার যে পানি আসে, তা পান করা তো দূরের কথা, ব্যবহারেরও অনুপযোগী।
হুমায়ুন সাহেবের গেট এলাকার বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম সরকারি ব্যাংকের কর্মচারী। শুক্রবার ছুটির দিনে তিনি সাধারণত বিশ্রাম নেন। কিন্তু তাঁর হাতেও দেখা গেল বড় দুটি জার। বললেন, বিশ্রাম নেওয়ার উপায় নেই। পানির কষ্ট বড় কষ্ট। রামকৃষ্ণ মিশন রোড, পেয়াদাপাড়ায়ও পানির কষ্ট। রামকৃষ্ণ মিশন রোডের ৮/২-এ নম্বর বাড়ির প্রহরী আবদুল লতিফ দুঃখ করে বলেন, তাঁর চাকরি পাহারা দেওয়ার। কিন্তু এখন আসল চাকরি, সব ফ্ল্যাটমালিকের জন্য বালুর মাঠের ওয়াসার পাম্পে গিয়ে বিশুদ্ধ পানি আনা। তবে গতকাল সকাল থেকে পাম্পের পানিতেও গন্ধ। মালিকেরা পানি বদলে আনতে বলেছেন। বালুর মাঠের পাম্পে গিয়ে জানা যায়, পানি পরিশোধনের জন্য বেশি ওষুধ দেওয়ার কারণে এমন গন্ধ।
ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ বি এম কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে দূষণের মাত্রা বেশি হওয়ায় শোধনে সমস্যা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য ক্লোরিন বেশি দিতে হচ্ছে। তবে এতে পানির ক্ষতি হয় না।
উড়ালসড়কের নিচে ভাগাড়, গর্ত: মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) বেশ কিছু অংশ ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। গতকাল বিকেল চারটার দিকে জয়কালী মন্দির থেকে রাজধানী সুপার মার্কেট পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, উড়ালসড়কের নিচে বিভাজকের (মিডিয়াম) ওপর আবর্জনার ভাগাড়।
শেরেবাংলা স্কুল ও কলেজ এলাকার টায়ারের দোকানি ওসমান গনি বলেন, উড়ালসড়ক নির্মাণের সময় ধুলাবালি আর কাদামাটির ভোগান্তি সহ্য করেছেন। এখন সহ্য করতে হচ্ছে আবর্জনার গন্ধ। অপর দোকানি মিল্লাত হোসেন বলেন, ওয়ারী, হাটখোলা ও আশপাশের এলাকার অনেকেই উড়ালসড়কের নিচের অংশকে আবর্জনা ফেলার জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন। প্রতিদিন এখানে যানজটও হয়। দেখা যায়, জয়কালী মন্দিরের কাছে উড়ালসড়কের নিচে ও পেয়াদাপাড়ায় রাস্তায় খানাখন্দ। জয়কালী মন্দিরের কাছে একটি বড় গর্ত রয়েছে। যেখানে রিকশা-অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এলাকাটি সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন। এই অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল হাশেমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, উড়ালসড়কের নিচের বিভাজন অংশ দেখার দায়িত্ব তাঁদের নয়। তার পরও এলাকাবাসীকে আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে রাস্তার গর্ত শিগগির মেরামত করা হবে।
আবার ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিদ্যুৎ গেল, এল ভোর পাঁচটায়। গত বুধবার দিন-রাতে বিদ্যুৎ-যন্ত্রণার চিত্র এভাবে তুলে ধরলেন রাজধানীর অভয় দাস লেনের ১৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আবুল কাশেম ও তাঁর পরিবার। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। এই পরিবারের প্রতিবেশী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ঝুমুর দেবনাথ বললেন, ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ যেতেই পারে। কিন্তু তাঁদের এলাকায় কোনো কারণ ছাড়াই দিনে তিন-চারবার বিদ্যুৎ যায়। বিদ্যুৎ না থাকলে পানিও থাকে না। হাটখোলার একটি মনিহারি দোকানের মালিক আবদুস সবুর বলেন, কয়েক দিন আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখন ২৪ ঘণ্টায় এক সেকেন্ডের জন্যও লোডশেডিং হয় না। তাহলে তাঁদের এলাকায় প্রতিদিন গড়ে চারবার বিদ্যুৎ যাওয়াকে কী বলবেন, লোডশেডিং নাকি ভুতুড়ে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট? অভয় দাস লেন ও হাটখোলা পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডে আরও আছে কে এম দাস লেন, রামকৃষ্ণ মিশন রোডের একাংশ, পেয়াদাপাড়া, জয়কালী মন্দির, ফোল্ডার স্ট্রিট, ভগবতী ব্যানার্জি রোডসহ আশপাশ। বিদ্যুৎ নিয়ে অভিযোগ এই ওয়ার্ডের প্রায় সব বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীর।
