টুনটুনি নিখোঁজ রহস্যময় চিঠি by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
রহস্যজনক
এক চিঠি আরো একটুখানি রহস্যময় করে তুললো সিলেটের আলোচিত শিশু জয়ী ওরফে
টুনটুনি নিখোঁজ কাণ্ডকে। ২০ মাস হলো ছোট্ট মেয়ে ‘টুনটুনি’র খোঁজ মিলছে না।
হারিয়ে যাওয়ার সময় ওর বয়স ছিল ৪ বছর। এখন তার বয়স হওয়ার কথা ৬ বছর। তবে ২
বছর ধরে বাবা-মা’র চোখে ৪ বছরেই বন্দি আছে মেয়েটি। রহস্যময় চিঠিটি বলছে,
টুনটুনি বাবা-মা’র চোখের আড়াল হয়ে বন্দি আছে ভারতে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা
থেকে তিনটার মাঝের কোন এক সময়। সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সিকন্দর
আলী নগরীর কাজিরবাজারস্থ তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘সিকন্দর রেস্টুরেন্ট’-এর
ক্যাশ কাউন্টারে বসা ছিলেন। কুরিয়ার সার্ভিসের এক লোক বাদামি রঙের মুখবন্ধ
একটি খাম দিয়ে যায় তার কাছে। সিকন্দর আলী ভাবেন কোন অনুষ্ঠানের চিঠি হয়তো।
দুপুরের ব্যস্ত সময়, চিঠি নিয়ে তাই আর মাথা ঘামান না সিকন্দর আলী। না দেখেই
রেখে দেন। বাসায় নিয়ে এসে পড়ে জানতে পারেন চিঠিটি লিখেছেন এক ‘ভারতীয়
নাগরিক’। চিঠিটিতেই এমন দাবি করা হয়। চিঠিটি পড়তে গিয়ে চমকে উঠেন সিকন্দর
আলী। চিঠিটি তারই এলাকার এক ‘নিখোঁজ’ ঘটনা প্রসঙ্গে। ‘টুনটুনি’র নিখোঁজ
ঘটনা শুধু তিনিই নন, জানে পুরো সিলেটই। শিশুটির নাম উল্লেখ না করলেও
‘ভারতীয় নাগরিকের’ লেখা ঐ চিঠিটিতে জানানো হয় টুনটুনিকে অপহরণ করা হয়েছে।
সে এখন আছে ভারতেই। আর অপহরণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় শেখঘাটের বাসিন্দা
শঙ্কর দাম ও অনিতা ভট্টাচার্যকে। তারা দুজনেই সন্দেহভাজন হিসেবে ইতিমধ্যেই
গ্রেপ্তার হয়েছেন। শঙ্কর জামিনে থাকলেও অনিতা এখনও জেলের ভেতরেই আছেন।
চিঠিটিতে উল্লেখ করা হয় শঙ্কর-অনিতাই টুনটুনিকে অর্থের বিনিময়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তার মা-বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করে পরে তাকে ছাড়িয়ে নেয়া হবে- এমন শর্তেই টাকা নেয় তারা। চিঠির ভাষ্যমতে, এর লেখক শিশু পাচার চক্রের মূল হোতা এবং শঙ্কর-অনিতা তার বা তাদের সহযোগী। তবে পত্রলেখক নিজেকে কিন্তু মোটেও অপরাধী ভাবছেন না। তার ভাষায় যত দোষ সব শঙ্কর-অনিতারই। পরতে পরতে তাদেরই দোষী করার প্রয়াস দেখা গেছে চিঠিটিতে। এমনকি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে চিঠিতে শঙ্করের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উত্থাপন করা হয়- শঙ্করকে মন্দ মানুষ প্রমাণের জন্য। ‘শঙ্কর দাস তার ভাইয়ের স্ত্রীর সোনা চুরি করেছে, ভাইয়ের পকেট থেকে টাকা চুরি করেছে, মামার প্রতিবেশীর বাসা থেকে পিতলের বাসন চুরি করেছে’। শঙ্করকে অভিযুক্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এ প্রয়াস চিঠিটিকে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে শঙ্কর-অনিতা তাদের কাছে আরো একটি ছেলে শিশুকে দিয়েছিলো, কিন্তু সে শিশুটি বুঝে পাওয়ার আগেই পালিয়ে যায়। চিঠিটিতে টুনটুনিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে কিনা, কিংবা টুনটুনি এখন কোথায় আছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। শঙ্করকে দায়ী প্রমাণের চেষ্টা থাকলেও টুনটুনি যে তাদের কাছে এর কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেনি পত্র লেখক। টুনটুনি কোথায় আছে সে ঠিকানা তো বলা হয়নি এমনকি ভারতের কোন রাজ্য বা শহরে আছে তাও বলা হয়নি।
