‘হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন’ -তারেক রহমান by তানজির আহমেদ রাসেল
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি
বলেছেন, ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ঢাকাকে যেমন সারা বাংলাদেশ থেকে
বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল, এবার ঢাকার ভেতরেও এক এলাকা অন্য এলাকা থেকে
বিচ্ছিন্ন করে দিন। যাতে করে একটি বিশেষ অঞ্চলের কোন বাহিনী গিয়ে
আন্দোলনকারী জনগণের ওপর নির্যাতন চালাতে না পারে। হাসিনার বিদায়, গণতন্ত্র
পুনরুদ্ধার এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে জনগণকে সঙ্গে
নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। রোববার ৫ই জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা ও কালো
দিবস উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের অট্রিয়াম অডিটোরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি
আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তারেক রহমান এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই
আন্দোলন সফল করতে হবে। এ আন্দোলন থেমে গেলে দেশ, জনগণ ও আন্দোলনকারী তৃণমূল
নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই নিজে বাঁচতে, দেশ বাঁচাতে, জনগণ ও
গণতন্ত্র বাঁচাতে চলমান এই আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, জেলা, উপজেলা ও
ইউনিয়ন পর্যায়েও নিজ নিজ এলাকা বিচ্ছিন্ন করে দিন। আন্দোলন সফল না হওয়া
পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবেন না। এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে। আর থামিয়ে দেয়া
যাবে না। এ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। গতিশীল করতে হবে। লক্ষ্য একটি। শেখ
হাসিনা যেদিন বিদায় নেবে, আন্দোলনকারীরা সেদিন ঘরে ফিরবে। তারেক রহমান
বলেন, কারও কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। যখন খবর পাবেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ
করেছে, ঠিক তখনই রাজপথ ছাড়বেন। তার আগে নয়। নব্বইয়ে আপনারা স্বৈরাচারবিরোধী
আন্দোলনে সফল হয়েছিলেন, এবারও আপনারা সফল হবেন। তিনি বলেন, এই অবৈধ
সরকারের এক মন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, আন্দোলনকারীদের ঘরে ঘরে ঢুকে
হত্যা করতে হবে। আমি নেতাকর্মীদের সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এরা যদি কেউ
আপনাদের ঘরে ঢুকে আর যেন বের হতে না পারে। আমরা শেখ হাসিনার মতো ‘একটির
বদলে দশটি লাশ ফেলা’র আহ্বান জানাই না; তবে এই আন্দোলনে নিরীহ কোন মানুষের
যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের
সঙ্গে জনগণ নেই। তাদের সঙ্গে আছে বিশেষ অঞ্চলের কিছু র্যাব পুলিশ। র্যাব
পুলিশ ছাড়া এরা কিছুই করতে পারবে না। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রয়েছে দেশের
জনগণ। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও
সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় তারেক
রহমান বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, জুলুম ও নির্যাতনে বাংলাদেশের মানুষ আজ
অসহায়, বন্দী দেশের গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম
খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন,
তোমাদের মাকে যদি তোমাদের কাছে আসতে দেয়া না হয়, সন্তান হিসেবে তোমাদের
উচিত মাকে মুক্ত করা। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাকশালীদের
হাতে অবরুদ্ধ দেশ মাতৃকাকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্র মুক্ত করতে হবে।
গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক
রহমান বলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিব দুজনই দুর্নীতিবাজ। তিনি বলেন,
স্বাধীনতার পর ভারত থেকে একজন কর্মকর্তা শেখ মুজিবের কাছে এসেছিলেন। শেখ
মুজিবকে তিনি জানিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগৃহীত কিছু টাকা ভারত
সরকারের কাছে রয়েছে। এই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে ফেরত আনতে শেখ মুজিবকে
নিয়মানুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি আহ্বান জানান। কিন্তু প্রতিউত্তরে
শেখ মুজিব ব্যাংকের মাধ্যমে না এনে এসব টাকা ট্রাকে বস্তায় ভরে পাঠানোর
প্রস্তাব দেন এবং বলেন, এসব টাকা তিনি পরবর্তী নির্বাচনে খরচ করবেন। এ
তথ্য-প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, এটি প্রমাণ করে
