যশোরে চরম দুঃসময়ে তিন বাল্যবন্ধু
যশোরের
রাজনীতির আলোচিত সমালোচিত ৩ বাল্যবন্ধুর বড্ড দুঃসময় যাচ্ছে। রাজনীতির
ঘেরাটোপে তারা এখন অনেকটাই নিস্তেজ আর নিষ্প্রাণ। জাতীয় আর ঘরোয়া রাজনীতির
কূটজালে আবদ্ধ হয়ে নন্দিত এসব রাজনীতিকের দিন কাটছে আলো আর অন্ধকারে। হঠাৎ
করেই তিন বন্ধু রাজনীতির ময়দান থেকে যেন লাপাত্তা। এক সময়ের দাপুটে এ তিন
বন্ধু হলেন- তরিকুল ইসলাম, খালেদুর রহমান টিটো ও আলী রেজা রাজু। ষাটের
দশকে অবিভক্ত ছাত্র ইউনিয়ন করার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে তাদের হাতেখড়ি। এরপর
দীর্ঘ পথচলায় কখনো তারা ছিলেন একই ছাতার নিচে। কখনো পথ হয়ে গেছে আলাদা।
প্রতিপক্ষ হয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়েছেন নির্বাচনে। যশোর-৩ সদর আসন থেকে
এমপি হয়েছেন তিনজনই। অথচ এ তিন নেতাই রাজনীতিতে এখন কঠিন সময় পার করছেন।
যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে তরিকুল ইসলাম, খালেদুর রহমান টিটো ও আলী রেজা রাজুর ছিল ব্যাপক আধিপত্য। তাদের হাতের ইশারায় পরিচালিত হয়েছে যশোরের রাজনীতি। রাজনীতিতে তিন বন্ধুর মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন তরিকুল ইসলাম। বিএনপির সব শাসনামলেই মন্ত্রী হয়েছেন তিনি। দলটির জন্মলগ্ন থেকেই একটানা রয়েছেন বিএনপির সঙ্গে। জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তারপরও কখনো আদর্শচ্যুত হননি। মারেননি ডিগবাজি।
দলের দুঃসময়ে সফলতার সঙ্গে পালন করেছেন মহাসচিবের দায়িত্বও। এখন তিনি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। কিন্তু আজ তিনি রাজনৈতিক জীবনে এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। গত ৬ই জানুয়ারি ২০ দলের পক্ষ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লাগাতার অবরোধ ঘোষণার পর একাধিক মামলার আসামি হয়ে তিনি রহস্যজনক ভাবে আত্মগোপনে আছেন। কোথায় আছেন তার খবর কেউ বলতে পারে না। সন্ধান পেলেই পুলিশ তাকে আটক করবেন- এমন তথ্য রয়েছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে। ফলে সব সময় এই প্রবীণ রাজনীতিক আছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে।
অপর বন্ধু খালেদুর রহমান টিটো জাতীয় পার্টির মন্ত্রী হয়েছিলেন। দলটির মহাসচিবও ছিলেন। এক সময় জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। কিন্তু বন্ধু তরিকুল ইসলামের প্রভাবের কাছে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে নিজের অবস্থান তৈরিতে ব্যর্থ হন। যশোর সদর আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি হাল ছেড়ে দেন। অভিমান করে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এরপর সদলবলে ২০০৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলের জেলা সভাপতি আরেক বন্ধু আলী রেজা রাজুকে টপকে তিনি যশোর সদর আসনে দলটির মনোনয়ন নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বন্ধু তরিকুল ইসলামকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু পাঁচ বছর সংসদ সদস্য থাকাকালে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সঙ্গে তার ছিল দা-কুমড়ো সম্পর্ক। তারপরও তিনি ক্ষমতার দাপটে কোন কিছুতেই পিছু হটেননি। এমপি’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে হয়েছেন অঢেল ধনসম্পদের মালিক। তিন ছেলে যশোরের হিরো বনে গেছেন। শহরের ষষ্টিতলাপাড়াকেন্দ্রিক একটি গ্রুপ দাঁড় করিয়েছেন। পিতার পক্ষে এই গ্রুপটি দীর্ঘদিন সক্রিয়। তারপরও গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে টিটো দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হন। অভিযোগ রয়েছে সেই অপমানের বদলা নিতে গত উপজেলা নির্বাচনে তিনি ছেলে মাশুক হাসান জয়কে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু ভোটারবিহীন সেই নির্বাচনেও জয় পরাজিত হন দলের জেলা সেক্রেটারি শাহীন চাকলাদারের কাছে। যশোরের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় টিটো ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার করলেও এখন তিনি নিঃসঙ্গ সময় পার করছেন। