হিসাব-নিকাশ কষছে সরকার by জাকির হোসেন লিটন
বিএনপি
চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা-না-করা
নিয়ে ব্যাপক হিসাব-নিকাশ কষছে সরকার। গ্রেফতার করা হলে বিএনপি নেতাকর্মীসহ
সাধারণ জনগণের মধ্যে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেই ব্যাপারে আগাম
ধারণা নেয়া হচ্ছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে
আন্দোলনের গতি কোন দিকে মোড় নিতে পারে, দেশ-বিদেশে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া
হতে পারে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার প্রস্তুত কি না তা
ব্যাপকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। অবরোধকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে
বারবার খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কথা বলে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও সরকারের
বিভিন্ন সিনিয়র নেতা-মন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানাও
জারি করেছেন আদালত। তবে আদালতের নির্দেশ এখনো থানায় পৌঁছেনি এই অজুহাত
দেখিয়ে তাকে গ্রেফতারের উদ্যোগ থেকে বিরত রয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে আসলে
আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকেরা সার্বিক পরিস্থিতি কঠোরভাবে
পর্যবেক্ষণ করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দল ও সরকারের মধ্যে থাকা বাম, ‘হাইব্রিড’ ও কট্টরপন্থী বলে পরিচিত কিছু নেতা ও মন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের পক্ষে রয়েছেন। তাদের মতে, বিএনপি জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলন ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় খালেদাকে গ্রেফতার করা হলে তাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত কবর রচনা হয়ে যাবে। এতে সরকারও নিশ্চিন্তেই নির্দিষ্ট মেয়াদ পার করতে পারবে।
অন্য দিকে মূলধারার এবং মধ্যপন্থী নেতারা মনে করছেন, সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারবিরোধী জোটের শীর্ষ নেত্রীকে গ্রেফতার করার বিষয়টি এত সহজভাবে নেয়া ঠিক হবে না। স্বাধীনতার পর একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এভাবে গ্রেফতারের নজিরও নেই। তাকে গ্রেফতার করা হলে সারা দেশে যে বিস্ফোরণ ঘটবে তা সামাল দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। আর র্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে সাময়িকভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে আর সম্ভব হবে না। এতে সরকারের পক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে মেয়াদ পার করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও খুব সজাগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সাথে সাথেই জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বান কি মুন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব। তাই খালেদাকে গ্রেফতার করা ঠিক হবে না।
সূত্র মতে, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হবে কি না তা নিয়ে গতকাল শনিবার পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। মূলত সে কারণেই গ্রেফতারের েেত্র ধীরগতি অনুসরণ করা হচ্ছে। অন্য দিকে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হতে চান এমন একটি ধারণাও রয়েছে আওয়ামী লীগের ভেতরে। সেটিও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। তবে মামলার শুনানির দিন অনুপস্থিতির কারণে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা সরকারকে অনেকখানি আশ্বস্ত করে তুলেছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং গ্রেফতার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সিনিয়র একাধিক নেতার সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। আলাপকালে তারা জানান, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে চলমান পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যেতে পারে, চলমান আন্দোলনের গতি বাড়বে কি না এবং বাড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। আবার গ্রেফতার করে বেগম জিয়াকে কি সরকার সসম্মানে বেরিয়ে আসার পথ তৈরি করে দিচ্ছে কি না সেটাও ভাবছেন নীতিনির্ধারকেরা।
কারণ, সরকারের ভেতরে ধারণা রয়েছে, হরতাল-অবরোধে সৃষ্ট চলমান পরিস্থিতি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে চাইলেও রাজনৈতিক পরাজয়ের আশঙ্কায় বেরিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। সে জন্য খালেদা জিয়া কারাবরণ করে এ পরিস্থিতির অবসান চান। তাই তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়ার েেত্র সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সরকার।
দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের ব্যাপারে সরকার একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় বারবার সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। সর্বশেষ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা কাজে লাগিয়ে তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ মহ্সাচিবের উদ্বেগ প্রকাশসহ নানা দিক চিন্তা করে আর গ্রেফতার করা হয়নি। তবে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে অনেকটাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ গত ৬ ফেব্রুয়ারি কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদাকে দুই কম্বলে থাকতেই হবে।’ তাই প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাব অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে।
এ দিকে সরকারের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার গ্রেফতার নিয়ে সরকার রাজনৈতিকভাবে দায় নিতে চাচ্ছে না। এ কাজে আদালতকেই ব্যবহার করতে চান নীতিনির্ধারকেরা। সে জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও এখনই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সরকার মূলত ৪ মার্চকে সামনে রেখে এগোচ্ছে। ওই দিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান ‘দুর্নীতি’ মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। খালেদা জিয়া যদি ৪ তারিখের মধ্যে আগাম জামিনের জন্য সশরীরে উচ্চ আদালতে উপস্থিত না হন তবে ওই দিন তাকে গুলশান অফিস থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। আর আদালত জামিন দিলে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। অন্য দিকে জামিন না হলে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হতে পারে। ওই কারাগারে ইতোমধ্যেই মহিলা ভিআইপির সেল ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। তবে কাশিমপুর কারাগারে না নিয়ে খালেদা জিয়াকে নিজ বাসায় গৃহবন্দী করে রাখা হতে পারে বলেও জানা গেছে।