ওয়ার্ডবাসী বলেন, কখনো ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ, কখনো ওভার ভোল্টেজের কারণে তো বিদ্যুৎ যায়ই, এখন যায় কারণে-অকারণে। বুধবার সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজে রাখা সাপ্তাহিক বাজারের মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করলেন পেয়াদাপাড়ার বাসিন্দা সোহাগী বেগম। শুধু বিদ্যুতের ভোগান্তি নয়; পানির কষ্ট, আবর্জনা, রাস্তায় খানাখন্দ, জলাবদ্ধতা, যানজট—সবই আছে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য ছোটাছুটি: গতকাল সকাল ১০টার দিকে কে এম দাস লেনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের হাতে কলস বা জারিকেন। কথা বলে জানা গেল, তাঁরা ছুটছেন স্বামীবাগ ও গোলাপবাগ পানির পাম্প থেকে পানি আনতে। তাঁদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ কামরুল ইসলাম বললেন, এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাসায় লাইনে ওয়াসার যে পানি আসে, তা পান করা তো দূরের কথা, ব্যবহারেরও অনুপযোগী।
হুমায়ুন সাহেবের গেট এলাকার বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম সরকারি ব্যাংকের কর্মচারী। শুক্রবার ছুটির দিনে তিনি সাধারণত বিশ্রাম নেন। কিন্তু তাঁর হাতেও দেখা গেল বড় দুটি জার। বললেন, বিশ্রাম নেওয়ার উপায় নেই। পানির কষ্ট বড় কষ্ট। রামকৃষ্ণ মিশন রোড, পেয়াদাপাড়ায়ও পানির কষ্ট। রামকৃষ্ণ মিশন রোডের ৮/২-এ নম্বর বাড়ির প্রহরী আবদুল লতিফ দুঃখ করে বলেন, তাঁর চাকরি পাহারা দেওয়ার। কিন্তু এখন আসল চাকরি, সব ফ্ল্যাটমালিকের জন্য বালুর মাঠের ওয়াসার পাম্পে গিয়ে বিশুদ্ধ পানি আনা। তবে গতকাল সকাল থেকে পাম্পের পানিতেও গন্ধ। মালিকেরা পানি বদলে আনতে বলেছেন। বালুর মাঠের পাম্পে গিয়ে জানা যায়, পানি পরিশোধনের জন্য বেশি ওষুধ দেওয়ার কারণে এমন গন্ধ।
ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ বি এম কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে দূষণের মাত্রা বেশি হওয়ায় শোধনে সমস্যা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য ক্লোরিন বেশি দিতে হচ্ছে। তবে এতে পানির ক্ষতি হয় না।
উড়ালসড়কের নিচে ভাগাড়, গর্ত: মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) বেশ কিছু অংশ ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। গতকাল বিকেল চারটার দিকে জয়কালী মন্দির থেকে রাজধানী সুপার মার্কেট পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, উড়ালসড়কের নিচে বিভাজকের (মিডিয়াম) ওপর আবর্জনার ভাগাড়।
শেরেবাংলা স্কুল ও কলেজ এলাকার টায়ারের দোকানি ওসমান গনি বলেন, উড়ালসড়ক নির্মাণের সময় ধুলাবালি আর কাদামাটির ভোগান্তি সহ্য করেছেন। এখন সহ্য করতে হচ্ছে আবর্জনার গন্ধ। অপর দোকানি মিল্লাত হোসেন বলেন, ওয়ারী, হাটখোলা ও আশপাশের এলাকার অনেকেই উড়ালসড়কের নিচের অংশকে আবর্জনা ফেলার জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন। প্রতিদিন এখানে যানজটও হয়। দেখা যায়, জয়কালী মন্দিরের কাছে উড়ালসড়কের নিচে ও পেয়াদাপাড়ায় রাস্তায় খানাখন্দ। জয়কালী মন্দিরের কাছে একটি বড় গর্ত রয়েছে। যেখানে রিকশা-অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এলাকাটি সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন। এই অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল হাশেমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, উড়ালসড়কের নিচের বিভাজন অংশ দেখার দায়িত্ব তাঁদের নয়। তার পরও এলাকাবাসীকে আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে রাস্তার গর্ত শিগগির মেরামত করা হবে।
No comments