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার ক্ষমতার বহর এখন আর নেই। জেলা আওয়ামী লীগের তিনি সামান্য একজন ২ টাকার সদস্য মাত্র। দলের মূল স্রোতের সঙ্গে টিটোর কোন সম্পর্ক নেই। এ কারণে কোন সমাবেশে তাকে দেখা যায় না। সম্প্রতি শেষ হওয়া দলের জেলা সম্মেলনেও এই নেতা ছিলেন উপেক্ষিত। গত ২৪শে মার্চ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রকাশ্যে তার বাসভবনে বোমা হামলা করে দলের অপর অংশের ক্যাডাররা। তার ছেলেকে পর্যন্ত ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। দল ক্ষমতায় থাকলেও তিনি ক্ষমতাহীন সেটার প্রমাণ মেলে এই হামলার ঘটনা থেকে। ক্ষমতা হারিয়ে বর্তমানে তিনি নিঃস্ব জীবনযাপন করছেন।
অপর বন্ধু আলী রেজা রাজুও ভালো নেই। এক সময় তিনি বিএনপির যশোর জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি দাপুটে নেতা হিসেবে বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। যশোর সদর আসনে মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়ার দ্বন্দ্বে তিনিও বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। প্রার্থী হয়ে পরাজিত করেছিলেন বন্ধু তরিকুল ইসলামকে। হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের। কিন্তু গত ১২ই ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতির পদ হারান আলী রেজা রাজু। তারপর থেকে তিনি আর আগের মতো জনসম্মুখে আসছেন না। দলের তৃতীয় সারির নেতা মহিদুল ইসলাম মিলনের কাছে রাজনৈতিক রেসে পরাজিত হয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছেন আলী রেজা রাজু। আগে থেকেও তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরাজয়ে সে যন্ত্রণা বেড়েছে বহুগুণে। ফলে বর্তমানে অনেকটা নীরবেই সময় পার করছেন এই নেতা। দল ক্ষমতায় থাকলেও শেষ বয়সে তার কোন চাওয়া-পাওয়া পূরণ হয়নি। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটিও হারালেন। বয়সকালে ব্যাপক দাপুটে থাকলেও শেষ বয়সে তিনি বড্ড একা হয়ে গেছেন। যশোরের রাজনীতিতে বরাবরই তিনি সন্ত্রাসের বিপক্ষে। কিন্তু তার দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধেই রয়েছে সন্ত্রাসের অভিযোগ, যা তিনি কখনোই মেনে নেননি। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। যার কারণে তাকে সভাপতির পদটি হারাতে হয়েছে বলে মনে করেন রাজুর সুহৃদরা।
তবে বর্ষীয়ান ৩ নেতা যে কঠিন সময় অতিক্রম করছেন- এ নিয়ে যশোরের রাজনৈতিক মহলে চলছে সরব আলোচনা। যশোরের উন্নয়নে তিন বন্ধুরই অবদান রয়েছে বলে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন। কারণ এই তিন বন্ধুই যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। ছিলেন সদরের এমপি। তরিকুল ইসলাম ও খালেদুর রহমান টিটো মন্ত্রী হয়েছেন। সময় আর সুযোগ পেলেই তারা যশোরবাসীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। তবে এই দৌড়ে এগিয়ে আছেন তরিকুল ইসলাম। এদিকে হালে যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত ৩ বন্ধুর এই দুরবস্থাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছেন না তাদের দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তিন বন্ধুর রাজনৈতিক অন্তর্ধানে তাদের কর্মী-সমর্থকরাও চরম ভাবে হতাশ। এই তিন বাল্যবন্ধু আবারো রাজনৈতিক এক ছাতার তলে বসে যশোরের উন্নয়নে কাজ করবেন- এমনটাই তাদের প্রত্যাশা।