প্রেসক্লাবে দিনভর উত্তেজনা- মির্জা ফখরুল ক্লাবের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছেন
৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে রাজপথের কর্মসূচি গতকাল সোমবার ঢুকে পড়েছিল জাতীয় প্রেসক্লাবে। প্রায় দিনভর সেখানে সরকার-সমর্থক ও বিরোধীদের বিভিন্ন কর্মসূচি, উত্তেজনা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বেলা আড়াইটায় অনেকটা আকস্মিকভাবে প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ক্লাবের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। প্রেসক্লাবের বাইরে তখন বিপুলসংখ্যক পুলিশ অপেক্ষায় ছিল।
এর আগে গতকাল বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের ব্যানারে লাঠি হাতে সরকার-সমর্থক একদল যুবক জাতীয় প্রেসক্লাবের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে বিএনপি-সমর্থক কয়েকজন কর্মীকে পিটিয়েছেন। এ ঘটনার সময় ক্লাব চত্বরে ব্যাপক হইচই ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সুঠামদেহী যুবকেরা প্রায় দিনভর লাঠি হাতে অবস্থান নেন। তাঁদের মাথায় ও হাতে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কাপড়ের ব্যান্ড থাকলেও এঁরা সরকার-সমর্থক বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাঁদের লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা ও প্রজন্ম লীগের পতাকা লাগানো ছিল। এ সময় তাঁদের আশপাশে এবং প্রেসক্লাব ঘিরে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দেখা গেছে।
অন্যদিকে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ আয়োজন করা হলেও ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই ছিলেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সমর্থক। মিলনায়তনে বক্তৃতা শেষ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাইরে না গিয়ে প্রেসক্লাবের মূল ভবনের ভেতরে যাওয়ার সময় দলের নেতা-কর্মীরাও মিছিল করে তাঁর সঙ্গে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ক্লাবের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে। এতে অস্থিরতা আরও ছড়িয়ে যায়। তখন দরজার পাশে স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিকদের নামফলক আবৃত করা কাচ ভেঙে যায়।
অদূরেই ক্লাবের মূল ফটকের ভেতরের দিকে সরকার-সমর্থক সাংবাদিকদের সমাবেশ থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়া হয়। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও হইচইয়ের কারণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংখ্যায় কম থাকলেও সরকার-সমর্থক সাংবাদিকেরা ক্লাব চত্বরে মিছিল বের করেন। অন্যদিকে বিএনপি-সমর্থকেরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ক্লাব চত্বর প্রকম্পিত করে তোলেন। তাঁদের কেউ কেউ ক্লাব মিলনায়তনের পাশে লাঠিসোঁঠা ও ঢিল জোগাড় করতে থাকেন। এই অবস্থার মধ্যে ক্লাবের মূল ফটকের বাইরের রাস্তায় লাঠি হাতে অবস্থান করা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কর্মীরা দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন। ফটক না খোলায় তাঁরা ক্লাবের একজন নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর করেন। ওই যুবকেরা লাঠি নিয়ে কয়েকজনকে পেটাতে পেটাতে প্রেসক্লাব মিলনায়তনের দিকে নিয়ে যান। এ সময় বিএনপি-সমর্থকদের অনেকেই আত্মরক্ষার জন্য প্রেসক্লাবের মূল ভবনে বিভিন্ন তলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। ক্লাবের নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খান। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল লাঠি হাতে ঢুকে পড়া ওই যুবকদের নিবৃত করেন।
৫ জানুয়ারি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে গতকাল দিনভর ছিল সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও উত্তেজনা। গতকাল সকালে সরকার-সমর্থক ও সরকারবিরোধী দুই পক্ষের সাংবাদিক নেতারা সমঝোতায় পৌঁছান যে, ক্লাবের ভেতর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সকালের দিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ প্রেসক্লাবের মূল ফটকের ভেতরের দিকে সরকার-সমর্থক বলে পরিচিত সাংবাদিকদের সমাবেশে বক্তৃতা দেন। এর নাম দেওয়া হয় জঙ্গিবাদবিরোধী সাংবাদিক সমাবেশ। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক ও বর্তমান নেতারা এই সমাবেশে বক্তৃতা করেন।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবকে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। মনজুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছিল। আর তা করতে গিয়ে তারা ২৪২ জনকে হত্যা করেছে এবং এ জন্য তাদের বিচার হওয়া উচিত। সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে শাজাহান মিয়া, শফিকুর রহমান, আবদুল জলিল ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ওই সমাবেশ চলাকালে দুপুরের পর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শুরু হয় পেশাজীবীদের সমাবেশ। এতে যোগ দিয়ে মির্জা ফখরুল গত বছরের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আজকের এ দিন আমাদের জাতীয় জীবনে একটি কলঙ্কিত দিন। এই দিনে আমরা ভোটের অধিকার হারিয়েছি। গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়েছি।’
গত দুই দিনে ঢাকাসহ সারা দেশের পরিস্থিতির উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার একদিকে পাহারা বসিয়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবিকে, অন্যদিকে তাদের পেটুয়া বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের ওপর। তিনি বলেন, এই কারাগার ভেঙে ফেলতে হবে। লাথি মার ভাঙ রে তালা, যত সব বন্দিশালা—কবি নজরুল ইসলামের সেই কবিতা বারবার করে বলতে হবে।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং পেশাজীবীদের মর্যাদা ও অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এ সমাবেশ করে। এতে সভাপতিত্ব করে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বেসরকারি শিক্ষকনেতা মো. সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই সিকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন|
