‘আমিও নাই তুমিও নাই’ by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
মেয়র প্যানেলের দুই সদস্যের লড়াইয়ে কপাল খুললো সিলেট সিটি করপোরেশনের (এসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার। তিনিই এখন করপোরেশনের ‘সর্বেসর্বা। তবে অনেকেই বলছেন, খুলেনি কপাল, বরং পুড়েছে। এমনকি আদালত অবমাননার দায়ও কাঁধে চাপতে পারে। আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যে আদেশে এসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পেয়েছেন সেটাকেও বেআইনি ও এখতিয়ারবহির্ভূতও বলছেন অনেকে। তাই অসন্তোষের সুর উঠেছে কাউন্সিলরদের মধ্যেও। তারা মাথার ওপর অনির্বাচিত কাউকে মানতে চাইছেন না। তাই হয়তো ‘বিশেষ ক্ষমতা’র আশ্রয় নেয়ার চিন্তাভাবনা কোন কোন কাউন্সিলরের মধ্যে।
৫ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সরোজ কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে সিলেট সিটি করপোরেশনের সব আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া হয় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিবকে। তবে আদেশে উল্লেখ করা হয়নি- যে বিষয়ের মীমাংসার দায়িত্ব উচ্চ আদালতে প্রক্রিয়াধীন, সেখানে মন্ত্রণালয় কোন বলে এমন সিদ্ধান্ত নিলো। তাই মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে আদালতের অবমাননাও বলে মনে করছেন অনেকেই। উচ্চ আদালত ‘মেয়রের কার্যক্রম’ প্রসঙ্গে ১৯শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত্ত স্থিতাবস্থা জারি রেখেছেন। মন্ত্রণালয় সেটাকে ‘স্থিত’ না রেখে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী একটি হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ায়ই মূলত মেয়র প্রশ্নে জটিলতা দেখা দেয়। করপোরেশনের নিজস্ব নীতিমালা থাকায় তার অবর্তমানে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার কথা না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রশ্নে তালগোল বেঁধে যায়। পদ নিয়ে প্যানেল মেয়রের দুই সদস্যের লড়াই হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। গত ২০শে জানুয়ারি বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের একটি দ্বৈত বেঞ্চ প্যানেল মেয়রের দ্বিতীয় সদস্য কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরীর এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। ওই বেঞ্চের ১৯শে ফেব্রুয়ারির কার্যতালিকায় রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
এসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা সত্ত্বেও ‘তদবিরে’র জোরেই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সব ক্ষমতা মুঠোবন্দি করেছেন। আর এজন্যই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকও হতে দেননি তিনি। অনেকের মতে, তিনি চাইলেই মেয়র প্রশ্নে এতটা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তবে এসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব বিভিন্ন সময়ে মানবজমিনকে বলেছিলেন, এমন পরিস্থিতিতে তার আসলে কিছুই করার ছিল না। যতদূর পেরেছেন চেষ্টা করেছেন। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য নিভৃতে ঠিকই হেঁটেছেন তিনি। তিনজন আইনজীবীর শরণাপণ্ন হন আইনে তার ক্ষমতা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা জানতে। আইনজীবীদের পরামর্শে আশ্বস্ত হওয়ার মতো কোন কিছু না পেলেও ক্ষমতা ঠিকই পেয়েছেন।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে অসন্তুষ্ট হলেও কাকে দুষবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কাউন্সিলররা। কেননা জল তারাই ঘোলা করেছিলেন। মেয়র প্যানেলের দুই সদস্যের পক্ষ হয়ে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিলেন তারা। দু’পক্ষই চেয়েছিলেন মেয়রের চেয়ার। গত ১১ই জানুয়ারি মেয়র প্যানেলের প্রথম সদস্য কাউন্সিল রেজাউল হাসান কয়েস লোদী মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বলে যখন চেয়ারে বসতে গিয়েছিলেন, নিজের অনুসারীদের নিয়ে তাকে রুখে দিয়েছিলেন প্যানেলের দ্বিতীয় সদস্য কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরী। যার হাতে ছিল কারান্তরীণ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর এক ‘ক্ষমতার্পণ পত্র’।
মুখে না বললেও দীর্ঘশ্বাস ঠিকই ফেলছেন কাউন্সিলররা। বিশেষ করে মেয়র প্যানেলে প্রথম দুই সদস্য। তবে বিএনপি রাজনীতির অনুসারী হওয়ায় একটু বেকায়দায় আছেন তারা। রাজনৈতিক এ অস্থিরতার এ সময়ে উঁচু সুর তুলতে পারছেন না। ‘কিল খেয়ে কিল হজম’ করছেন। তবে মেয়রের চেয়ারে বসতে না পারলেও উভয় পক্ষের একটিই সান্ত্বনা ‘প্রতিদ্বন্দ্বীও তো সে চেয়ারে বসতে পারেননি’। তবে চুপ থাকতে চাইছেন না তাদের অনুসারীদের অনেকেই। তারা একে ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ হিসেবে নিয়েছেন। চাইছেন একটা বিহিত করতে। আইনজীবীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন, আইনি সুযোগ খুঁজছেন। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৬২ ধারার ৪নং উপধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘করপোরেশনের বিশেষ সভায় উপস্থিত কাউন্সিলরদের মোট সংখ্যার তিন-পঞ্চমাংশের ভোটে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব গৃহীত হইলে সরকার তাহাকে তাহার পদ হইতে প্রত্যাহার করিবে।’ ‘প্রেস্টিজ’ রক্ষায় একটি বিশেষ সভার চিন্তা করছেন তাই কাউন্সিলরদের কেউ কেউ। সভায় সে ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটালে এসএসসিই হয়তো ছেড়ে যেতে হতে পারে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
