বিদেশে নারীর কর্মসংস্থান বাড়ছে by শরিফুল হাসান
বাংলাদেশ থেকে পুরুষ কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থান কমলেও নারীদের বাড়ছে। ১৮টি দেশে কর্মরত আছেন সাড়ে তিন লাখের বেশি নারী। তাঁদের দুই লাখের বেশি গেছেন গত পাঁচ বছরে। তাঁরা আয়ের পুরোটাই দেশে পাঠিয়ে অবদান রাখছেন জাতীয় অর্থনীতিতে।
২০১২ সালের আগে মোট বিদেশগামীদের ৫ শতাংশ ছিলেন নারী। ২০১৪ সালে তা ১৮ শতাংশে এবং চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সৌদি আরবে নারী কর্মী যাওয়া শুরু হলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছে সরকার। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে নারী কর্মী পাঠানোর চুক্তি হয়েছে। সরকার বলছে, দেশটি বছরে ১ লাখ ২০ হাজার নারী গৃহকর্মী নিতে চায়।
সরকার এবং অভিবাসী নারীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বিদেশে নারী কর্মীদের এই সংখ্যাকে খুব ইতিবাচক মন্তব্য করে বলছে, এটি নারীর ক্ষমতায়নের একটি বড় পদক্ষেপ। তবে নারী কর্মীরা যেন বিদেশে নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য তাঁদের সচেতনতা ও যথাযথ প্রশিক্ষণ জরুরি। নার্সসহ বিভিন্ন খাতেও নারী কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমাদের নারী কর্মীদের বিদেশে যাওয়া অনেক বেড়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে মেয়েরা এখন বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। এটি খুব ইতিবাচক। কেবল গৃহকর্মী নন, ভবিষ্যতে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দক্ষ নারী কর্মীদেরও বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি সরকার ভাবছে।’ তিনি বলেন, ‘নারীদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়েও আমরা এখন খুব সচেতন। আইএলও, আইওএম—সবাই এসব বিষয়ে সোচ্চার। যে দেশগুলো নারী কর্মী নিচ্ছে, তাদের প্রতিও একধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে। ফলে সমস্যা কমে আসছে। আর ভাষার কারণেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। সৌদি আরবে নারী কর্মী পাঠানোর আগেই আমরা তাঁদের ভাষার প্রশিক্ষণ দেব।’
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে ২ হাজার ১৮৯ জন নারী কর্মী বিদেশে যান। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ৭৬ হাজার ৭ জন। গত ৪৪ বছরে এটাই সর্বোচ্চ। গত বছর মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪ জন বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে ১৮ শতাংশ নারী। গত দুই মাসে মোট ৬৩ হাজার ৩৯০ জন কর্মী বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে ১৩ হাজার ৭৬২ জন অর্থাৎ ২২ শতাংশ নারী।
২০১৩ সালে বিদেশে যাওয়া ৪ লাখ ৯ হাজার ২৫৩ জনের মধ্যে নারী ৫৬ হাজার ৪০০ জন, অর্থাৎ প্রায় ১৪ শতাংশ। অথচ ২০১২ সালে মোট বিদেশগামীদের মধ্যে নারী ছিলেন মাত্র ৬ শতাংশ। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ৩ থেকে ৪ শতাংশ। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩১ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৫৭৭ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতে, ৯৩ হাজার ৩৮২ জন লেবাননে, ৬৮ হাজার ৪৬১ জন জর্ডানে, ৩২ হাজার ২২৪ জন সৌদি আরবে, ২৮ হাজার ২৮২ জন ওমানে, ১৪ হাজার ১২৭ জন মরিশাসে, ৯ হাজার ৮৭২ জন কাতারে, ৭ হাজার ৬৬১ জন কুয়েতে, ৬ হাজার ৫২২ জন মালয়েশিয়ায়, ৩ হাজার ৮৪৯ জন বাহরাইনে, ৯১২ জন সিঙ্গাপুরে, ৮৮২ জন হংকংয়ে, ৫৩১ জন লিবিয়ায়, ৪৬৩ জন ইতালিতে, ১৪৭ জন যুক্তরাজ্যে, ৯১ জন সাইপ্রাসে, ৮৬ জন ব্রুনেইয়ে ও ৪০ জন পাকিস্তানে গেছেন। বাকি ৯২২ জন অন্যান্য দেশে গেছেন।
বাংলাদেশ মহিলা অভিবাসী শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের (বমসা) পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, একজন পুরুষ প্রবাসী কর্মী হয়তো কিছু টাকা বিদেশে খরচ করেন, কিন্তু একজন নারী তাঁর আয়ের পুরোটাই দেশে পাঠান। ফলে বর্তমানে সাড়ে তিন লাখ নারী কর্মীর প্রবাসী-আয়ের পুরোটাই দেশে আসছে। নির্যাতন-নিপীড়নের কিছু ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বন্ধে বিদেশে যাওয়ার আগেই একটি মেয়েকে মুঠোফোন দেওয়া উচিত, যাতে তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। আর দূতাবাস থেকেও নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া উচিত।’
