শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংস করবেন না by ওয়ালিদ বিন বকুল
২০
দলের ডাকা হরতাল-অবরোধের কারণে বারবার যেমন পিছিয়ে যাচ্ছে মাধ্যমিক ও
সমমানের পরীক্ষা, একই সঙ্গে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা
কার্যক্রম। সবাই প্রত্যাশা করেছিল, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে অন্তত
পরীক্ষার সময় হয়তো অবরোধ তুলে নেবে বিএনপি ও তাদের জোট। কিন্তু সে আশায়
গুড়ে বালি দিয়ে অবরোধের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে টানা হরতালের মতো কর্মসূচি।
যে কারণে অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক নিয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে ১৫ লাখ শিক্ষার্থীকে,
দুশ্চিন্তায় ভুগতে হচ্ছে তাদের অভিভাবকদের। এসএসসি পাবলিক পরীক্ষা বলে
এর দিকে সবার নজর থাকে। কিন্তু একই সঙ্গে বর্তমান সংকট উচ্চশিক্ষায় কতটা
প্রভাব ফেলছে তা বলার অবকাশ রাখে না। এসএসসি যেমন ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর
জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পর্যায়ে যে
লাখ লাখ শিক্ষার্থীসহ গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি হচ্ছে তা রাজনৈতিক
দলগুলোর বিবেচনায় নেওয়া দরকার। সমকালের ৫ ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর দুশ্চিন্তার কথা এসেছে, যেখানে ২০ দলের
লাগাতার অবরোধ-হরতালে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের সরকারি-বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম। হাতেগোনা দু'একটি বাদে বেশিরভাগ
বিশ্ববিদ্যালয়েই কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না। পিছিয়ে যাচ্ছে একের পর এক
পরীক্ষা; তৈরি হচ্ছে সেশনজট। ফলে প্রায় ৩০ লাখ ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবন আরও
দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
এভাবে শিক্ষার্থীদের এবং সর্বোপরি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার যে ক্ষতি হচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু এসব নিয়ে যেন মাথাব্যথা নেই রাজনীতিবিদদের। তারা ব্যস্ত তাদের হিসাব-নিকাশ মেলানো নিয়ে। এক পক্ষ হরতাল দিয়ে ভাবছে, সরকারকে বিপাকে ফেলতে পারছে। অপরপক্ষ ভাবছে বিরোধী পক্ষ পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে বড় ভুল করেছে। এই ইস্যু নিয়ে জনগণকে ক্ষেপিয়ে দিতে পারলে ক্ষমতার আসন পাকাপোক্ত হবে নিশ্চিত। কিন্তু তাদের এই ইঁদুর-বিড়াল, দাবার ঘুঁটি চালাচালির খেলায় শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মতো শিক্ষার্থীরাই।
সরকার হরতাল-অবরোধের মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না চালিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ কিছুটা দূর করতে পারলেও কাটাতে পারেনি তাদের অনিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর দায়িত্ব এখন মূলত বিএনপি ও তাদের জোটের ওপরই বর্তায়। বিএনপি জোটকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে, ভাবতে হবে বিকল্প কর্মসূচির। অন্ততপক্ষে পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রমকে হরতাল-অবরোধের বাইরে রাখতে হবে নতুবা এসব কর্মসূচি তাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে বরং জনগণ থেকে আরও দূরে ঠেলে দেবে।
সরকারি জোট এবং বিএনপি জোট উভয়কেই মনে রাখতে হবে, তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও তাদের। তাই প্রত্যাশা করছি, জনগণের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট শিগগিরই দেশে নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দেবে, যাতে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি না হয়। শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে ফেলে আপনারা কী অর্জন করবেন!
শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ
এভাবে শিক্ষার্থীদের এবং সর্বোপরি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার যে ক্ষতি হচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু এসব নিয়ে যেন মাথাব্যথা নেই রাজনীতিবিদদের। তারা ব্যস্ত তাদের হিসাব-নিকাশ মেলানো নিয়ে। এক পক্ষ হরতাল দিয়ে ভাবছে, সরকারকে বিপাকে ফেলতে পারছে। অপরপক্ষ ভাবছে বিরোধী পক্ষ পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে বড় ভুল করেছে। এই ইস্যু নিয়ে জনগণকে ক্ষেপিয়ে দিতে পারলে ক্ষমতার আসন পাকাপোক্ত হবে নিশ্চিত। কিন্তু তাদের এই ইঁদুর-বিড়াল, দাবার ঘুঁটি চালাচালির খেলায় শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মতো শিক্ষার্থীরাই।
সরকার হরতাল-অবরোধের মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না চালিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ কিছুটা দূর করতে পারলেও কাটাতে পারেনি তাদের অনিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর দায়িত্ব এখন মূলত বিএনপি ও তাদের জোটের ওপরই বর্তায়। বিএনপি জোটকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে, ভাবতে হবে বিকল্প কর্মসূচির। অন্ততপক্ষে পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রমকে হরতাল-অবরোধের বাইরে রাখতে হবে নতুবা এসব কর্মসূচি তাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে বরং জনগণ থেকে আরও দূরে ঠেলে দেবে।
সরকারি জোট এবং বিএনপি জোট উভয়কেই মনে রাখতে হবে, তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও তাদের। তাই প্রত্যাশা করছি, জনগণের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট শিগগিরই দেশে নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দেবে, যাতে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি না হয়। শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে ফেলে আপনারা কী অর্জন করবেন!
শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ
No comments