যখনই দেশ এগিয়ে যায়, তখনই কালো মেঘ এসে জমা হয় -প্রধানমন্ত্রী
পর্দা
উঠলো অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫-এর। মাসব্যাপী যাত্রা শুরু হলো বাঙালির
অন্যতম প্রাণের উৎসবের। গতকাল আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বাংলা একাডেমিতে দ্বিতীয়বারের
মতো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি গ্রন্থমেলা ও
সাহিত্য সম্মেলন সবার জন্য জ্ঞানের নতুন দুয়ার খুলে দেবে বলে উল্লেখ করেন।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই দেশে একটু শান্তি আসে,
উন্নতির দিকে যেতে থাকে, তখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কালো মেঘ এসে জমা হয়।
বইমেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাহিত্য আমাদের জীবনের সৌন্দর্যকে দৃশ্যমান
করে। বই শুধু জ্ঞানই দেয় না, সঙ্গে জীবন গড়া, অন্যকে জানা এবং ভৌগোলিকতার
বাইরের জগৎকে জানার সুযোগ করে দেয়। বিশ্ব দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। প্রতিনিয়তই
পরিবর্তন আসছে সর্বক্ষেত্রে। বাংলা ভাষার লেখকদের পরিবর্তিত বিশ্ব
প্রেক্ষাপটে আরও গণমুখী সাহিত্যকর্ম উপহার দেয়ার পাশাপাশি দেশের ক্ষুদ্র
জাতি সমূহের ভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন,
ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল মাতৃভাষা রক্ষার জন্য। রক্ত দিয়ে আমরা সে অধিকার
রক্ষা করেছি। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই বাষট্টির আন্দোলন, ঊনসত্তরের
গণ-অভ্যুত্থান এবং সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি
মিলিত হয় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে। অমর একুশেই আমাদের মুক্তি সংগ্রামের
প্রথম বিজয়গাঁথা। এসব আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশের
নাগরিক। সাহিত্য-সংস্কৃতির উন্নয়নে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি সংস্কৃতিক্ষেত্রে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি নানা
পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। দেশের প্রকাশনাকে উৎসাহ দিতে একটি ‘জাতীয়
গ্রন্থনীতি’ প্রণয়নের কাজ চলছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে
ই-বুক প্রচলনের ব্যবস্থা করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির ধারায় বাংলাভাষাকে
গতিশীলভাবে যুক্ত করতে অভিন্ন ও সহজসাধ্য বাংলা ফন্ট প্রণয়নের প্রক্রিয়া
চলমান আছে।
বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। একাডেমির সভাপতি প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের সভাপাতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিদেশী অতিথিদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ভারতের ভাষাবিদ, লেখক পবিত্র সরকার, বেলজিয়ামের গবেষক, লেখক ফাদার দ্যতিয়েন, ফ্রান্সের বাংলা সাহিত্যের গবেষক ও শিক্ষক প্রফেসর ফ্রাঁন্স ভট্টাচার্য এবং জার্মানির বাংলা সাহিত্যের আরেক গবেষক প্রফেসর ড. হান্সহার্ডার। তারা সবাই বাংলায় বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিত কুমার বিশ্বাস এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানও বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, যখনই দেশে একটু শান্তি আসে, উন্নতির দিকে যেতে থাকে, তখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কালো মেঘ এসে জমা হয়। আজ মানুষকে পেট্রল বোমায় পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। বার্ন ইউনিটে মানুষের আহাজারি থামছে না। তাদের আর্তনাদে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠছে। কিন্তু সন্তানহারা মায়ের কান্না বিএনপি নেত্রীকে স্পর্শ করছে না। সাধারণ দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ কেউই রক্ষা পাচ্ছে না তাদের সহিংসতা থেকে। কি অপরাধ তাদের? কেন পুড়িয়ে মারতে হবে? বিএনপি যা করছে, এটা রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, জঙ্গিবাদ। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যা করা প্রয়োজন সরকার তাই করবে। সব অপশক্তি মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে যে নাশকতা করেছিল এখন তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। আমরা নির্বাচিত হয়ে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলাম। তখনই আন্দোলনের নামে আসে বাধা। এভাবে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার যখন খুলে তখনই আঘাত আসে। তিনি বলেন, শিশুরা যখন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অংশ নেবে তখন বিএনপি হরতাল দিয়ে বসে। শিশুমনে হতাশা এনে তাদের পড়াশোনার পথ রুদ্ধ করতে চায় তারা। হরতালের কারণে পরীক্ষার সময়সূচি পাল্টাতে হয়েছে। আমরা শিশুদের বিপদের মুখে ফেলতে চাই না। বিএনপির হিতাহিত জ্ঞান থাকলে তারা এরকম কর্মসূচি দিত না। তিনি বিএনপি নেত্রীর প্রতি হরতাল-অবরোধের নামে আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। নতুবা এদেশের মানুষের রুদ্ররোষে একদিন আপনাকে পড়তে হবে। তিনি সাধারণ মানুষের উপর আগুন-সন্ত্রাস চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির বিরুদ্ধে লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীসহ দেশের সব মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সবার মতো মেলা ঘুরে দেখতে না পাওয়ায় দুঃখ করেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের কারণে মেলায় এসে সবার মতো ঘুরে বই দেখা ও কেনায় তার স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে বলেন, সবাইকে দেখি তারা মেলায় এসে কি সুন্দর ঘুরছেন। বই দেখছেন। আনন্দ করছেন। আমি পারি না। তাদের জন্য আমার হিংসা হয়। আমিও চাই তাদের মতো মেলায় আসতে, বই দেখতে।