ভারতীয় পরিচয়ে আসা চিঠিটিতে উল্লেখ করা হয় শঙ্কর টুনটুনিকে ফিরিয়ে না নেয়ায় পত্র লেখক তার দলবল নিয়ে সিলেট এসেছেন। কিন্তু এসময় টুনটুনি তাদের সঙ্গে ছিল কিনা তার উল্লেখ নেই পত্রে। পত্রে বলা হয়েছে, শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে ভারত থেকে আসা দলটি। কিন্তু তারা টুনটুনির পরিবারের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। যদিও তাদের কাছে টুনটুনির বাবার মোবাইল ফোন নম্বরও আছে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিগ্যাল সাইজ (৮.৫্থ্থক্ম১৪্থ্থ) কাগজে কম্পিউটারে টাইপ করা গুরুচণ্ডালী (সাধু-চলতি ভাষার মিশ্রণ) দোষে দুষ্ট ৪৭ লাইনের চিঠিটিতে কোন নাম-ঠিকানা বা তারিখ উল্লেখ না থাকলেও প্রেরক হিসেবে খামের উপর একটি অসম্পূর্ণ ঠিকানা লেখা ছিল ‘শ্রী নিখিল দাস, রাজারগাঁও, অদ্বৈতবাড়ি সুনামগঞ্জ’। তবে খুব সম্ভব এটি কারো ব্যক্তিগত ঠিকানা নয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় রাজারগাঁও নামের দুয়েকটি গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নে। সুনামগঞ্জে রাজারগাঁও নামে আরো একটি গ্রামের খোঁজ পাওয়া যায় তাহিরপুর উপজেলায়।
২০ মাসেও চোখের জল, বুকের ক্ষত এতোটুকুও কমেনি টুনটুনির মায়ের। শনিবার সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আলাপকালে চিঠির প্রসঙ্গ তুলতেই কান্না আর থামাতে পারছিলেন না। বললেন চিঠি দিয়ে আমি কি করবো আমার টুনটুনি তো ফিরে আসেনি। তিনি বলেন, আজ বাসন্তী পূজা। সব বাচ্চারা আনন্দ করছে, শুধু আমার টুনটুনি। কান্না থামিয়ে আর কথা বলতে পারেন না শর্বানী দেব।
কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মোশাররফ হোসেনের হাতে রয়েছে এ চিঠি। তিনি বলছেন, চিঠিটি ভুয়া হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। তবুও আমরা চিঠিটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি- কে এই নিখিল দাস। শিশুটি আসলেই ভারতে আছে কিনা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৪ই জুলাই সিলেট নগরীর শেখঘাট ভাঙাটিকর এলাকা থেকে হারিয়ে যায় স্কুলশিক্ষক সন্তোষ কুমার দেব ও সিলেট জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অফিস সহকারী শর্বানী দেব তুলির একমাত্র মেয়ে স্নিগ্ধা দেব জয়ী। মা-বাবা যাকে আদর করে ডাকতেন টুনটুনি নামে।
চিঠিটিতে উল্লেখ করা হয় শঙ্কর-অনিতাই টুনটুনিকে অর্থের বিনিময়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তার মা-বাবার কাছ থেকে টাকা আদায় করে পরে তাকে ছাড়িয়ে নেয়া হবে- এমন শর্তেই টাকা নেয় তারা। চিঠির ভাষ্যমতে, এর লেখক শিশু পাচার চক্রের মূল হোতা এবং শঙ্কর-অনিতা তার বা তাদের সহযোগী। তবে পত্রলেখক নিজেকে কিন্তু মোটেও অপরাধী ভাবছেন না। তার ভাষায় যত দোষ সব শঙ্কর-অনিতারই। পরতে পরতে তাদেরই দোষী করার প্রয়াস দেখা গেছে চিঠিটিতে। এমনকি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে চিঠিতে শঙ্করের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ উত্থাপন করা হয়- শঙ্করকে মন্দ মানুষ প্রমাণের জন্য। ‘শঙ্কর দাস তার ভাইয়ের স্ত্রীর