১০ দিনের মধ্যে নাগরিক ফর্মুলা by সিরাজুস সালেকিন
চলমান
সঙ্কট নিরসনে নাগরিক সমাজের উদ্যোগ চূড়ান্ত রূপ নিতে যাচ্ছে। সঙ্কটের
টেকসই সমাধানের জন্য একটি ফর্মুলা প্রণয়নের কাজ শেষপর্যায়ে আছে। গত
ফেব্রুয়ারিতে উদ্বিগ্ন নাগরিকের ব্যানারে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সমাধান
খুঁজতে প্রায় এক মাস সময় ধরে কাজ করেছেন কমিটির সদস্যরা। আগামী দশ দিনের
মধ্যে এই কমিটির তৈরি ফর্মুলা প্রকাশ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন ‘উদ্বিগ্ন
নাগরিক’দের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার
ড. এটিএম শামসুল হুদা। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা এখন
নিজেদের মধ্যে বৈঠক করছি। অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে
আগামী দশদিনের মধ্যে আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একটি ফর্মুলা তুলে ধরতে
পারবো। যা অনুসরণ করলে চলমান সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
নাগরিক সমাজের এই ফর্মুলার নাম দেয়া হয়েছে জাতীয় রূপরেখা। এই রূপরেখা অনুসরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা হবে। জাতীয় রূপরেখা তৈরির সঙ্গে জড়িত উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের একজন সদস্য জানান, বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। কিন্তু এই মুহূর্তে নির্বাচনই আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন টেকসই সমাধানের। নাগরিক সমাজের লক্ষ্য হচ্ছে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনীতিবিদদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে সহায়তা করা। তারা সংলাপে নিয়োজিত হবেন, সমঝোতায় উপনীত হবেন এবং একটি নাগরিক সনদে স্বাক্ষর করবেন। তিনি আরও জানান, এবার নাগরিক সমাজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কোন চিঠি বা প্রস্তাব পাঠাবে না। সংবাদ সম্মেলন অথবা গোলটেবিল আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জাতীয় রূপরেখা অনুরসণ করার জন্য আহ্বান জানানো হবে। কোন রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানো নাগরিক সমাজের উদ্দেশ্য নয় বলে দাবি করেন এই বিশিষ্ট নাগরিক।
উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় রূপরেখায় সরকার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব থাকবে। এতে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা এবং কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হবে। সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো হতে পারে- প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ রোধে একই ব্যক্তির একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলের প্রধান হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের মাধ্যমে একক আঞ্চলিক এলাকাভিত্তিক নির্বাচন এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন করা। দুই-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং সংসদের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত এবং এ সকল আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনীতির অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা। এ ছাড়া রূপরেখায় সরকারি ও বেসরকারি সকল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং নাগরিক সমাজের কাজের পরিধি যাতে সঙ্কুচিত না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হবে। জাতীয় সংসদকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কথা থাকবে রূপরেখায়। একইসঙ্গে সংসদ সদস্যদের সততা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়ন এবং সংবিধান নির্দেশিত সংসদ ও সংসদ সদস্যদের জন্য একটি বিশেষ অধিকার আইন প্রণয়ন করার কথা থাকছে। রূপরেখায় রাজনৈতিক দলের সংস্কারের মাধ্যমে দলগুলোকে গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ করা এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সকল স্তরে দলতন্ত্রের অবসানের কথা বলা হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ এবং বিচার বিভাগের সত্যিকার পৃথককরণের মাধ্যমে নিম্ন আদালতের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকেও রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের অপসংস্কৃতি বন্ধের আহ্বান থাকবে রূপরেখায়।
চলতি বছরের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একবছর পূর্তিতে সরকার ও বিরোধী জোটের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সঙ্কট চরম আকার ধারণ করে। অনির্দিষ্টকালের অবরোধের কবলে পড়ে দেশ। দীর্ঘ একমাসেও দেশের অচলাবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় নাগরিক সমাজ তৎপর হয়ে ওঠে। গত ৭ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকরা ‘জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। ওই সভা থেকে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছিলেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। এরপর ৯ই ফেব্রুয়ারি দেশে চলমান সঙ্কট নিরসনে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য লিখিত অনুরোধও জানিয়েছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার অনুরোধ জানিয়ে একই রকম চিঠি দিয়েছিলেন ড. হুদা। ওই চিঠির সঙ্গে কিছু প্রস্তাবনাও উল্লেখ করা হয়। সেই প্রস্তবনারই বিস্তারিত রূপ এই জাতীয় রূপরেখা। বিএনপি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও আওয়ামী লীগ নেতারা এর বিরোধিতা করেন। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠক থেকে নাগরিক সমাজের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়। এরপর আবারও ১৩ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংলাপে সহায়তা দিতে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ড. এটিএম শামসুল হুদা। ওই দিন ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ নামে ১৩ সদস্যের একটি নাগরিক কমিটির ঘোষণা দেন তিনি। ড. এটিএম শামসুল হুদা নিজেই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, এএসএম শাহজাহান, ড. আকবর আলী খান, সিএম শফি সামী, রাশেদা কে চৌধুরী, রোকেয়া আফজাল রহমান, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, ড. শাহদীন মালিক, সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, ড. আহসান মনসুর, ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বৈঠকে ছিলেন না ফজলে হাসান আবেদ
