অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন
লন্ডনভিত্তিক
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মঙ্গলবার তাদের ২০১৪-১৫
সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে যা বলা
হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। বলা হয়েছে, এখানে দায়মুক্তির সুযোগে নির্যাতন
চালাচ্ছে পুলিশ ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনী। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের ৬টি আলাদা ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে। এগুলো হল-
যথাক্রমে জোরপূর্বক গুম, মত প্রকাশের স্বাধীনতাহীনতা, নারীর ওপর নির্যাতন,
অত্যাচার ও অন্যান্য নির্যাতন, শ্রমিকের অধিকারহীনতা ও মৃত্যুদণ্ড।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আনুমানিক ৮০
ব্যক্তি গুম হয়েছেন, এদের মধ্যে ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৬ জন
তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মানবাধিকারসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা শুধু বিশ্বাসযোগ্যই নয়, আমাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। এমনও দেখা যাচ্ছে, শরীরে গুলি অথচ বলা হয়েছে গণপিটুনিতে মারা গেছে। সত্য কথা, সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রলবোমায় যখন একের পর এক মানুষ দগ্ধ হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন; তখন আইনশৃংখলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নিতে হয়েছে। কিন্তু এই কঠোর অবস্থানের কারণে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পেট্রলবোমা তথা নাশকতার ঘোর বিরোধী আমরা, এসব অপকর্মে লিপ্তদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি করি; কিন্তু তাই বলে বোমাবাজদের প্রতিহত করতে গিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা কিংবা গুম মেনে নেয়া যায় না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই কাউকে গ্রেফতার এবং নিয়মানুযায়ী তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। ২০১৪ সালে পুলিশ হেফাজতে কমপক্ষে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মানে মোটামুটি ধরে নেয়া যায়, সেসব মৃত্যু ঘটেছে নির্যাতনের ফলেই। আমাদের প্রশ্ন, কেন এই নির্যাতন? দেশে আইন আছে, আছে আদালত-বিচারক; অন্যায় বা অপরাধের শাস্তি বিধান তারাই করবে। পুলিশ কেন নিজেরা মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়ে কার্যকর করবে সেই রায়?
আমরা সত্যি সত্যি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশ ক্রমান্বয়ে জাতির জন্য এক শ্বাপদসংকুল ভূখণ্ডে পরিণত হতে চলেছে। এখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি সহিংস হয়ে উঠছে, ওদিকে সেই সহিংসতা দমন করবে যারা, তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কথিত অপরাধীদের মৃত্যু ঘটাচ্ছে। প্রশ্ন, শুধুই ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার দ্বন্দ্বে দেশকে এ অবস্থায় নিয়ে আসা কতটা উচিত হয়েছে? গণতন্ত্রের কোনো ব্যাখ্যাই এ অবস্থার পক্ষে সাফাই হতে পারে না। সরকার ও বিরোধী পক্ষ নির্বিশেষে সবাইকেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি সাপেক্ষে নতুন চিন্তায় আলোকিত হতে হবে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমেই ক্ষুণ্ন হয়ে চলেছে। জাতিসংঘের মহাসচিবও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও জানাচ্ছে উদ্বেগ। এককথায় দেশে-বিদেশে সহিংসতা ও সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটা জনমত প্রবল হয়ে উঠছে। এই জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে বিবদমান পক্ষদ্বয়কে। তাদের মনে রাখতে হবে, স্থায়ী শান্তি পেতে হলে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মানবাধিকারসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা শুধু বিশ্বাসযোগ্যই নয়, আমাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। এমনও দেখা যাচ্ছে, শরীরে গুলি অথচ বলা হয়েছে গণপিটুনিতে মারা গেছে। সত্য কথা, সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রলবোমায় যখন একের পর এক মানুষ দগ্ধ হচ্ছেন, মারা যাচ্ছেন; তখন আইনশৃংখলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থান নিতে হয়েছে। কিন্তু এই কঠোর অবস্থানের কারণে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পেট্রলবোমা তথা নাশকতার ঘোর বিরোধী আমরা, এসব অপকর্মে লিপ্তদের প্রাপ্য শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি করি; কিন্তু তাই বলে বোমাবাজদের প্রতিহত করতে গিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা কিংবা গুম মেনে নেয়া যায় না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই কাউকে গ্রেফতার এবং নিয়মানুযায়ী তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। ২০১৪ সালে পুলিশ হেফাজতে কমপক্ষে ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মানে মোটামুটি ধরে নেয়া যায়, সেসব মৃত্যু ঘটেছে নির্যাতনের ফলেই। আমাদের প্রশ্ন, কেন এই নির্যাতন? দেশে আইন আছে, আছে আদালত-বিচারক; অন্যায় বা অপরাধের শাস্তি বিধান তারাই করবে। পুলিশ কেন নিজেরা মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়ে কার্যকর করবে সেই রায়?
আমরা সত্যি সত্যি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশ ক্রমান্বয়ে জাতির জন্য এক শ্বাপদসংকুল ভূখণ্ডে পরিণত হতে চলেছে। এখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি সহিংস হয়ে উঠছে, ওদিকে সেই সহিংসতা দমন করবে যারা, তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কথিত অপরাধীদের মৃত্যু ঘটাচ্ছে। প্রশ্ন, শুধুই ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার দ্বন্দ্বে দেশকে এ অবস্থায় নিয়ে আসা কতটা উচিত হয়েছে? গণতন্ত্রের কোনো ব্যাখ্যাই এ অবস্থার পক্ষে সাফাই হতে পারে না। সরকার ও বিরোধী পক্ষ নির্বিশেষে সবাইকেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি সাপেক্ষে নতুন চিন্তায় আলোকিত হতে হবে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমেই ক্ষুণ্ন হয়ে চলেছে। জাতিসংঘের মহাসচিবও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও জানাচ্ছে উদ্বেগ। এককথায় দেশে-বিদেশে সহিংসতা ও সরকারি নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটা জনমত প্রবল হয়ে উঠছে। এই জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে বিবদমান পক্ষদ্বয়কে। তাদের মনে রাখতে হবে, স্থায়ী শান্তি পেতে হলে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই।
No comments