পুলিশের মোটরসাইকেল কেনায় ব্যাপক কারসাজি by মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নু ও শাহ আলম খান
পুলিশের জন্য মোটরসাইকেল কেনাকাটার দরপত্র
প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারসাজির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের শতভাগ
সক্ষমতা থাকলেও দরপত্রে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। যাতে স্থানীয় কোনো
প্রতিষ্ঠান ক্রয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে সেজন্য এ সংক্রান্ত কারিগরি
চাহিদাপত্রে কয়েকটি দেশের নাম সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। অথচ
আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দেশে উন্নতমানের মোটরসাইকেল উৎপাদিত হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, মহল বিশেষের স্বার্থ হাসিলের জন্য কেনাকাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট
প্রভাবশালী একটি চক্র সরকারি ক্রয় নীতিমালাবহির্ভূত এমন অপতৎপরতা শুরু
করেছে।
জানা গেছে, পুলিশ বিভাগের জন্য ১৫৫টি মোটরসাইকেল কিনতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১৩ এপ্রিল। একইদিন দরপত্র খোলা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দরপত্রের কারিগরি সুনির্দিষ্টকরণ সংক্রান্ত এক পত্রে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী দেশ, প্রস্তুতকারী ও জাহাজিকরণ দেশের নাম চিহ্নিত করে দেয়া হয়। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, জাপান, ভারত, অস্টে লিয়া ও উত্তর আমেরিকা। অথচ এখানে বাংলাদেশের নামই নেই। এছাড়া মোটরসাইকেলের সিসি উল্লেখ করার ক্ষেত্রে কারসাজির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। যেখানে ৫০, ৮০, ১০০, ১২৫, ১৩৫ ১৫০ সিসির মোটরসাইকেল প্রস্তুত ও কেনাবেচা হয়, সেখানে পুলিশ বিভাগের দরপত্রে ১৪৫ থেকে ১৫৫ সিসির চাহিদার উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টিও বিভ্রান্তিকর ও দুরভিসন্ধিমূলক।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০০৬ ও বিধিমালা ২০০৮-এর ২৪ নম্বর আইনে বলা হয়েছে, সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা কোনো পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ওই আইনে ক্রয় কাজে অংশ গ্রহণের ইচ্ছুক সব ব্যক্তির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। পিপিআরের আন্তর্জাতিক ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে ৩৯-এর ২ ধারায় সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের মোটরসাইকেল কেনাকাটায় এ সুযোগ রাখা হয়নি। এছাড়া এই আইনের ৫০-এর ৫ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক কোম্পানির লোকবল, যন্ত্রপাতি এবং নির্মাণ বা উৎপাদন সুবিধাদি সম্পর্কিত বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশের মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে দেশীয় কোম্পানির এসব যোগ্যতা তথা উৎপাদন সক্ষমতা, গুণগত মান ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ থাকলেও তা বিবেচনায়ই নেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী মহল বলছেন, এভাবে দেশের নাম সুনির্দিষ্ট করে দেয়ায় স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোনো প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিতে পারবে না। তারা বলেন, দেশে এখন আন্তর্জাতিক গুণগত মান বজায় রেখে উন্নতমানের মোটরসাইকেল প্রস্তুত হচ্ছে। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দিক থেকে তা উন্নত দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। দামও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। কিন্তু দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান যাতে এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কিছু লোক তাদের নিজেদের আখের গোছানোর জন্য দেশের স্বার্থবিরোধী পথ বেছে নিয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, এভাবে দেশে উৎপাদিত ভালো মানের মোটরসাইকেল বাদ রেখে বিদেশ থেকে আমদানি করা হলে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হবে, তেমনি দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। তারা বলেন, সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে এ রকম নেতিবাচক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে পারবে না। ফলে কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, লিখিত কোনো ডকুমেন্ট না থাকলেও একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়ে মূলত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এসব মোটরসাইকেল কেনার পাঁয়তারা করছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মো. ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ বিভাগের মতো দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। এ ব্যাপারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, সমস্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণের সব বিভাগের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানদের আমি সরকারি কেনাকাটার বিষয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধাসরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়ে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছি। তাদের এটিও অবহিত করা হয়েছে যে, এ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও একনেক সভার।
