পুলিশ কইল, ‘চল’...
(বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাঁ দিকে যাওয়ার পথে
প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে গুলশান মডেল কলেজের সামনে আড়াআড়িভাবে দুটি ট্রাক
রাখা হয়। গতকাল দুপুরে তোলা ছবি l প্রথম আলো) রোববার
রাতে বালুভর্তি ট্রাক নিয়ে গাবতলী থেকে উত্তরা যাচ্ছিলেন ভোলার ছেলে
নুরুন্নবী। তিন মাস বেকার ছিলেন। এটাই প্রথম ‘ট্রিপ’। কিন্তু বিসমিল্লাহতেই
গলদ। বনানীর কাছে পুলিশ ধরেছে। কোথায়, কেন যেতে হবে, সেসব প্রশ্নের উত্তর
না দিয়ে বলেছে, ‘চল, এই গাড়ি যেই দিকে যাবে, সোজা সেই দিকে যাবি।’
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ রোববার রাতে যে ১০টি ট্রাক ও একটি পিকআপ এনে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে বসিয়েছে, তার সাতটিই গাবতলী থেকে বনানী, গুলশান ও শাহজাদপুরের দিকে যাচ্ছিল। ছয়টি গাড়িতে নির্মাণসামগ্রী থাকলেও চারটি ট্রাক ছিল একদম ফাঁকা। ট্রাকগুলো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, রংপুর ও খুলনা থেকে নিবন্ধিত। তবে এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির ডাক দিলে আগের রাত থেকে খালেদা জিয়ার বাড়ির মূল ফটকের সামনে ট্রাক রাখা হয়েছিল। তার ওপর দাঁড়িয়ে টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার চালাচ্ছিল। এ দফায় ট্রাকগুলো রাখা হয়েছে কার্যালয়ের দুই পাশে।
ট্রাকচালক নুরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি গেছিলাম। আইসা শুনি চাকরি গ্যাছে। কাইলই প্রথম টিপ মারতে বাইর হইছি। পাঁচ-ছয়টা টিপ মারার কথা আছিল। এক টিপে আমি দেড় শ, মালিক সাড়ে চাইর শ। এহন সরকার আইনা এইহানে বসাইছে। মালিক কি বইসা থাকলে ট্যাকা দিব?’
যানবাহনের সঙ্গে নুরুন্নবীর মতো কমপক্ষে ৩৫ জন লোক আটকা পড়েছেন। তাঁরা ট্রাকচালক, চালকের সহযোগী, ইট, বালু বা খোয়াবাহী বাহনের দিনমজুর। দিন এনে দিন খান। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান আছে। কারও কারও বৃদ্ধ বাবা-মাও আছেন। স্বজনেরা দুশ্চিন্তা করবেন বলে অনেকে বাড়িতে খবর দেননি। অনেকে স্ত্রীকে দিয়েছেন। উদ্বিগ্ন স্ত্রী বারবার খোঁজ করছেন স্বামীর। সন্তানেরা বাবার অপেক্ষায়।
অবরুদ্ধ এই মানুষগুলো বলেছেন, তাঁরা কাজ করলে টাকা পান, নইলে পান না। পটুয়াখালী থেকে আসা দিনমজুর মো. আব্বাস প্রতি রাতে কাজ করেন। সপ্তাহে দুই হাজার টাকার মতো রোজগার তাঁর। এক হাজার টাকা বাড়িতে পাঠান স্ত্রী ও চার সন্তানের জন্য। কত দিন এ অবস্থা চলবে, কীভাবে টাকাপয়সা জোগাড় হবে—এই ভেবে দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে খবর দেননি। ট্রাকচালক টাকা দিয়েছিলেন, রুটি-কলা কিনে খেয়েছেন।
তবে দুপুরে পুলিশ ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে দিয়েছে বলে জানান ট্রাকের লোকজন। মো. সেলিম নামের এক ট্রাকচালক জানান, তাঁর ট্রাকে দিনমজুরসহ পাঁচজন ছিলেন। দুজন বাসায় চলে গেছেন। গুলশানের মতো জায়গায় ১০০ টাকায় একজনেরই খাওয়া হয় না বলে অনুযোগ করছিলেন। নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে বাকি দুজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ট্রাকের ভালোমন্দের মতো ট্রাকে থাকা শ্রমিকদের দেখভাল করাও তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে জানালেন তিনি।
অপর এক ট্রাকচালক রাগে-ক্ষোভে বলছিলেন, ‘এই শ্যাষ। আর কুনো দিন ট্রাকই চালামু না। মাছ মারুম। এক কেজি চিংড়ি ধরতে পারলে চাইর শ টাকা। রাস্তায় বাইর হমু। পুলিশ ডর দ্যাখায়া বহায়া রাখব। এই সব আর ভাল্লাগে না।’
