দৃষ্টিহীনদের পর্বতারোহণ
বরফ আচ্ছাদিত দুর্গম পাহাড়ে নির্বিঘ্নে উঠে যাচ্ছে দৃষ্টিহীনরা। চক্ষুষ্মানদের কাছেও যা কল্পনাতীত, তাই করে দেখাচ্ছে কলকাতার এসব স্কুল শিক্ষার্থী। পর্বতারোহণে অভ্যস্ত করাতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয় ভারতের ভয়েস অব দ্য ওয়ার্ল্ড স্কুলটি। স্কুলটির অধ্যক্ষ সুকুমার চক্রবর্তী যিনি নিজেও দৃষ্টিহীন। তিনি বলেন, অনেক দুর্গম পাহাড়ে চড়েছে তার স্কুলের ছেলে-মেয়েরা। যার মধ্যে রয়েছে ২০ হাজার ফুট উচ্চতার ইউনাম শিখরও। সেটাই ছিল ভারতে প্রথম দৃষ্টিহীনদের শিখরে চড়ার অভিযান। দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ চলে সল্টলেক স্টেডিয়ামের কৃত্রিম পাহাড়ে। কখনোবা পুরুলিয়াতে কখনও আবার দার্জিলিংয়ের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে। এবারের অভিযাত্রী দলে রয়েছেন জয়ন্ত সিং সর্দার।
দৃষ্টিহীন এ ছেলেটি এবারই প্রথম পর্বতারোহী হিসেবে। শিক্ষকরা আগেই বলে দিয়েছেন, কী কী জিনিস সঙ্গে রাখতে হবে। সেসব গোছানোর মধ্যে একটু ভয়ও রয়েছে জয়ন্ত সিংয়ের। ওই স্কুলের সাবেক ছাত্র সোমনাথ পানি বলে, ‘আমাদের সঙ্গে একজন এসকর্ট বা পথপ্রদর্শক থাকেন। তিনি সব সময় বলতে থাকেন কোথায় উঁচু, কোথায় নিচু, কোথায় চড়াই বা কোথায় পা পড়লে বিপদ হতে পারে। তার কথা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে হয় আমাদের।’ পথপ্রদর্শকদের চোখ দিয়ে কীভাবে নতুন জায়গাগুলো চেনে- এ প্রশ্নের জবাবে আরেক ছাত্র বিল্বমঙ্গল সর্দার বলে, ‘পাহাড়ে চড়ার সময় পাথরে হাত দিয়ে চিনে নিই আমরা। নদী বা ঝরনার পানির শব্দ তো শুনেই নিতে পারি। সুযোগ থাকলে গাছের গায়ে বা পাতাতেও হাত দিয়ে চিনিয়ে দেন এসকর্টরা আর কোনো অচেনা পাখি ডেকে উঠলে তারাই বলে দেন ওটা কি পাখি।’ বিবিসি।
No comments