শ্রম খাতে বাংলাদেশকে আরও কাজ করতে হবে
শ্রম
খাতের পরিবেশ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশকে আরও কাজ করতে হবে বলে মনে
করে যুক্তরাজ্য। বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপে এ মত দিয়েছেন সমপ্রতি
ঢাকা সফর করে যাওয়া দেশটির আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ডিএফআইডি’র স্থায়ী সচিব
মার্ক লোকক। ওই কর্মকর্তার মতে, বাংলাদেশে গার্মেন্ট খাত খুবই
গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য। তবে
অন্যান্য খাতের গতিশীলতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। রানা প্লাজায় দুর্ঘটনার শিকার
ব্যক্তিদের যথাসময়ের মধ্যেই পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা জরুরি মন্তব্য
করে মার্ক লোকক বলেন, ‘রানা প্লাজা ট্রাস্ট ফান্ডে সাহায্য করার কথা এবং
দায়িত্ব নেয়ার কথা আমরা যুক্তরাজ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বলেছি। এর
মধ্যে আছে ওয়েস্টমিনিস্টার সভায় আলোচনা, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীবর্গের
বাংলাদেশ সফর, গার্মেন্ট বাণিজ্যসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠক। লোকক
জানান, প্রিমার্ক নামে এক বৃটিশ রিটেইলর প্রতিষ্ঠান ক্ষতিপূরণ দেয়ার
ব্যাপারে দারুণ ভূমিকা রেখেছে। তারা গত বছর রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত
শ্রমিকদের ১২ মিলিয়ন ডলার প্রদান করে। যুক্তরাজ্য সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গেও
এ ব্যাপারে কাজ করবে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা চাই যেন ক্ষতিপূরণ
পেতে শ্রমিকদের সুবিধা হয়। শ্রম উন্নয়নে ডিএফআইডি দক্ষতা এবং পেশাগত
উন্নয়নে কর্মসূচির আয়োজন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রায় এক লাখ মানুষকে
বিশেষ করে নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে এ সংস্থা। ২০১৩ সালে
যুক্তরাজ্য থেকে নিরাপদ ভবন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঢাকায় এসেছিল। এ
ছাড়া ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে আয়োজিত পরিদর্শন সংস্কার শীর্ষক
সেমিনারে বাংলাদেশ সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে অংশ
নিতে সহযোগিতা করে। লোকক বলেন, ‘সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জ্ঞান বিনিময়ের
মতো কর্মসূচির আয়োজন আমরা করবো।’ কারখানা ভবন পরিদর্শন, শ্রম খাত পরিদর্শন,
পরিদর্শনে দক্ষতা, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে নির্দেশিকা
প্রণয়ন, রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও দক্ষতা
বৃদ্ধি এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়
ডিএফআইডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। লোকক বলেন, ‘রানা প্লাজার পর থেকে
পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ৬৫ শতাংশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ও
অগ্নিব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। ১৭৮ জন নতুন শ্রম পরিদর্শক
নিয়োগ করেছে সরকার। একই সঙ্গে ৩০০ নতুন ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে।’ তবে এখনও
অনেক কাজ বাকি আছে বলে জানান লোকক। দেশের শ্রম আইন বিষয়ে কাজ করার অনেক
কিছু আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাকি থাকা অন্যান্য কারখানায় পরিদর্শন
সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এরপরই ত্রুটিগুলো নিয়ে কাজ করা যাবে।
No comments