ৎ এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুই বাল্যবন্ধু টিটো ও রাজু পরিষ্কার করে কোন বক্তব্য না দিলেও তাদের মোর্দ্দা কথা হচ্ছে, “দিন কারোরই সমান যাবে না। বাতাস ঘুরছে। মানুষ যখন বুঝবে তখন এসব নেতারা হালে পানি পাবেন না। সময় ও পরিস্থিতি পাল্টালে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনে তরিকুল ইসলাম, খালেদুর রহমান টিটো ও আলী রেজা রাজুর ছিল ব্যাপক আধিপত্য। তাদের হাতের ইশারায় পরিচালিত হয়েছে যশোরের রাজনীতি। রাজনীতিতে তিন বন্ধুর মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন তরিকুল ইসলাম। বিএনপির সব শাসনামলেই মন্ত্রী হয়েছেন তিনি। দলটির জন্মলগ্ন থেকেই একটানা রয়েছেন বিএনপির সঙ্গে। জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তারপরও কখনো আদর্শচ্যুত হননি। মারেননি ডিগবাজি।
দলের দুঃসময়ে সফলতার সঙ্গে পালন করেছেন মহাসচিবের দায়িত্বও। এখন তিনি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। কিন্তু আজ তিনি রাজনৈতিক জীবনে এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। গত ৬ই জানুয়ারি ২০ দলের পক্ষ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লাগাতার অবরোধ ঘোষণার পর একাধিক মামলার আসামি হয়ে তিনি রহস্যজনক ভাবে আত্মগোপনে আছেন। কোথায় আছেন তার খবর কেউ বলতে পারে না। সন্ধান পেলেই পুলিশ তাকে আটক করবেন- এমন তথ্য রয়েছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে। ফলে সব সময় এই প্রবীণ রাজনীতিক আছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে।
অপর বন্ধু খালেদুর রহমান টিটো জাতীয় পার্টির মন্ত্রী হয়েছিলেন। দলটির মহাসচিবও ছিলেন। এক সময় জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। কিন্তু বন্ধু তরিকুল ইসলামের প্রভাবের কাছে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে নিজের অবস্থান তৈরিতে ব্যর্থ হন। যশোর সদর আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি হাল ছেড়ে দেন। অভিমান করে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এরপর সদলবলে ২০০৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলের জেলা সভাপতি আরেক বন্ধু আলী রেজা রাজুকে টপকে তিনি যশোর সদর আসনে দলটির মনোনয়ন নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বন্ধু তরিকুল ইসলামকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু পাঁচ বছর সংসদ সদস্য থাকাকালে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সঙ্গে তার ছিল দা-কুমড়ো সম্পর্ক। তারপরও তিনি ক্ষমতার দাপটে কোন কিছুতেই পিছু হটেননি। এমপি’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে হয়েছেন অঢেল ধনসম্পদের মালিক। তিন ছেলে যশোরের হিরো বনে গেছেন। শহরের ষষ্টিতলাপাড়াকেন্দ্রিক একটি গ্রুপ দাঁড় করিয়েছেন। পিতার পক্ষে এই গ্রুপটি দীর্ঘদিন সক্রিয়। তারপরও গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে টিটো দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হন। অভিযোগ রয়েছে সেই অপমানের বদলা নিতে গত উপজেলা নির্বাচনে তিনি ছেলে মাশুক হাসান জয়কে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু ভোটারবিহীন সেই নির্বাচনেও জয় পরাজিত হন দলের জেলা সেক্রেটারি শাহীন চাকলাদারের কাছে। যশোরের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় টিটো ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার করলেও এখন তিনি নিঃসঙ্গ সময় পার করছেন। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার ক্ষমতার বহর এখন আর নেই। জেলা আওয়ামী লীগের তিনি সামান্য একজন ২ টাকার সদস্য মাত্র। দলের মূল স্রোতের সঙ্গে টিটোর কোন সম্পর্ক নেই। এ কারণে কোন সমাবেশে তাকে দেখা যায় না। সম্প্রতি শেষ হওয়া দলের জেলা সম্মেলনেও এই নেতা ছিলেন উপেক্ষিত। গত ২৪শে মার্চ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রকাশ্যে তার বাসভবনে বোমা হামলা করে দলের অপর অংশের ক্যাডাররা। তার ছেলেকে পর্যন্ত ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। দল ক্ষমতায় থাকলেও তিনি ক্ষমতাহীন সেটার প্রমাণ মেলে এই হামলার ঘটনা থেকে। ক্ষমতা হারিয়ে বর্তমানে তিনি নিঃস্ব জীবনযাপন করছেন।
অপর বন্ধু আলী রেজা রাজুও ভালো নেই। এক সময় তিনি বিএনপির যশোর জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি দাপুটে নেতা হিসেবে বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। যশোর সদর আসনে মনোনয়ন পাওয়া-না পাওয়ার দ্বন্দ্বে তিনিও বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। প্রার্থী হয়ে পরাজিত করেছিলেন বন্ধু তরিকুল ইসলামকে। হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের। কিন্তু গত ১২ই ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতির পদ হারান আলী রেজা রাজু। তারপর থেকে তিনি আর আগের মতো জনসম্মুখে আসছেন না। দলের তৃতীয় সারির নেতা মহিদুল ইসলাম মিলনের কাছে রাজনৈতিক রেসে পরাজিত হয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছেন আলী রেজা রাজু। আগে থেকেও তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরাজয়ে সে যন্ত্রণা বেড়েছে বহুগুণে। ফলে বর্তমানে অনেকটা নীরবেই সময় পার করছেন এই নেতা। দল ক্ষমতায় থাকলেও শেষ বয়সে তার কোন চাওয়া-পাওয়া পূরণ হয়নি। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটিও হারালেন। বয়সকালে ব্যাপক দাপুটে থাকলেও শেষ বয়সে তিনি বড্ড একা হয়ে গেছেন। যশোরের রাজনীতিতে বরাবরই তিনি সন্ত্রাসের বিপক্ষে। কিন্তু তার দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধেই রয়েছে সন্ত্রাসের অভিযোগ, যা তিনি কখনোই মেনে নেননি। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। যার কারণে তাকে সভাপতির পদটি হারাতে হয়েছে বলে মনে করেন রাজুর সুহৃদরা।
তবে বর্ষীয়ান ৩ নেতা যে কঠিন সময় অতিক্রম করছেন- এ নিয়ে যশোরের রাজনৈতিক মহলে চলছে সরব আলোচনা। যশোরের উন্নয়নে তিন বন্ধুরই অবদান রয়েছে বলে অধিকাংশ মানুষ মনে করেন। কারণ এই তিন বন্ধুই যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। ছিলেন সদরের এমপি। তরিকুল ইসলাম ও খালেদুর রহমান টিটো মন্ত্রী হয়েছেন। সময় আর সুযোগ পেলেই তারা যশোরবাসীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। তবে এই দৌড়ে এগিয়ে আছেন তরিকুল ইসলাম। এদিকে হালে যশোরের রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত ৩ বন্ধুর এই দুরবস্থাকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারছেন না তাদের দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তিন বন্ধুর রাজনৈতিক অন্তর্ধানে তাদের কর্মী-সমর্থকরাও চরম ভাবে হতাশ। এই তিন বাল্যবন্ধু আবারো রাজনৈতিক এক ছাতার তলে বসে যশোরের উন্নয়নে কাজ করবেন- এমনটাই তাদের প্রত্যাশা।ৎ এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দুই বাল্যবন্ধু টিটো ও রাজু পরিষ্কার করে কোন বক্তব্য না দিলেও তাদের মোর্দ্দা কথা হচ্ছে, “দিন কারোরই সমান যাবে না। বাতাস ঘুরছে। মানুষ যখন বুঝবে তখন এসব নেতারা হালে পানি পাবেন না। সময় ও পরিস্থিতি পাল্টালে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
No comments