৫ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সরোজ কুমার নাথ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে সিলেট সিটি করপোরেশনের সব আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া হয় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিবকে। তবে আদেশে উল্লেখ করা হয়নি- যে বিষয়ের মীমাংসার দায়িত্ব উচ্চ আদালতে প্রক্রিয়াধীন, সেখানে মন্ত্রণালয় কোন বলে এমন সিদ্ধান্ত নিলো। তাই মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে আদালতের অবমাননাও বলে মনে করছেন অনেকেই। উচ্চ আদালত ‘মেয়রের কার্যক্রম’ প্রসঙ্গে ১৯শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত্ত স্থিতাবস্থা জারি রেখেছেন। মন্ত্রণালয় সেটাকে ‘স্থিত’ না রেখে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী একটি হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ায়ই মূলত মেয়র প্রশ্নে জটিলতা দেখা দেয়। করপোরেশনের নিজস্ব নীতিমালা থাকায় তার অবর্তমানে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার কথা না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রশ্নে তালগোল বেঁধে যায়। পদ নিয়ে প্যানেল মেয়রের দুই সদস্যের লড়াই হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। গত ২০শে জানুয়ারি বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের একটি দ্বৈত বেঞ্চ প্যানেল মেয়রের দ্বিতীয় সদস্য কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরীর এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। ওই বেঞ্চের ১৯শে ফেব্রুয়ারির কার্যতালিকায় রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
এসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা সত্ত্বেও ‘তদবিরে’র জোরেই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সব ক্ষমতা মুঠোবন্দি করেছেন। আর এজন্যই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকও হতে দেননি তিনি। অনেকের মতে, তিনি চাইলেই মেয়র প্রশ্নে এতটা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তবে এসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব বিভিন্ন সময়ে মানবজমিনকে বলেছিলেন, এমন পরিস্থিতিতে তার আসলে কিছুই করার ছিল না। যতদূর পেরেছেন চেষ্টা করেছেন। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য নিভৃতে ঠিকই হেঁটেছেন তিনি। তিনজন আইনজীবীর শরণাপণ্ন হন আইনে তার ক্ষমতা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা জানতে। আইনজীবীদের পরামর্শে আশ্বস্ত হওয়ার মতো কোন কিছু না পেলেও ক্ষমতা ঠিকই পেয়েছেন।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতাপ্রাপ্তিতে অসন্তুষ্ট হলেও কাকে দুষবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কাউন্সিলররা। কেননা জল তারাই ঘোলা করেছিলেন। মেয়র প্যানেলের দুই সদস্যের পক্ষ হয়ে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিলেন তারা। দু’পক্ষই চেয়েছিলেন মেয়রের চেয়ার। গত ১১ই জানুয়ারি মেয়র প্যানেলের প্রথম সদস্য কাউন্সিল রেজাউল হাসান কয়েস লোদী মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বলে যখন চেয়ারে বসতে গিয়েছিলেন, নিজের অনুসারীদের নিয়ে তাকে রুখে দিয়েছিলেন প্যানেলের দ্বিতীয় সদস্য কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরী। যার হাতে ছিল কারান্তরীণ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর এক ‘ক্ষমতার্পণ পত্র’।
মুখে না বললেও দীর্ঘশ্বাস ঠিকই ফেলছেন কাউন্সিলররা। বিশেষ করে মেয়র প্যানেলে প্রথম দুই সদস্য। তবে বিএনপি রাজনীতির অনুসারী হওয়ায় একটু বেকায়দায় আছেন তারা। রাজনৈতিক এ অস্থিরতার এ সময়ে উঁচু সুর তুলতে পারছেন না। ‘কিল খেয়ে কিল হজম’ করছেন। তবে মেয়রের চেয়ারে বসতে না পারলেও উভয় পক্ষের একটিই সান্ত্বনা ‘প্রতিদ্বন্দ্বীও তো সে চেয়ারে বসতে পারেননি’। তবে চুপ থাকতে চাইছেন না তাদের অনুসারীদের অনেকেই। তারা একে ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ হিসেবে নিয়েছেন। চাইছেন একটা বিহিত করতে। আইনজীবীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন, আইনি সুযোগ খুঁজছেন। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৬২ ধারার ৪নং উপধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘করপোরেশনের বিশেষ সভায় উপস্থিত কাউন্সিলরদের মোট সংখ্যার তিন-পঞ্চমাংশের ভোটে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব গৃহীত হইলে সরকার তাহাকে তাহার পদ হইতে প্রত্যাহার করিবে।’ ‘প্রেস্টিজ’ রক্ষায় একটি বিশেষ সভার চিন্তা করছেন তাই কাউন্সিলরদের কেউ কেউ। সভায় সে ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটালে এসএসসিই হয়তো ছেড়ে যেতে হতে পারে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
No comments