ফিরে দেখা উপজেলা নির্বাচন by ভ্রান্তিহরণ পোদ্দার

বিগত সংসদের মতো উপজেলা নির্বাচনও সমালোচিত হয়েছে। মূলত আওয়ামী ইস্যু সৃষ্টি এবং তা নিজেদের প্রয়োজনে ধামাচাপা দিতে অধিক করিৎকর্মা। বিদায়ী ২০১৪ সালের সবচেয়ে সমালোচিত ঘটনা ছিল ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচন। একদলীয় নির্বাচন এর আগে হলেও এ নির্বাচন ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এ ধরনের প্রার্থী ও ভোটারবিহীন নির্বাচন বিশ্বে নজিরবিহীন। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘নির্বাচিত’ হয়েছিলেন ১৫৩ জন। ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা ছিল পাঁচ শতাংশেরও কম। রাজধানীরই ২৯টি কেন্দ্রে কোনো ভোটার ভোট দেননি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ উপলব্ধি করতে পেরেছিল, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় ফিরে আসা সম্ভব নয়। তাই তারা পরিকল্পিতভাবেই বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের মুখে ঠেলে দেয় এবং একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রহসনে লিপ্ত হয়। বিশ্ববাসী বিস্ময়ের সাথে প্রত্যক্ষ করেছে, নির্বাচনের জনগণের সাথে প্রতারণা এবং ধিক্কার জানিয়েছে ক্ষমতাসীনদের এই ভূমিকাকে।
সরকারের পাতানো নির্বাচন নিয়ে যখন বিশ্ব জনমত সোচ্চার এবং দলগুলো রাজপথে আন্দোলনরত, তখনই আওয়ামী লীগ বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত ও বিরোধী জোটের আন্দোলন ভিন্নপথে প্রবাহের জন্য নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তারা মনে করেছিল, সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না বরং নির্বাচনের নামে ক্ষমতাসীন দল আবারো ফাঁকা গোল করবে। দীর্ঘ দিনের আন্দোলনে বিরোধী জোট অনেকটাই তখন পরিশ্রান্ত ও অগোছালো। আর মনে করা হয়েছিল যে, জামায়াত তো রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন হয়েছে এবং জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা শূন্যের কোটায় নেমেছে। এমন বৈরী পরিস্থিতিতে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব হবে না।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ওপর যে তাণ্ডব চলেছে, তা গা শিউরে ওঠার মতো। জানা গেছে, ওই নির্বাচনের আগে ও পরে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী, র‌্যাব এবং আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হাতে ২০ দলীয় জোটের ২৯১ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। গুম হয়েছেন ৬০ জন। বিশেষত গত বছরের অক্টোবর থেকে প্রায় তিন মাস সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। ওই সময় এসব নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। সারা দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিহত ও গুমের তালিকা করা হয়েছে। দেখা যায়, লক্ষ্মীপুরে নিহত হয়েছেন ২৯ জন ও গুম ৬ জন। সাতক্ষীরায় নিহত ২৯ জন, গুম ৫ জন। গুমের সংখ্যা ঢাকা মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি। এখানে গুম হয়েছেন ২১ জন। ঢাকায় গুম হওয়াদের মধ্যে ১৫ জন ছাত্রদলের। তবে মহানগরীতে নিহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। নিহত হয়েছেন জামায়াতের মহানগরীর একজন মজলিশে শূরা সদস্য। সারা দেশে নিহত ২৯১ জনের মধ্যে জামায়াতেরই অন্তত ১৪০ জন। আর গুম হয়েছেন সাতজন। বাকিরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। সরকার মনে করেছিল বিরোধী জোটের এমন বেহাল দশার মধ্যে উপজেলা নির্বাচন দিলে অপ্রস্তুত অবস্থায় তারা নির্বাচন থেকে বিরত থাকবে। সে আশায় বুক বেঁধেই আওয়ামী লীগ চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাচনে কাঠরা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
কেন্দ্রের ২ নম্বর নারী বুথে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
গোলাম মুর্তজা খানের আনারস প্রতীকে সিল মারা হচ্ছে। ছবি: জহুরুল ইসলাম