শেখ মুজিব বাংলাদেশে প্রথম দুর্নীতিকে ভিত্তি দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবের মতো
তার কন্যাও একই পথ অনুসরণ করছেন। তারেক বলেন, শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি
প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। জনগণের চাওয়া ছিল একটি
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন। কিন্তু তারা জানে নিরপেক্ষ
নির্বাচন হলে তারা বিজয় লাভ করতে পারবে না। এ কারণে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার
জোর খাটিয়ে সংবিধান সংশোধন করে ৫ই জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন করেছিল। তারা
জানে, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বিডিআর বিদ্রোহের নামে মুখোশধারীরা
যেভাবে বাংলাদেশের গর্ব মুক্তিযুদ্ধের গর্ব সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা
করেছিল, এর বিচার হবে। তারা জানে, কুইক রেন্টালের নামে বিদেশে হাজার হাজার
কোটি টাকা পাচার করেছে, তার বিচার হবে। তারা জানে, আইটি সেক্টরে দুর্নীতির
মাধ্যমে শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় উপদেষ্টা পরিচয়ে কোটি কোটি টাকা
পাচার করেছে, তারও বিচার হবে। তারা জানে, বিএনপিসহ বিরোধী জোটের হাজার
হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এর বিচার হবে। তারা জানে, হেফাজতে ইসলামের
হাজার হাজার নেতাকর্মী খুন-হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার হবে। সাংবাদিক
সাগর-রুনি হত্যার বিচার হবে। এ কারণেই তারা মানুষ খুন করে গুম করে ক্ষমতা
দখল করে রাখতে চায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা যারা এ অবৈধ সরকারের পক্ষ অবলম্বন করেন, তাদের কাছে আমি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা আশা করি না। কিন্তু আপনারা কি নিজেদের কখনও প্রশ্ন করেছেন, কেন আপনারা আপনাদেরই সহকর্মী সাগর-রুনী হত্যার বিচার চাইতে পারেন না? সেই বাস্তবতায় আমি আপনাদের কাছে নিরপেক্ষতা নয়, সাগর-রুনির নিষ্পাপ সন্তান মেঘের দিকে তাকিয়ে হলেও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য আশা করি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা যারা এ অবৈধ সরকারের পক্ষ অবলম্বন করেন, তাদের কাছে আমি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা আশা করি না। কিন্তু আপনারা কি নিজেদের কখনও প্রশ্ন করেছেন, কেন আপনারা আপনাদেরই সহকর্মী সাগর-রুনী হত্যার বিচার চাইতে পারেন না? সেই বাস্তবতায় আমি আপনাদের কাছে নিরপেক্ষতা নয়, সাগর-রুনির নিষ্পাপ সন্তান মেঘের দিকে তাকিয়ে হলেও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য আশা করি।
তরুণদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন,
শুধু ফেসবুক নয়, রাজপথের আন্দোলনেও শরিক হতে হবে। তিনি বলেন, এই সরকারের
আমলে দুদক কালো বিড়ালকে সাদা করে। দুর্নীতিবাজকে সার্টিফিকেট দেয়। পদ্মা
সেতুর দুর্নীতিবাজদের এই দুদক সাদা বিড়াল বানায়। পদ্মা সেতুর আসল
দুর্নীতিবাজ শেখ হাসিনার চোখে সেরা দেশপ্রেমিক। এই হলো শেখ হাসিনার
দেশপ্রেম।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আসলে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর নিশ্চয়তা না দিতে পারি তবে ‘বেটার বাংলাদেশ’ হবে। সেই বাংলাদেশে কালো বিড়াল সাদা করা হবে না। অন্যায়কে অন্যায়, ন্যায়কে ন্যায় বলা হবে। গণতন্ত্রের কথা বলে অন্য দলের ওপর জেল-জুলুম করা হবে না। স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে ক্রেস্টের স্বর্ণ চুরি করা হবে না। অন্যায়ের সমালোচনা করলে গণমাধ্যম বন্ধ করা হবে না। বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হবে না। ফেসবুকে সমালোচনার জন্য জেল-জুলুম হবে না।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আসলে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর নিশ্চয়তা না দিতে পারি তবে ‘বেটার বাংলাদেশ’ হবে। সেই বাংলাদেশে কালো বিড়াল সাদা করা হবে না। অন্যায়কে অন্যায়, ন্যায়কে ন্যায় বলা হবে। গণতন্ত্রের কথা বলে অন্য দলের ওপর জেল-জুলুম করা হবে না। স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে ক্রেস্টের স্বর্ণ চুরি করা হবে না। অন্যায়ের সমালোচনা করলে গণমাধ্যম বন্ধ করা হবে না। বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হবে না। ফেসবুকে সমালোচনার জন্য জেল-জুলুম হবে না।
No comments