তিনি বলেন, সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকলে অবশ্যই দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে তা কিনতে হবে। কিন্তু এ রকম সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি কোনো প্রতিষ্ঠান এর ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে বলতে হবে সরকারি নিয়ম যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, এ রকম নিয়ম না মানার একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পুলিশ বিভাগ। তারা পুলিশ বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে প্রায়ই দেশীয় পণ্য কিংবা কোম্পানিকে হিসাবে রাখে না। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও পুলিশ বিভাগের জন্য পিকআপ ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়, দেশের প্রতিষ্ঠানই ওই মানের পিকআপ ভ্যান জোগান দিতে সক্ষম। কিন্তু তারা আমাদের প্রস্তাব রাখেনি।
ইমতিয়াজ চৌধুরী জানান, অর্থমন্ত্রী নিজেও দেশের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য নানাভাবে কৃচ্ছ সাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও পুলিশ বিভাগ যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে খামখেয়ালিপনা দেখিয়ে যাচ্ছে। আবার এসব প্রক্রিয়ার বিষয়ে দুদকও (দুর্নীতি দমন কমিশন) দেখে না। এ অবস্থায় আমরা তো আর পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারি না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বানকারী পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) গোলাম কিবরিয়া সোমবার যুগান্তরকে বলেন, যে পণ্যটি কেনা হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক মানের কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই সাধারণত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এখন মোটরসাইকেল প্রস্তুত হচ্ছে কিনা তা তাদের জানা নেই। তিনি বলেন, ক্রয় নীতিমালায় (পিপিআর) গুণগত মান, স্থায়িত্ব ও বাজেটের মধ্যে থেকে কেনাকাটার জন্য বলা হয়েছে। আর পণ্যের মান নির্ধারণের জন্য অর্থ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী টেন্ডার আহ্বান করা হয়ে থাকে।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পর কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক যে কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের অবজারভেশন টেন্ডার কমিটির কাছে জানাতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার দাখিলের শেষ দিনের অন্তত ১০ দিন আগে প্রিবিট মিটিংয়ে এসব অবজারভেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোনো অবজারভেশন গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে কমিটি তা বিবেচনায় এনে থাকে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু যুগান্তরকে বলেন, কেনাকাটায় দেশীয় পণ্যকেই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। এটিই সরকারের নীতি। তবে বিষয়টি নিয়ে যেহেতু তার জানা নেই তাই এর বেশি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
দেশীয় কোম্পানিগুলোকে দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ বঞ্চিত করার বিষয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ দফতরে যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের মোটরবাইক কেনার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে পুলিশ সদর দফতর করে থাকে। সাধারণত এসব কেনাকাটার বিষয়ে নিয়মের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি পুলিশ সদর দফতর ভালো বলতে পারবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, কেনাকাটার এ প্রক্রিয়াটির সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা নেই। তবে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন, পণ্য ও সেবা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেই অর্থে সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেশীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তাদের এ ধরনের কেনাকাটার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ) আকতার হোসেন ভুঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের জন্য এখনও মন্ত্রণালয়ে আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেনাকাটার বিষয়ে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কিত শর্ত উল্লেখ থাকতে পারে। কিন্তু কোনো দেশের নাম উল্লেখ করার সুযোগ আছে বলে তার জানা নেই। দরপত্র দেখার জন্য এ সংক্রান্ত কমিটি রয়েছে। নিয়ম-নীতির ব্যত্যয় ঘটানো হলে কমিটি অবশ্যই তা খতিয়ে দেখবে।
এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও ব্যয় নিযন্ত্রণ) ড. মজিবুর রহমান হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, সরকারি উন্নয়ন কাজে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের কেনাকাটা যেমন আবশ্যক, তেমনি এসব কেনাকাটায় কৃচ্ছ্রসাধনের বিষয়টিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ শাখা কঠোরভাবে প্রতিপালন করে আসছে। সেক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধির প্রতিটি ধারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে অর্থ বিভাগ। এরপর কেনাকাটায় প্রয়োজনীয় ব্যয়ের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন করে গাড়ি কেনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড়ে শর্ত রয়েছে- দেশীয় বাজার থেকেই এসব পণ্য কিনতে হবে। কিন্তু পুলিশ বিভাগ সেটি দেশীয় বাজার থেকে কেনার পরিবর্তে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে কেনার প্রক্রিয়া শেষ করতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, মোটরসাইকেল কেনার জন্য সম্প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্রও চাওয়া হয়েছে। এতে সরকারি অর্থ অপচয়ের আশংকা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এসব বিষয় নিয়ে অর্থছাড়কারী প্রতিষ্ঠান অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ শাখাও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে একাধিক চিঠি চালাচালি করে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। জানা গেছে, সাবেক অর্থ সচিব ড. ফজলে কবির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়া এক চিঠিতে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি দরপত্রের প্রতি অর্থ বিভাগের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। গত ১৫-০৪-২০১৪ তারিখে প্রকাশিত দরপত্রে ডাবল কেবিন পিকআপ ৬২টিসহ প্রোটেকশন জিপ ২টি, ট্রাক (৫ টন), মিনিবাস একটি ক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ বিভাগ থেকে কোনো সরকারি দফতরকে যখন যানবাহন কেনার সম্মতি দেয়া হয়, তখন দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার শর্ত দেয়া হয়। বিদেশ থেকে আমদানি অপরিহার্য হলে কেবল বিদেশ থেকে ক্রয় করা যাবে বলে শর্ত দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত সম্মতিপত্রে শর্ত ছিল সরকারি ব্যয় যৌক্তিককরণের লক্ষ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ বিভাগের নির্ধারিত দরে যানবাহন ক্রয় করতে হবে। তবে যেসব যানবাহন/সরঞ্জামাদি দেশে পাওয়া যায় না কেবল সেগুলোই বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে ক্রয় করা যেতে পারে। কিন্তু অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, স্পষ্টত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্রের শর্ত পালন করেনি।
জানা গেছে, পুলিশ বিভাগের জন্য ১৫৫টি মোটরসাইকেল কিনতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ১৩ এপ্রিল। একইদিন দরপত্র খোলা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দরপত্রের কারিগরি সুনির্দিষ্টকরণ সংক্রান্ত এক পত্রে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী দেশ, প্রস্তুতকারী ও জাহাজিকরণ দেশের নাম চিহ্নিত করে দেয়া হয়। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, জাপান, ভারত, অস্টে লিয়া ও উত্তর আমেরিকা। অথচ এখানে বাংলাদেশের নামই নেই। এছাড়া মোটরসাইকেলের সিসি উল্লেখ করার ক্ষেত্রে কারসাজির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। যেখানে ৫০, ৮০, ১০০, ১২৫, ১৩৫ ১৫০ সিসির মোটরসাইকেল প্রস্তুত ও কেনাবেচা হয়, সেখানে পুলিশ বিভাগের দরপত্রে ১৪৫ থেকে ১৫৫ সিসির চাহিদার উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টিও বিভ্রান্তিকর ও দুরভিসন্ধিমূলক।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০০৬ ও বিধিমালা ২০০৮-এর ২৪ নম্বর আইনে বলা হয়েছে, সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা কোনো পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ওই আইনে ক্রয় কাজে অংশ গ্রহণের ইচ্ছুক সব ব্যক্তির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। পিপিআরের আন্তর্জাতিক ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে ৩৯-এর ২ ধারায় সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের মোটরসাইকেল কেনাকাটায় এ সুযোগ রাখা হয়নি। এছাড়া এই আইনের ৫০-এর ৫ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক কোম্পানির লোকবল, যন্ত্রপাতি এবং নির্মাণ বা উৎপাদন সুবিধাদি সম্পর্কিত বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশের মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে দেশীয় কোম্পানির এসব যোগ্যতা তথা উৎপাদন সক্ষমতা, গুণগত মান ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ থাকলেও তা বিবেচনায়ই নেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী মহল বলছেন, এভাবে দেশের নাম সুনির্দিষ্ট করে দেয়ায় স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোনো প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিতে পারবে না। তারা বলেন, দেশে এখন আন্তর্জাতিক গুণগত মান বজায় রেখে উন্নতমানের মোটরসাইকেল প্রস্তুত হচ্ছে। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের দিক থেকে তা উন্নত দেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। দামও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। কিন্তু দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান যাতে এগিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কিছু লোক তাদের নিজেদের আখের গোছানোর জন্য দেশের স্বার্থবিরোধী পথ বেছে নিয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, এভাবে দেশে উৎপাদিত ভালো মানের মোটরসাইকেল বাদ রেখে বিদেশ থেকে আমদানি করা হলে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হবে, তেমনি দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। তারা বলেন, সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে এ রকম নেতিবাচক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে পারবে না। ফলে কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, লিখিত কোনো ডকুমেন্ট না থাকলেও একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়ে মূলত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এসব মোটরসাইকেল কেনার পাঁয়তারা করছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মো. ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ বিভাগের মতো দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। এ ব্যাপারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, সমস্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণের সব বিভাগের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানদের আমি সরকারি কেনাকাটার বিষয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধাসরকারি পত্র (ডিও লেটার) দিয়ে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছি। তাদের এটিও অবহিত করা হয়েছে যে, এ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও একনেক সভার।
তিনি বলেন, সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা থাকলে অবশ্যই দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে তা কিনতে হবে। কিন্তু এ রকম সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যদি কোনো প্রতিষ্ঠান এর ব্যত্যয় ঘটায় তাহলে বলতে হবে সরকারি নিয়ম যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, এ রকম নিয়ম না মানার একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পুলিশ বিভাগ। তারা পুলিশ বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে প্রায়ই দেশীয় পণ্য কিংবা কোম্পানিকে হিসাবে রাখে না। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও পুলিশ বিভাগের জন্য পিকআপ ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়, দেশের প্রতিষ্ঠানই ওই মানের পিকআপ ভ্যান জোগান দিতে সক্ষম। কিন্তু তারা আমাদের প্রস্তাব রাখেনি।
ইমতিয়াজ চৌধুরী জানান, অর্থমন্ত্রী নিজেও দেশের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য নানাভাবে কৃচ্ছ সাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও পুলিশ বিভাগ যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে খামখেয়ালিপনা দেখিয়ে যাচ্ছে। আবার এসব প্রক্রিয়ার বিষয়ে দুদকও (দুর্নীতি দমন কমিশন) দেখে না। এ অবস্থায় আমরা তো আর পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারি না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বানকারী পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) গোলাম কিবরিয়া সোমবার যুগান্তরকে বলেন, যে পণ্যটি কেনা হচ্ছে তা আন্তর্জাতিক মানের কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতেই সাধারণত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এখন মোটরসাইকেল প্রস্তুত হচ্ছে কিনা তা তাদের জানা নেই। তিনি বলেন, ক্রয় নীতিমালায় (পিপিআর) গুণগত মান, স্থায়িত্ব ও বাজেটের মধ্যে থেকে কেনাকাটার জন্য বলা হয়েছে। আর পণ্যের মান নির্ধারণের জন্য অর্থ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী টেন্ডার আহ্বান করা হয়ে থাকে।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পর কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক যে কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের অবজারভেশন টেন্ডার কমিটির কাছে জানাতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার দাখিলের শেষ দিনের অন্তত ১০ দিন আগে প্রিবিট মিটিংয়ে এসব অবজারভেশন নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোনো অবজারভেশন গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে কমিটি তা বিবেচনায় এনে থাকে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু যুগান্তরকে বলেন, কেনাকাটায় দেশীয় পণ্যকেই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। এটিই সরকারের নীতি। তবে বিষয়টি নিয়ে যেহেতু তার জানা নেই তাই এর বেশি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