নাগরিক সমাজের বৈঠক নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংগঠন ব্র্যাক। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে জাতীয় রূপরেখা তৈরির উদ্যোগ হিসেবে গত সোমবার নাগরিক সমাজের আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ-এর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ এ ধরনের কোন বৈঠকে অংশ নেননি এবং এ জাতীয় কোন উদ্যোগের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন বলে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নাগরিক সমাজের এই ফর্মুলার নাম দেয়া হয়েছে জাতীয় রূপরেখা। এই রূপরেখা অনুসরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা হবে। জাতীয় রূপরেখা তৈরির সঙ্গে জড়িত উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের একজন সদস্য জানান, বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। কিন্তু এই মুহূর্তে নির্বাচনই আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন টেকসই সমাধানের। নাগরিক সমাজের লক্ষ্য হচ্ছে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনীতিবিদদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে সহায়তা করা। তারা সংলাপে নিয়োজিত হবেন, সমঝোতায় উপনীত হবেন এবং একটি নাগরিক সনদে স্বাক্ষর করবেন। তিনি আরও জানান, এবার নাগরিক সমাজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কোন চিঠি বা প্রস্তাব পাঠাবে না। সংবাদ সম্মেলন অথবা গোলটেবিল আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জাতীয় রূপরেখা অনুরসণ করার জন্য আহ্বান জানানো হবে। কোন রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানো নাগরিক সমাজের উদ্দেশ্য নয় বলে দাবি করেন এই বিশিষ্ট নাগরিক।
উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় রূপরেখায় সরকার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব থাকবে। এতে সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা এবং কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে পরবর্তী সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হবে। সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো হতে পারে- প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ রোধে একই ব্যক্তির একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলের প্রধান হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের মাধ্যমে একক আঞ্চলিক এলাকাভিত্তিক নির্বাচন এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন করা। দুই-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং সংসদের ন্যূনতম এক তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত এবং এ সকল আসনে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনীতির অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা। এ ছাড়া রূপরেখায় সরকারি ও বেসরকারি সকল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং নাগরিক সমাজের কাজের পরিধি যাতে সঙ্কুচিত না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হবে। জাতীয় সংসদকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কথা থাকবে রূপরেখায়। একইসঙ্গে সংসদ সদস্যদের সততা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়ন এবং সংবিধান নির্দেশিত সংসদ ও সংসদ সদস্যদের জন্য একটি বিশেষ অধিকার আইন প্রণয়ন করার কথা থাকছে। রূপরেখায় রাজনৈতিক দলের সংস্কারের মাধ্যমে দলগুলোকে গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ করা এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সকল স্তরে দলতন্ত্রের অবসানের কথা বলা হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ এবং বিচার বিভাগের সত্যিকার পৃথককরণের মাধ্যমে নিম্ন আদালতের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকেও রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের অপসংস্কৃতি বন্ধের আহ্বান থাকবে রূপরেখায়।
চলতি বছরের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একবছর পূর্তিতে সরকার ও বিরোধী জোটের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সঙ্কট চরম আকার ধারণ করে। অনির্দিষ্টকালের অবরোধের কবলে পড়ে দেশ। দীর্ঘ একমাসেও দেশের অচলাবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় নাগরিক সমাজ তৎপর হয়ে ওঠে। গত ৭ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকরা ‘জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। ওই সভা থেকে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছিলেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। এরপর ৯ই ফেব্রুয়ারি দেশে চলমান সঙ্কট নিরসনে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য লিখিত অনুরোধও জানিয়েছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার অনুরোধ জানিয়ে একই রকম চিঠি দিয়েছিলেন ড. হুদা। ওই চিঠির সঙ্গে কিছু প্রস্তাবনাও উল্লেখ করা হয়। সেই প্রস্তবনারই বিস্তারিত রূপ এই জাতীয় রূপরেখা। বিএনপি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও আওয়ামী লীগ নেতারা এর বিরোধিতা করেন। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠক থেকে নাগরিক সমাজের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়। এরপর আবারও ১৩ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংলাপে সহায়তা দিতে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ড. এটিএম শামসুল হুদা। ওই দিন ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ’ নামে ১৩ সদস্যের একটি নাগরিক কমিটির ঘোষণা দেন তিনি। ড. এটিএম শামসুল হুদা নিজেই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, এএসএম শাহজাহান, ড. আকবর আলী খান, সিএম শফি সামী, রাশেদা কে চৌধুরী, রোকেয়া আফজাল রহমান, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, ড. শাহদীন মালিক, সৈয়দ আবুল মকসুদ, আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, ড. আহসান মনসুর, ড. বদিউল আলম মজুমদার।
বৈঠকে ছিলেন না ফজলে হাসান আবেদ
নাগরিক সমাজের বৈঠক নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংগঠন ব্র্যাক। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে জাতীয় রূপরেখা তৈরির উদ্যোগ হিসেবে গত সোমবার নাগরিক সমাজের আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্যার ফজলে হাসান আবেদ-এর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। স্যার ফজলে হাসান আবেদ এ ধরনের কোন বৈঠকে অংশ নেননি এবং এ জাতীয় কোন উদ্যোগের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন বলে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
No comments