সোনা চুরি করেছে, ভাইয়ের পকেট থেকে টাকা চুরি করেছে, মামার প্রতিবেশীর বাসা থেকে পিতলের বাসন চুরি করেছে’। শঙ্করকে অভিযুক্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এ প্রয়াস চিঠিটিকে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে শঙ্কর-অনিতা তাদের কাছে আরো একটি ছেলে শিশুকে দিয়েছিলো, কিন্তু সে শিশুটি বুঝে পাওয়ার আগেই পালিয়ে যায়। চিঠিটিতে টুনটুনিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে কিনা, কিংবা টুনটুনি এখন কোথায় আছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। শঙ্করকে দায়ী প্রমাণের চেষ্টা থাকলেও টুনটুনি যে তাদের কাছে এর কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেনি পত্র লেখক। টুনটুনি কোথায় আছে সে ঠিকানা তো বলা হয়নি এমনকি ভারতের কোন রাজ্য বা শহরে আছে তাও বলা হয়নি।
ভারতীয় পরিচয়ে আসা চিঠিটিতে উল্লেখ করা হয় শঙ্কর টুনটুনিকে ফিরিয়ে না নেয়ায় পত্র লেখক তার দলবল নিয়ে সিলেট এসেছেন। কিন্তু এসময় টুনটুনি তাদের সঙ্গে ছিল কিনা তার উল্লেখ নেই পত্রে। পত্রে বলা হয়েছে, শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে শঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে ভারত থেকে আসা দলটি। কিন্তু তারা টুনটুনির পরিবারের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। যদিও তাদের কাছে টুনটুনির বাবার মোবাইল ফোন নম্বরও আছে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিগ্যাল সাইজ (৮.৫্থ্থক্ম১৪্থ্থ) কাগজে কম্পিউটারে টাইপ করা গুরুচণ্ডালী (সাধু-চলতি ভাষার মিশ্রণ) দোষে দুষ্ট ৪৭ লাইনের চিঠিটিতে কোন নাম-ঠিকানা বা তারিখ উল্লেখ না থাকলেও প্রেরক হিসেবে খামের উপর একটি অসম্পূর্ণ ঠিকানা লেখা ছিল ‘শ্রী নিখিল দাস, রাজারগাঁও, অদ্বৈতবাড়ি সুনামগঞ্জ’। তবে খুব সম্ভব এটি কারো ব্যক্তিগত ঠিকানা নয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় রাজারগাঁও নামের দুয়েকটি গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নে। সুনামগঞ্জে রাজারগাঁও নামে আরো একটি গ্রামের খোঁজ পাওয়া যায় তাহিরপুর উপজেলায়।
২০ মাসেও চোখের জল, বুকের ক্ষত এতোটুকুও কমেনি টুনটুনির মায়ের। শনিবার সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আলাপকালে চিঠির প্রসঙ্গ তুলতেই কান্না আর থামাতে পারছিলেন না। বললেন চিঠি দিয়ে আমি কি করবো আমার টুনটুনি তো ফিরে আসেনি। তিনি বলেন, আজ বাসন্তী পূজা। সব বাচ্চারা আনন্দ করছে, শুধু আমার টুনটুনি। কান্না থামিয়ে আর কথা বলতে পারেন না শর্বানী দেব।
কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মোশাররফ হোসেনের হাতে রয়েছে এ চিঠি। তিনি বলছেন, চিঠিটি ভুয়া হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। তবুও আমরা চিঠিটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি- কে এই নিখিল দাস। শিশুটি আসলেই ভারতে আছে কিনা।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৪ই জুলাই সিলেট নগরীর শেখঘাট ভাঙাটিকর এলাকা থেকে হারিয়ে যায় স্কুলশিক্ষক সন্তোষ কুমার দেব ও সিলেট জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অফিস সহকারী শর্বানী দেব তুলির একমাত্র মেয়ে স্নিগ্ধা দেব জয়ী। মা-বাবা যাকে আদর করে ডাকতেন টুনটুনি নামে।
No comments