দেশীয় কোম্পানিগুলোকে দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ বঞ্চিত করার বিষয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ দফতরে যুগান্তরকে বলেন, পুলিশের মোটরবাইক কেনার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে পুলিশ সদর দফতর করে থাকে। সাধারণত এসব কেনাকাটার বিষয়ে নিয়মের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি পুলিশ সদর দফতর ভালো বলতে পারবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, কেনাকাটার এ প্রক্রিয়াটির সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা নেই। তবে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন, পণ্য ও সেবা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেই অর্থে সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে দেশীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তাদের এ ধরনের কেনাকাটার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ) আকতার হোসেন ভুঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের জন্য এখনও মন্ত্রণালয়ে আসেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেনাকাটার বিষয়ে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কিত শর্ত উল্লেখ থাকতে পারে। কিন্তু কোনো দেশের নাম উল্লেখ করার সুযোগ আছে বলে তার জানা নেই। দরপত্র দেখার জন্য এ সংক্রান্ত কমিটি রয়েছে। নিয়ম-নীতির ব্যত্যয় ঘটানো হলে কমিটি অবশ্যই তা খতিয়ে দেখবে।
এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও ব্যয় নিযন্ত্রণ) ড. মজিবুর রহমান হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, সরকারি উন্নয়ন কাজে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের কেনাকাটা যেমন আবশ্যক, তেমনি এসব কেনাকাটায় কৃচ্ছ্রসাধনের বিষয়টিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ শাখা কঠোরভাবে প্রতিপালন করে আসছে। সেক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধির প্রতিটি ধারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে অর্থ বিভাগ। এরপর কেনাকাটায় প্রয়োজনীয় ব্যয়ের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন করে গাড়ি কেনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড়ে শর্ত রয়েছে- দেশীয় বাজার থেকেই এসব পণ্য কিনতে হবে। কিন্তু পুলিশ বিভাগ সেটি দেশীয় বাজার থেকে কেনার পরিবর্তে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে কেনার প্রক্রিয়া শেষ করতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, মোটরসাইকেল কেনার জন্য সম্প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্রও চাওয়া হয়েছে। এতে সরকারি অর্থ অপচয়ের আশংকা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এসব বিষয় নিয়ে অর্থছাড়কারী প্রতিষ্ঠান অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ শাখাও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে একাধিক চিঠি চালাচালি করে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। জানা গেছে, সাবেক অর্থ সচিব ড. ফজলে কবির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়া এক চিঠিতে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি দরপত্রের প্রতি অর্থ বিভাগের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। গত ১৫-০৪-২০১৪ তারিখে প্রকাশিত দরপত্রে ডাবল কেবিন পিকআপ ৬২টিসহ প্রোটেকশন জিপ ২টি, ট্রাক (৫ টন), মিনিবাস একটি ক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ বিভাগ থেকে কোনো সরকারি দফতরকে যখন যানবাহন কেনার সম্মতি দেয়া হয়, তখন দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার শর্ত দেয়া হয়। বিদেশ থেকে আমদানি অপরিহার্য হলে কেবল বিদেশ থেকে ক্রয় করা যাবে বলে শর্ত দেয়া হয়। এ সংক্রান্ত সম্মতিপত্রে শর্ত ছিল সরকারি ব্যয় যৌক্তিককরণের লক্ষ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ বিভাগের নির্ধারিত দরে যানবাহন ক্রয় করতে হবে। তবে যেসব যানবাহন/সরঞ্জামাদি দেশে পাওয়া যায় না কেবল সেগুলোই বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে ক্রয় করা যেতে পারে। কিন্তু অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, স্পষ্টত পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্রের শর্ত পালন করেনি।
No comments