বেলজিয়ামের গবেষক লেখক ফাদার দ্যতিয়েন বলেন, বাংলাদেশ আমাকে অভিভূত করেছে। এখানকার মানুষ বড় সহজ সরল। অতিথিপরায়ণ। তাদের রসবোধ আমাকে আরও আপ্লুত করেছে। এদেশের সাহিত্যেও আমি মুগ্ধ। ফ্রান্সের প্রফেসর ফ্রাঁন্স ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষার জন্য সংগ্রাম মানবজাতির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। বিশ্ব এ দুটিকেই যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিয়েছে। বাংলা ভাষা সত্যিকার অর্থেই সুন্দর। বিশ্বে যারা বাংলাভাষাভাষী নয় তারাও আজ বাংলা শিখছে। ফ্রান্সেও গবেষণা হচ্ছে বাংলা নিয়ে। পড়ানো হচ্ছে সেখানকার নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রফেসর ড. হান্সহার্ডার বলেন, একুশে গ্রন্থমেলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইয়ের মেলা। এখানে শুধু বাণিজ্য মুখ্য নয়, সাহিত্যকেও মূল্যায়ন করা হয়। যা অন্য দেশে দেখা যায় না। তিনি বলেন মাতৃভাষাকে যত্ন করতে হবে। তাকে অবহেলা না করে বিশ্বের দরজায় নিয়ে যাওয়া আমাদের কাজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫ প্রাপ্ত লেখকের হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও এক লাখ টাকা তুলে দেন। এ সময় সিলেটের শিশুশিল্পী সিরতাদুল মুরতাহা লামিয়া কবিতা আবৃত্তি করে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বেসামরিক ও সামরিক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কবি-লেখক-গবেষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, প্রকাশকসহ রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর মেলায় মোট ৩৫১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। দুই অংশে বিভক্ত মেলা প্রাঙ্গণে মোট ৫৬৫টি ইউনিট ও ১১টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ২৯৫টি বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ৪৭৫ ইউনিট স্টল রয়েছে। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে প্যাভিলিয়নের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান মূল একাডেমি অঙ্গনে স্টল করেছে।
আজকের অনুষ্ঠান: আজ গ্রন্থমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। সাহিত্য সম্মেলন সকাল ১০টায় শুরু হবে। প্রথম অধিবেশনে ধারণাপত্র উপস্থাপন করবেন সৈয়দ শামসুল হক। আলোচক থাকবেন হাসান আজিজুল হক, রাহাত খান, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত এবং নবনীতা দেব সেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এবং তৃতীয় অধিবেশনে আলোচনা করবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৈয়দ শামসুল হক এবং সেলিনা হোসেন। চতুর্থ অধিবেশনে আলোচনা করবেন পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, ইমদাদুল হক মিলন, নবনীতা দেব সেন, মঈনুল আহসান সাবের, নাসরীন জাহান, আনিসুল হক, জাকির তালুকদার, ইমানুল হক। পঞ্চম অধিবেশনে ইংরেজি পর্বে আলোচক থাকবেন মনজু ইসলাম এবং কাজী আনিস আহমেদ, নিয়াজ জামান।
বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। একাডেমির সভাপতি প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের সভাপাতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিদেশী অতিথিদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ভারতের ভাষাবিদ, লেখক পবিত্র সরকার, বেলজিয়ামের গবেষক, লেখক ফাদার দ্যতিয়েন, ফ্রান্সের বাংলা সাহিত্যের গবেষক ও শিক্ষক প্রফেসর ফ্রাঁন্স ভট্টাচার্য এবং জার্মানির বাংলা সাহিত্যের আরেক গবেষক প্রফেসর ড. হান্সহার্ডার। তারা সবাই বাংলায় বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. রণজিত কুমার বিশ্বাস এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানও বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, যখনই দেশে একটু শান্তি আসে, উন্নতির দিকে যেতে থাকে, তখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়। কালো মেঘ এসে জমা হয়। আজ মানুষকে পেট্রল বোমায় পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। বার্ন ইউনিটে মানুষের আহাজারি থামছে না। তাদের আর্তনাদে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠছে। কিন্তু সন্তানহারা মায়ের কান্না বিএনপি নেত্রীকে স্পর্শ করছে না। সাধারণ দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ কেউই রক্ষা পাচ্ছে না তাদের সহিংসতা থেকে। কি অপরাধ তাদের? কেন পুড়িয়ে মারতে হবে? বিএনপি যা করছে, এটা রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, জঙ্গিবাদ। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যা করা প্রয়োজন সরকার তাই করবে। সব অপশক্তি মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে যে নাশকতা করেছিল এখন তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। আমরা নির্বাচিত হয়ে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলাম। তখনই আন্দোলনের নামে আসে বাধা। এভাবে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার যখন খুলে তখনই আঘাত আসে। তিনি বলেন, শিশুরা যখন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অংশ নেবে তখন বিএনপি হরতাল দিয়ে বসে। শিশুমনে হতাশা এনে তাদের পড়াশোনার পথ রুদ্ধ করতে চায় তারা। হরতালের কারণে পরীক্ষার সময়সূচি পাল্টাতে হয়েছে। আমরা শিশুদের বিপদের মুখে ফেলতে চাই না। বিএনপির হিতাহিত জ্ঞান থাকলে তারা এরকম কর্মসূচি দিত না। তিনি বিএনপি নেত্রীর প্রতি হরতাল-অবরোধের নামে আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। নতুবা এদেশের মানুষের রুদ্ররোষে একদিন আপনাকে পড়তে হবে। তিনি সাধারণ মানুষের উপর আগুন-সন্ত্রাস চালিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির বিরুদ্ধে লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীসহ দেশের সব মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সবার মতো মেলা ঘুরে দেখতে না পাওয়ায় দুঃখ করেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের কারণে মেলায় এসে সবার মতো ঘুরে বই দেখা ও কেনায় তার স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে বলেন, সবাইকে দেখি তারা মেলায় এসে কি সুন্দর ঘুরছেন। বই দেখছেন। আনন্দ করছেন। আমি পারি না। তাদের জন্য আমার হিংসা হয়। আমিও চাই তাদের মতো মেলায় আসতে, বই দেখতে।
বেলজিয়ামের গবেষক লেখক ফাদার দ্যতিয়েন বলেন, বাংলাদেশ আমাকে অভিভূত করেছে। এখানকার মানুষ বড় সহজ সরল। অতিথিপরায়ণ। তাদের রসবোধ আমাকে আরও আপ্লুত করেছে। এদেশের সাহিত্যেও আমি মুগ্ধ। ফ্রান্সের প্রফেসর ফ্রাঁন্স ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষার জন্য সংগ্রাম মানবজাতির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। বিশ্ব এ দুটিকেই যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিয়েছে। বাংলা ভাষা সত্যিকার অর্থেই সুন্দর। বিশ্বে যারা বাংলাভাষাভাষী নয় তারাও আজ বাংলা শিখছে। ফ্রান্সেও গবেষণা হচ্ছে বাংলা নিয়ে। পড়ানো হচ্ছে সেখানকার নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রফেসর ড. হান্সহার্ডার বলেন, একুশে গ্রন্থমেলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইয়ের মেলা। এখানে শুধু বাণিজ্য মুখ্য নয়, সাহিত্যকেও মূল্যায়ন করা হয়। যা অন্য দেশে দেখা যায় না। তিনি বলেন মাতৃভাষাকে যত্ন করতে হবে। তাকে অবহেলা না করে বিশ্বের দরজায় নিয়ে যাওয়া আমাদের কাজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫ প্রাপ্ত লেখকের হাতে পুরস্কারের ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র ও এক লাখ টাকা তুলে দেন। এ সময় সিলেটের শিশুশিল্পী সিরতাদুল মুরতাহা লামিয়া কবিতা আবৃত্তি করে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বেসামরিক ও সামরিক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কবি-লেখক-গবেষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, প্রকাশকসহ রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর মেলায় মোট ৩৫১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। দুই অংশে বিভক্ত মেলা প্রাঙ্গণে মোট ৫৬৫টি ইউনিট ও ১১টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ২৯৫টি বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ৪৭৫ ইউনিট স্টল রয়েছে। ১০টি প্রতিষ্ঠানকে প্যাভিলিয়নের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান মূল একাডেমি অঙ্গনে স্টল করেছে।
আজকের অনুষ্ঠান: আজ গ্রন্থমেলা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। সাহিত্য সম্মেলন সকাল ১০টায় শুরু হবে। প্রথম অধিবেশনে ধারণাপত্র উপস্থাপন করবেন সৈয়দ শামসুল হক। আলোচক থাকবেন হাসান আজিজুল হক, রাহাত খান, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত এবং নবনীতা দেব সেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এবং তৃতীয় অধিবেশনে আলোচনা করবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৈয়দ শামসুল হক এবং সেলিনা হোসেন। চতুর্থ অধিবেশনে আলোচনা করবেন পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, ইমদাদুল হক মিলন, নবনীতা দেব সেন, মঈনুল আহসান সাবের, নাসরীন জাহান, আনিসুল হক, জাকির তালুকদার, ইমানুল হক। পঞ্চম অধিবেশনে ইংরেজি পর্বে আলোচক থাকবেন মনজু ইসলাম এবং কাজী আনিস আহমেদ, নিয়াজ জামান।
No comments