২০১২ সালের আগে মোট বিদেশগামীদের ৫ শতাংশ ছিলেন নারী। ২০১৪ সালে তা ১৮ শতাংশে এবং চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সৌদি আরবে নারী কর্মী যাওয়া শুরু হলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছে সরকার। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে নারী কর্মী পাঠানোর চুক্তি হয়েছে। সরকার বলছে, দেশটি বছরে ১ লাখ ২০ হাজার নারী গৃহকর্মী নিতে চায়।
সরকার এবং অভিবাসী নারীদের নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বিদেশে নারী কর্মীদের এই সংখ্যাকে খুব ইতিবাচক মন্তব্য করে বলছে, এটি নারীর ক্ষমতায়নের একটি বড় পদক্ষেপ। তবে নারী কর্মীরা যেন বিদেশে নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য তাঁদের সচেতনতা ও যথাযথ প্রশিক্ষণ জরুরি। নার্সসহ বিভিন্ন খাতেও নারী কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমাদের নারী কর্মীদের বিদেশে যাওয়া অনেক বেড়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে মেয়েরা এখন বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। এটি খুব ইতিবাচক। কেবল গৃহকর্মী নন, ভবিষ্যতে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে দক্ষ নারী কর্মীদেরও বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি সরকার ভাবছে।’ তিনি বলেন, ‘নারীদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়েও আমরা এখন খুব সচেতন। আইএলও, আইওএম—সবাই এসব বিষয়ে সোচ্চার। যে দেশগুলো নারী কর্মী নিচ্ছে, তাদের প্রতিও একধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে। ফলে সমস্যা কমে আসছে। আর ভাষার কারণেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। সৌদি আরবে নারী কর্মী পাঠানোর আগেই আমরা তাঁদের ভাষার প্রশিক্ষণ দেব।’
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সালে ২ হাজার ১৮৯ জন নারী কর্মী বিদেশে যান। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ৭৬ হাজার ৭ জন। গত ৪৪ বছরে এটাই সর্বোচ্চ। গত বছর মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪ জন বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে ১৮ শতাংশ নারী। গত দুই মাসে মোট ৬৩ হাজার ৩৯০ জন কর্মী বিদেশে গেছেন, যার মধ্যে ১৩ হাজার ৭৬২ জন অর্থাৎ ২২ শতাংশ নারী।
২০১৩ সালে বিদেশে যাওয়া ৪ লাখ ৯ হাজার ২৫৩ জনের মধ্যে নারী ৫৬ হাজার ৪০০ জন, অর্থাৎ প্রায় ১৪ শতাংশ। অথচ ২০১২ সালে মোট বিদেশগামীদের মধ্যে নারী ছিলেন মাত্র ৬ শতাংশ। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ৩ থেকে ৪ শতাংশ। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩১ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৫৭৭ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতে, ৯৩ হাজার ৩৮২ জন লেবাননে, ৬৮ হাজার ৪৬১ জন জর্ডানে, ৩২ হাজার ২২৪ জন সৌদি আরবে, ২৮ হাজার ২৮২ জন ওমানে, ১৪ হাজার ১২৭ জন মরিশাসে, ৯ হাজার ৮৭২ জন কাতারে, ৭ হাজার ৬৬১ জন কুয়েতে, ৬ হাজার ৫২২ জন মালয়েশিয়ায়, ৩ হাজার ৮৪৯ জন বাহরাইনে, ৯১২ জন সিঙ্গাপুরে, ৮৮২ জন হংকংয়ে, ৫৩১ জন লিবিয়ায়, ৪৬৩ জন ইতালিতে, ১৪৭ জন যুক্তরাজ্যে, ৯১ জন সাইপ্রাসে, ৮৬ জন ব্রুনেইয়ে ও ৪০ জন পাকিস্তানে গেছেন। বাকি ৯২২ জন অন্যান্য দেশে গেছেন।
বাংলাদেশ মহিলা অভিবাসী শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের (বমসা) পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, একজন পুরুষ প্রবাসী কর্মী হয়তো কিছু টাকা বিদেশে খরচ করেন, কিন্তু একজন নারী তাঁর আয়ের পুরোটাই দেশে পাঠান। ফলে বর্তমানে সাড়ে তিন লাখ নারী কর্মীর প্রবাসী-আয়ের পুরোটাই দেশে আসছে। নির্যাতন-নিপীড়নের কিছু ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি বন্ধে বিদেশে যাওয়ার আগেই একটি মেয়েকে মুঠোফোন দেওয়া উচিত, যাতে তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন। আর দূতাবাস থেকেও নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া উচিত।’
No comments