আটকে থাকা গাড়িগুলোর একটি ছিল মাটিভর্তি পিকআপ। পিকআপের চালক মো.আলমগীর বলেন, ‘পুলিশরে কইলাম, স্যার, আমার গাড়িতে তো বালু নাই, আমারে নিয়া কী করবেন। কইল, কবর দিমু। কবর দিতে মাটি লাগব। এরপর দেখি ইটের গাড়িও আনছে। কবর বোধ হয় বান্ধাইব।’
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ রোববার রাতে যে ১০টি ট্রাক ও একটি পিকআপ এনে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে বসিয়েছে, তার সাতটিই গাবতলী থেকে বনানী, গুলশান ও শাহজাদপুরের দিকে যাচ্ছিল। ছয়টি গাড়িতে নির্মাণসামগ্রী থাকলেও চারটি ট্রাক ছিল একদম ফাঁকা। ট্রাকগুলো ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, রংপুর ও খুলনা থেকে নিবন্ধিত। তবে এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির ডাক দিলে আগের রাত থেকে খালেদা জিয়ার বাড়ির মূল ফটকের সামনে ট্রাক রাখা হয়েছিল। তার ওপর দাঁড়িয়ে টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার চালাচ্ছিল। এ দফায় ট্রাকগুলো রাখা হয়েছে কার্যালয়ের দুই পাশে।
ট্রাকচালক নুরুন্নবী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে বাড়ি গেছিলাম। আইসা শুনি চাকরি গ্যাছে। কাইলই প্রথম টিপ মারতে বাইর হইছি। পাঁচ-ছয়টা টিপ মারার কথা আছিল। এক টিপে আমি দেড় শ, মালিক সাড়ে চাইর শ। এহন সরকার আইনা এইহানে বসাইছে। মালিক কি বইসা থাকলে ট্যাকা দিব?’
যানবাহনের সঙ্গে নুরুন্নবীর মতো কমপক্ষে ৩৫ জন লোক আটকা পড়েছেন। তাঁরা ট্রাকচালক, চালকের সহযোগী, ইট, বালু বা খোয়াবাহী বাহনের দিনমজুর। দিন এনে দিন খান। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান আছে। কারও কারও বৃদ্ধ বাবা-মাও আছেন। স্বজনেরা দুশ্চিন্তা করবেন বলে অনেকে বাড়িতে খবর দেননি। অনেকে স্ত্রীকে দিয়েছেন। উদ্বিগ্ন স্ত্রী বারবার খোঁজ করছেন স্বামীর। সন্তানেরা বাবার অপেক্ষায়।
অবরুদ্ধ এই মানুষগুলো বলেছেন, তাঁরা কাজ করলে টাকা পান, নইলে পান না। পটুয়াখালী থেকে আসা দিনমজুর মো. আব্বাস প্রতি রাতে কাজ করেন। সপ্তাহে দুই হাজার টাকার মতো রোজগার তাঁর। এক হাজার টাকা বাড়িতে পাঠান স্ত্রী ও চার সন্তানের জন্য। কত দিন এ অবস্থা চলবে, কীভাবে টাকাপয়সা জোগাড় হবে—এই ভেবে দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে খবর দেননি। ট্রাকচালক টাকা দিয়েছিলেন, রুটি-কলা কিনে খেয়েছেন।
তবে দুপুরে পুলিশ ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে দিয়েছে বলে জানান ট্রাকের লোকজন। মো. সেলিম নামের এক ট্রাকচালক জানান, তাঁর ট্রাকে দিনমজুরসহ পাঁচজন ছিলেন। দুজন বাসায় চলে গেছেন। গুলশানের মতো জায়গায় ১০০ টাকায় একজনেরই খাওয়া হয় না বলে অনুযোগ করছিলেন। নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে বাকি দুজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ট্রাকের ভালোমন্দের মতো ট্রাকে থাকা শ্রমিকদের দেখভাল করাও তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে জানালেন তিনি।
অপর এক ট্রাকচালক রাগে-ক্ষোভে বলছিলেন, ‘এই শ্যাষ। আর কুনো দিন ট্রাকই চালামু না। মাছ মারুম। এক কেজি চিংড়ি ধরতে পারলে চাইর শ টাকা। রাস্তায় বাইর হমু। পুলিশ ডর দ্যাখায়া বহায়া রাখব। এই সব আর ভাল্লাগে না।’
আটকে থাকা গাড়িগুলোর একটি ছিল মাটিভর্তি পিকআপ। পিকআপের চালক মো.আলমগীর বলেন, ‘পুলিশরে কইলাম, স্যার, আমার গাড়িতে তো বালু নাই, আমারে নিয়া কী করবেন। কইল, কবর দিমু। কবর দিতে মাটি লাগব। এরপর দেখি ইটের গাড়িও আনছে। কবর বোধ হয় বান্ধাইব।’
No comments