৫ দফার এই নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে সরকার সমর্থিত প্রার্থী নাকানি-চুবানি খাওয়ার পর সরকার উপলব্ধি করতে পেরেছে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তাদের পক্ষে আর কিছুই করা সম্ভব নয় । প্রথম পর্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১০২ উপজেলায়। এ নির্বাচনেও কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতি, জাল ভোট ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তা সত্ত্বেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। প্রথম দফার নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারম্যান পদে ৪৪টি, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩২ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৪টি পদে বিজয়ী হয়। জোটের অন্যমত শরিক জামায়াতে ইসলামীর ফলাফল ক্ষমতাসীন দলের কাছে বিস্ময়কর। দলটি মাত্র ২৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়ে ১৩টি, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯টি উপজেলায় প্রার্থী দিয়ে ২৩টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন প্রার্থী দিয়ে ১০টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। দ্বিতীয় দফা নির্বাচনেও বিএনপি জোট প্রার্থীরা চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছেন। বিএনপি প্রার্থীরা দ্বিতীয় দফায় ৫২টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪ জন প্রার্থী বিজয়ী হন। অপর পক্ষে সীমিত সংখ্যক প্রার্থী দিয়ে জামায়াত রীতিমতো চমকে দিয়েছে। দলটি চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন প্রার্থীর বিপরীতে আটজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০ জনের বিপরীতে ৩৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জনের বিপরীতে ৯ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
বিরোধী জোট বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী দুই পর্বের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উল্লেখযোগ্য ফলাফল অর্জন করে। দেখা যায়, প্রথম পর্বের নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছে ভাইস চেয়ারম্যানের ৩২টি পদ, আওয়ামী লীগ ২৩টি, জামায়াতে ইসলামী ২৪টি ও জাতীয় পার্টি তিনটি। দ্বিতীয় পর্বে বিএনপি পেয়েছে ৩২টি, আওয়ামী লীগ ৩৭টি, জামায়াতে ইসলামী ৩৪টি ও জাতীয় পার্টি একটি। দুই পর্বের নির্বাচনে মহাজোট সরকার সম্মিলিতভাবে ভাইস চেয়ারম্যান পদ লাভ করেছে ৬৪টি (আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি)। অপর পক্ষে দুই পর্বের নির্বাচনে ১৯ দলীয় (পরে ২০ দল) জোট সম্মিলিতভাবে ভাইস চেয়ারম্যান পদ লাভ করেছে ১২২টি (বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী)। অর্থাৎ দুই পর্বের নির্বাচনে ১৯ দলীয় জোট আওয়ামী জোটের চেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৮টি পদে এগিয়ে। মোট ৪৮৮টি উপজেলায় পঞ্চম দফা নির্বাচন শেষে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে ২৫৫, বিএনপি ১৬০, জামায়াতে ইসলামী ৩৬, জাতীয় পার্টি তিন এবং অন্যান্য ৩১টিতে জয়ী হয়েছেন।
প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ‘ট্রাডিশন’ অনুযায়ী ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতাসীনেরা ফলাফল পুরোপুরি তাদের পক্ষে নিতে পারেনি। ফলে তারা পুকুর চুরির পরিবর্তে সাগর চুরির পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ কথার প্রমাণ মেলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বক্তব্য থেকে। দুই দফা উপজেলা নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীদের লেজেগোবরে অবস্থা হওয়ার পর তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের ‘যথাযথ প্রস্তুতির অভাবে’ নির্বাচনে খারাপ ফল করেছে। আগামী নির্বাচনগুলোতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করে ফলাফল নিজেদের অনুকূলে নেবে। আর তারা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে ও সর্বশক্তি নিয়োগ করে শেষ পর্বের নির্বাচনগুলোতে ফলাফল নিজেদের অনুকূলে কিভাবে নিয়েছিলেন, তা ৩১ মার্চ পঞ্চম দফার নির্বাচনের পর ১ এপ্রিল জাতীয় দৈনিকগুলোর শিরোনাম থেকে স্পষ্ট। সে দিনের দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোনাম ছিল ‘কেন্দ্র দখল ও ভোট বর্জন থামছে না’, প্রথম আলো ‘শেষটাও ভালো হলো না’, কালের কণ্ঠ ‘শান্তিপূর্ণ ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, সংঘর্ষ, বোমা ও আগুন’, সমকাল ‘শেষ ধাপেও কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট’, ইনকিলাব ‘সিল মারার মহোৎসব’, নয়া দিগন্ত ‘পঞ্চম দফায়ও ভোট ডাকাতি’। ২ এপিল প্রথম আলোতে শিরোনাম করা হয়েছে ‘নির্বাচনব্যবস্থা তছনছ, প্রশ্নের মুখে আ. লীগ,’ কালের কণ্ঠে শিরোনাম করা হয়েছে ‘৭৯ উপজেলায় ভোট ডাকাতি’, যুগান্তরের শিরোনাম ‘নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু হয়েছে তা বলা যাবে না-ইসি শাহ নেওয়াজ। উল্লিখিত ঘটনাপ্রবাহ, দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকগুলোর শিরোনাম ও নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজের স্বীকৃতি থেকে বিগত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের বাস্তবচিত্র ফুটে উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই
করা হয়। পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি: শাহ আলম
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তাদের প্রধান অন্তরায় মনে করেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোটকে। আর জামায়াতকে জোট থেকে বিচ্ছিন্ন করার কূটকৌশলের পাশাপাশি জামায়াতের নেতাদের বিচারের মুখোমুখি করে এবং তাদের একের পর এক প্রাণদণ্ডে দণ্ডিতও করা হয়। শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে নিহত হন প্রায় দেড় শ’ নেতাকর্মী। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়। কারারুদ্ধ করা হয় প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মীকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হামলায় পঙ্গুত্ব বরণ করেন শত শত নেতাকর্মী। শীর্ষ নেতারা নির্যাতনের শিকার হন এবং তাদের কারো কারো পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়। এমতাবস্থায় সরকার মনে করেছিল, জামায়াতের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। তাই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে পাল্লা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অভিজ্ঞমহল মনে করছেন, জামায়াতের ওপর নির্যাতন জামায়াতের জন্যই শাপেবর হয়েছে। তাই চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের যে ফলাফল, তা সরকারের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয় বৈ কী! জামায়াত ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬৯ জন প্রার্থী দিয়ে বিজয়ী ২৪ জন। চেয়ারম্যন পদে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২৪,৭৭,২২৪। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ৭৪ জন প্রার্থী দিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ২৭ জন। প্রাপ্ত ভোট ২৩,০২,১০১। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২৬ প্রার্থী দিয়ে বিজয়ী ১৪ জন, প্রাপ্ত ভোট ১০,৫৮,৬১৫। পক্ষান্তরে ২০১৪ সালে ১১৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন ৩৬ জন, প্রাপ্ত ভোট ৩৮,২১,৭০৭। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ২৪৬ জন প্রার্থীর দিয়ে বিজয়ী ১২৯ জন, প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৯৫,৫২,২৬৪। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৫ প্রার্থীর মধ্যে ৩৬ জন বিজয়ী হয়েছেন, প্রাপ্ত ভোট ৩০,৪৭,৩৬৯। মূলত বিগত ২০০৯ সালের নির্বাচনের চেয়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট সংখ্যা বেড়েছে ১৩,৪৪,৪৮৩, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেড়েছে ৭২,৫০,১৬৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট বেড়েছে ১৯,৮৮,৭৫৪।
নির্যাতন, হত্যা-সন্ত্রাস-নৈরাজ্য চালিয়ে কোনো আদর্শকে সাময়িকভাবে হেনস্তা ও দাবিয়ে রাখা গেলেও নির্মূল করা সম্ভব নয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়েও আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে অনেক কিছু করেছিল। জাসদ অভিযোগ করে, হত্যা করা হয়েছিল তাদেরসহ হাজার হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে। বরং আওয়ামী লীগকেই এ জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। যদি সরকার উপজেলা নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও অবৈধ প্রভাব বিস্তার না করত, তাহলে ফলাফল আরো অন্যরকম হতো। সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভোটার মনের সংশয় থাকত না।
bhpoddar@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.