তবে অন্য একটি সূত্র জানায়, বিএনপি জোটের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের গতি কমাতে ইতোমধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ শীর্ষ অনেক নেতাকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বিরোধী জোটের অনেক নেতাকর্মী। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই আবার গা ঢাকা দিয়ে আছেন। রাজনৈতিক কার্যালয়ে এখনো ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে আছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবুও থামছে না আন্দোলন। দেশব্যাপী ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেও একের পর এক প্রাণহানি, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর ও বোমাবাজিসহ সহিংস ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। বিদেশী দূতাবাস, সরকারের মন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও আদালতপাড়া, ম্যাজিট্রেটের গাড়িসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যেতে পারে তা নিয়ে সরকারে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনই ব্যবস্থা নেবে। এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার এখন আর সরকার বা দলের চাওয়া-না-চাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এটি আদালতের এখতিয়ার।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দল ও সরকারের মধ্যে থাকা বাম, ‘হাইব্রিড’ ও কট্টরপন্থী বলে পরিচিত কিছু নেতা ও মন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের পক্ষে রয়েছেন। তাদের মতে, বিএনপি জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলন ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় খালেদাকে গ্রেফতার করা হলে তাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত কবর রচনা হয়ে যাবে। এতে সরকারও নিশ্চিন্তেই নির্দিষ্ট মেয়াদ পার করতে পারবে।
অন্য দিকে মূলধারার এবং মধ্যপন্থী নেতারা মনে করছেন, সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারবিরোধী জোটের শীর্ষ নেত্রীকে গ্রেফতার করার বিষয়টি এত সহজভাবে নেয়া ঠিক হবে না। স্বাধীনতার পর একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এভাবে গ্রেফতারের নজিরও নেই। তাকে গ্রেফতার করা হলে সারা দেশে যে বিস্ফোরণ ঘটবে তা সামাল দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। আর র্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে সাময়িকভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে আর সম্ভব হবে না। এতে সরকারের পক্ষে নিরবচ্ছিন্নভাবে মেয়াদ পার করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও খুব সজাগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সাথে সাথেই জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বান কি মুন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব। তাই খালেদাকে গ্রেফতার করা ঠিক হবে না।
সূত্র মতে, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হবে কি না তা নিয়ে গতকাল শনিবার পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। মূলত সে কারণেই গ্রেফতারের েেত্র ধীরগতি অনুসরণ করা হচ্ছে। অন্য দিকে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হতে চান এমন একটি ধারণাও রয়েছে আওয়ামী লীগের ভেতরে। সেটিও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। তবে মামলার শুনানির দিন অনুপস্থিতির কারণে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা সরকারকে অনেকখানি আশ্বস্ত করে তুলেছে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং গ্রেফতার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সিনিয়র একাধিক নেতার সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। আলাপকালে তারা জানান, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে চলমান পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে যেতে পারে, চলমান আন্দোলনের গতি বাড়বে কি না এবং বাড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। আবার গ্রেফতার করে বেগম জিয়াকে কি সরকার সসম্মানে বেরিয়ে আসার পথ তৈরি করে দিচ্ছে কি না সেটাও ভাবছেন নীতিনির্ধারকেরা।
কারণ, সরকারের ভেতরে ধারণা রয়েছে, হরতাল-অবরোধে সৃষ্ট চলমান পরিস্থিতি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে চাইলেও রাজনৈতিক পরাজয়ের আশঙ্কায় বেরিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। সে জন্য খালেদা জিয়া কারাবরণ করে এ পরিস্থিতির অবসান চান। তাই তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়ার েেত্র সতর্ক অবস্থান নিয়েছে সরকার।
দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের ব্যাপারে সরকার একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় বারবার সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। সর্বশেষ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা কাজে লাগিয়ে তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু জাতিসঙ্ঘ মহ্সাচিবের উদ্বেগ প্রকাশসহ নানা দিক চিন্তা করে আর গ্রেফতার করা হয়নি। তবে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে অনেকটাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ গত ৬ ফেব্রুয়ারি কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদাকে দুই কম্বলে থাকতেই হবে।’ তাই প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাব অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে।
এ দিকে সরকারের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার গ্রেফতার নিয়ে সরকার রাজনৈতিকভাবে দায় নিতে চাচ্ছে না। এ কাজে আদালতকেই ব্যবহার করতে চান নীতিনির্ধারকেরা। সে জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও এখনই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সরকার মূলত ৪ মার্চকে সামনে রেখে এগোচ্ছে। ওই দিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান ‘দুর্নীতি’ মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। খালেদা জিয়া যদি ৪ তারিখের মধ্যে আগাম জামিনের জন্য সশরীরে উচ্চ আদালতে উপস্থিত না হন তবে ওই দিন তাকে গুলশান অফিস থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। আর আদালত জামিন দিলে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। অন্য দিকে জামিন না হলে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হতে পারে। ওই কারাগারে ইতোমধ্যেই মহিলা ভিআইপির সেল ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। তবে কাশিমপুর কারাগারে না নিয়ে খালেদা জিয়াকে নিজ বাসায় গৃহবন্দী করে রাখা হতে পারে বলেও জানা গেছে।
তবে অন্য একটি সূত্র জানায়, বিএনপি জোটের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের গতি কমাতে ইতোমধ্যেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ শীর্ষ অনেক নেতাকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন বিরোধী জোটের অনেক নেতাকর্মী। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই আবার গা ঢাকা দিয়ে আছেন। রাজনৈতিক কার্যালয়ে এখনো ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে আছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবুও থামছে না আন্দোলন। দেশব্যাপী ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেও একের পর এক প্রাণহানি, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর ও বোমাবাজিসহ সহিংস ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। বিদেশী দূতাবাস, সরকারের মন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও আদালতপাড়া, ম্যাজিট্রেটের গাড়িসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যেতে পারে তা নিয়ে সরকারে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনই ব্যবস্থা নেবে। এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার এখন আর সরকার বা দলের চাওয়া-না-চাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এটি আদালতের এখতিয়ার।
No comments