পুলিশের ওপর আস্থা আরো কমছে by জারিন তাসনীম
চট্টগ্রামের
দু’টি কলেজে অভিযান চালিয়ে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
তাদের দেয়া তথ্য মতে, একটি একে-২২ ও একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, তিনটি
পিস্তল, তিনটি সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, একটি দোনলা বন্দুক, পাঁচটি রকেট
ফেয়ার, ৬১ রাউন্ড কার্তুজ ও ২৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্রশস্ত্রের
নাম আনকোরা ও টেকনিক্যাল। এসব নাম থেকে মনে হচ্ছে প্রাণবিনাশী ভয়ানক সব
মারণাস্ত্র। চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষক আবাসিক এলাকায় তিনতলা ভবনের
পেছনে গর্ত খুঁড়ে এসব পাওয়া যায়। অন্য দিকে, একই সময় হাজী মুহম্মদ মুহসীন
কলেজ ক্যাম্পাসের নালা থেকে কিরিচ ও গান পাউডার পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেল থেকে ৭২ ছাত্রকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা মুহসীন কলেজ হোস্টেল থেকে আটক করে আরো ১০ জনকে। তাদের কারো কাছে অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায়নি। এদের বেশির ভাগ ১ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছাত্রদের কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হলো তার জবাব নেই। সংবাদমাধ্যমে এসেছে ‘শিবির’ সন্দেহে তাদের আটক করা হয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন নয়। কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্য হতে পারে এমন সন্দেহে কাউকে গ্রেফতার করা বৈধ হতে পারে না। ছাত্রাবাসে সব ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকে না এটা সবাই বোঝে। তাহলে এতগুলো নিরীহ ছাত্রকে ধরে হয়রানি করার কী অর্থ হতে পারে।
চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলার প্রধান সমস্যা হচ্ছে টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি । টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে পথচারী শিশুহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ব্যাপক চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামান্য টিকিট না পাওয়ায় ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সহিংসতা চালায়। তাদের আক্রমণে সেদিন কর্মকর্তা-কমচারীদের অনেকে আহত হন। এ সহিংসতার বিরুদ্ধে পুলিশকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। উল্টো সন্ত্রাসীদের জন্য ফ্রি টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়। টিকিট ফ্রি পাওয়া ছাত্রলীগের সেই সদস্যরা সম্মেলন শেষে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ফেরার পথে নিজেদের এক সহকর্মীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে নৃশংস কায়দায় হত্যা করে। অন্য দিকে, এ দু’টি কলেজের ছাত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টির কোনো অভিযোগ নেই। সারা দেশে চলা চরম বিপর্যস্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে তারা কোথাও সন্ত্রাস করছে এমন খবর নেই। যেখানে দেশে এখন গণহারে মানুষ প্রাণ দিচ্ছে। সেই খুন গুম অপহরণের ঘটনায় কারা অভিযুক্ত সে ব্যাপারে যখন পুলিশের কোনো উল্লেখযোগ্য তৎপরতা দেখা যায় না, তখন কলেজে এ ধরনের সাঁড়াশি অভিযান চালানো হলো। মুক্তিপণের জন্য শিশুহত্যা করা হচ্ছে। সিলেটে এ ধরনের একটি শিশুহত্যার সাথে খোদ পুলিশের এক সদস্য ও ওলামা লীগের এক নেতা জড়িত ছিল।
পরীক্ষার ফলাফল বিচারে চট্টগ্রাম কলেজ বিভাগে বরাবর প্রথম থাকে। অন্য দিকে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন কলেজও প্রথম দিকে থাকে। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কলেজ দু’টিতে মেধাবীরা পড়তে আসে। সারা দেশ থেকেও অনেক ছাত্র ভালো ফলাফল করতে এ দু’টি কলেজে ভর্তি হয়। দু’টি কলেজে অভিযান চালাতে মধ্যরাত বেছে নেয়া হয়। দু’টি কলেজের বিশাল ক্যাম্পাস পুরোপুরি কর্ডন করা হয়। এ কাজ করতে হাজার হাজার পুলিশের দরকার হয়েছে। এ সময় সারা দেশে অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজ চেয়ে পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো অর্থবহ সাড়া পাওয়া যায় না। বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী-সন্তানদের করুণ আহাজারি আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ দলের এই মুখপাত্রের সন্ধানে কতজন পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে? সালাহউদ্দিনের অসহায় স্ত্রী ও সন্তানদের মনে এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। কারণ এরা দেখতে পাচ্ছে পুলিশের হাজার হাজার সদস্য কলেজ ক্যাম্পাস কর্ডন করে নিরীহ ছাত্রদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে একজন নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিককে উদ্ধারের জোর কোনো অভিযান নেই।
মধ্যরাতে অন্ধকারে পুলিশ আবাসিক এলাকায় গর্ত থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সরকার বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের গণহারে আটক করায় এ ধরনের অভিযানে সন্দেহ পোষণের জায়গা থাকে। এরই মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকাও যেখানে প্রবলভাবে সমালোচিত। পুলিশ এ ধরনের সরকার বিরোধীদের যেভাবে সহজ শিকারে পরিণত করে সরকারি মহলে বাহবা কুড়াচ্ছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের ব্যাপারে সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এ ক্ষেত্রে সন্দেহের অবকাশ শতভাগ থেকেই যাচ্ছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা একই ধরনের অভিযান আশা করতে পারেন দক্ষ পুলিশ সদস্যদের কাছে। এমন অস্ত্র উদ্ধারের চেয়ে একজন মানুষের খোঁজ দেয়া কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শত শত রাজনৈতিক নেতাকর্মীর আত্মীয়রা পুলিশের এমন অভিযান প্রচেষ্টা দেখলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতেন। তারা অন্তত প্রবোধ দিতে পারতেন স্বজন হারানোর তাদের এই বেদনার সাথে রাষ্ট্রও সমব্যথী। অন্তত রাষ্ট্র প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের উদ্ধারে।
চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেল থেকে ৭২ ছাত্রকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা মুহসীন কলেজ হোস্টেল থেকে আটক করে আরো ১০ জনকে। তাদের কারো কাছে অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া যায়নি। এদের বেশির ভাগ ১ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছাত্রদের কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হলো তার জবাব নেই। সংবাদমাধ্যমে এসেছে ‘শিবির’ সন্দেহে তাদের আটক করা হয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন নয়। কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্য হতে পারে এমন সন্দেহে কাউকে গ্রেফতার করা বৈধ হতে পারে না। ছাত্রাবাসে সব ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকে না এটা সবাই বোঝে। তাহলে এতগুলো নিরীহ ছাত্রকে ধরে হয়রানি করার কী অর্থ হতে পারে।
চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলার প্রধান সমস্যা হচ্ছে টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি । টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে পথচারী শিশুহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ব্যাপক চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামান্য টিকিট না পাওয়ায় ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সহিংসতা চালায়। তাদের আক্রমণে সেদিন কর্মকর্তা-কমচারীদের অনেকে আহত হন। এ সহিংসতার বিরুদ্ধে পুলিশকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। উল্টো সন্ত্রাসীদের জন্য ফ্রি টিকিটের ব্যবস্থা করা হয়। টিকিট ফ্রি পাওয়া ছাত্রলীগের সেই সদস্যরা সম্মেলন শেষে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ফেরার পথে নিজেদের এক সহকর্মীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে নৃশংস কায়দায় হত্যা করে। অন্য দিকে, এ দু’টি কলেজের ছাত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টির কোনো অভিযোগ নেই। সারা দেশে চলা চরম বিপর্যস্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে তারা কোথাও সন্ত্রাস করছে এমন খবর নেই। যেখানে দেশে এখন গণহারে মানুষ প্রাণ দিচ্ছে। সেই খুন গুম অপহরণের ঘটনায় কারা অভিযুক্ত সে ব্যাপারে যখন পুলিশের কোনো উল্লেখযোগ্য তৎপরতা দেখা যায় না, তখন কলেজে এ ধরনের সাঁড়াশি অভিযান চালানো হলো। মুক্তিপণের জন্য শিশুহত্যা করা হচ্ছে। সিলেটে এ ধরনের একটি শিশুহত্যার সাথে খোদ পুলিশের এক সদস্য ও ওলামা লীগের এক নেতা জড়িত ছিল।
পরীক্ষার ফলাফল বিচারে চট্টগ্রাম কলেজ বিভাগে বরাবর প্রথম থাকে। অন্য দিকে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন কলেজও প্রথম দিকে থাকে। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কলেজ দু’টিতে মেধাবীরা পড়তে আসে। সারা দেশ থেকেও অনেক ছাত্র ভালো ফলাফল করতে এ দু’টি কলেজে ভর্তি হয়। দু’টি কলেজে অভিযান চালাতে মধ্যরাত বেছে নেয়া হয়। দু’টি কলেজের বিশাল ক্যাম্পাস পুরোপুরি কর্ডন করা হয়। এ কাজ করতে হাজার হাজার পুলিশের দরকার হয়েছে। এ সময় সারা দেশে অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজ চেয়ে পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো অর্থবহ সাড়া পাওয়া যায় না। বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী-সন্তানদের করুণ আহাজারি আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ দলের এই মুখপাত্রের সন্ধানে কতজন পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে? সালাহউদ্দিনের অসহায় স্ত্রী ও সন্তানদের মনে এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। কারণ এরা দেখতে পাচ্ছে পুলিশের হাজার হাজার সদস্য কলেজ ক্যাম্পাস কর্ডন করে নিরীহ ছাত্রদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে একজন নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিককে উদ্ধারের জোর কোনো অভিযান নেই।
মধ্যরাতে অন্ধকারে পুলিশ আবাসিক এলাকায় গর্ত থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সরকার বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের গণহারে আটক করায় এ ধরনের অভিযানে সন্দেহ পোষণের জায়গা থাকে। এরই মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকাও যেখানে প্রবলভাবে সমালোচিত। পুলিশ এ ধরনের সরকার বিরোধীদের যেভাবে সহজ শিকারে পরিণত করে সরকারি মহলে বাহবা কুড়াচ্ছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের ব্যাপারে সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এ ক্ষেত্রে সন্দেহের অবকাশ শতভাগ থেকেই যাচ্ছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা একই ধরনের অভিযান আশা করতে পারেন দক্ষ পুলিশ সদস্যদের কাছে। এমন অস্ত্র উদ্ধারের চেয়ে একজন মানুষের খোঁজ দেয়া কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শত শত রাজনৈতিক নেতাকর্মীর আত্মীয়রা পুলিশের এমন অভিযান প্রচেষ্টা দেখলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতেন। তারা অন্তত প্রবোধ দিতে পারতেন স্বজন হারানোর তাদের এই বেদনার সাথে রাষ্ট্রও সমব্যথী। অন্তত রাষ্ট্র প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের উদ্ধারে।
No comments