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কর্মসূচি শেষেই মারপিটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে দুই পক্ষের সাংবাদিক নেতারা ক্লাবের একটি কক্ষে বৈঠক করেন। এ সময় ইকবাল সোবহান চৌধুরী, রুহুল আমিন গাজী, মনজুরুল আহসান বুলবুল, শওকত মাহমুদসহ কয়েকজন সাংবাদিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রেসক্লাব থেকে বহিরাগতদের বের করা নিয়ে আলোচনা হয় বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
সন্ধ্যার দিকে প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে মির্জা ফখরুলের প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন গণমাধ্যমকর্মীরা। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই কক্ষে ব্রিফিং করে সরকার-সমর্থক সাংবাদিক নেতারা বলেন, বিএনপি-সমর্থিত নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে ক্লাবের ফটকের পাশে শহীদ সাংবাদিকের স্মৃতিফলক ভেঙে ফেলেছেন।
রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ক্লাবের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। ক্লাবের বাইরে অসংখ্য পুলিশ রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, রাতের বেলায় তিনি গ্রেপ্তার হতে চান না। আজ মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তার হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাবের ভেতরেই তিনি অপেক্ষা করছেন।
এর আগে গতকাল বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের ব্যানারে লাঠি হাতে সরকার-সমর্থক একদল যুবক জাতীয় প্রেসক্লাবের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে বিএনপি-সমর্থক কয়েকজন কর্মীকে পিটিয়েছেন। এ ঘটনার সময় ক্লাব চত্বরে ব্যাপক হইচই ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সুঠামদেহী যুবকেরা প্রায় দিনভর লাঠি হাতে অবস্থান নেন। তাঁদের মাথায় ও হাতে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কাপড়ের ব্যান্ড থাকলেও এঁরা সরকার-সমর্থক বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাঁদের লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা ও প্রজন্ম লীগের পতাকা লাগানো ছিল। এ সময় তাঁদের আশপাশে এবং প্রেসক্লাব ঘিরে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দেখা গেছে।
অন্যদিকে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ আয়োজন করা হলেও ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই ছিলেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সমর্থক। মিলনায়তনে বক্তৃতা শেষ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাইরে না গিয়ে প্রেসক্লাবের মূল ভবনের ভেতরে যাওয়ার সময় দলের নেতা-কর্মীরাও মিছিল করে তাঁর সঙ্গে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ক্লাবের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে। এতে অস্থিরতা আরও ছড়িয়ে যায়। তখন দরজার পাশে স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিকদের নামফলক আবৃত করা কাচ ভেঙে যায়।
অদূরেই ক্লাবের মূল ফটকের ভেতরের দিকে সরকার-সমর্থক সাংবাদিকদের সমাবেশ থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়া হয়। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও হইচইয়ের কারণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংখ্যায় কম থাকলেও সরকার-সমর্থক সাংবাদিকেরা ক্লাব চত্বরে মিছিল বের করেন। অন্যদিকে বিএনপি-সমর্থকেরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ক্লাব চত্বর প্রকম্পিত করে তোলেন। তাঁদের কেউ কেউ ক্লাব মিলনায়তনের পাশে লাঠিসোঁঠা ও ঢিল জোগাড় করতে থাকেন। এই অবস্থার মধ্যে ক্লাবের মূল ফটকের বাইরের রাস্তায় লাঠি হাতে অবস্থান করা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কর্মীরা দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন। ফটক না খোলায় তাঁরা ক্লাবের একজন নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর করেন। ওই যুবকেরা লাঠি নিয়ে কয়েকজনকে পেটাতে পেটাতে প্রেসক্লাব মিলনায়তনের দিকে নিয়ে যান। এ সময় বিএনপি-সমর্থকদের অনেকেই আত্মরক্ষার জন্য প্রেসক্লাবের মূল ভবনে বিভিন্ন তলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। ক্লাবের নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খান। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল লাঠি হাতে ঢুকে পড়া ওই যুবকদের নিবৃত করেন।
৫ জানুয়ারি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে গতকাল দিনভর ছিল সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও উত্তেজনা। গতকাল সকালে সরকার-সমর্থক ও সরকারবিরোধী দুই পক্ষের সাংবাদিক নেতারা সমঝোতায় পৌঁছান যে, ক্লাবের ভেতর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সকালের দিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ প্রেসক্লাবের মূল ফটকের ভেতরের দিকে সরকার-সমর্থক বলে পরিচিত সাংবাদিকদের সমাবেশে বক্তৃতা দেন। এর নাম দেওয়া হয় জঙ্গিবাদবিরোধী সাংবাদিক সমাবেশ। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক ও বর্তমান নেতারা এই সমাবেশে বক্তৃতা করেন।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবকে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। মনজুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছিল। আর তা করতে গিয়ে তারা ২৪২ জনকে হত্যা করেছে এবং এ জন্য তাদের বিচার হওয়া উচিত। সমাবেশে সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে শাজাহান মিয়া, শফিকুর রহমান, আবদুল জলিল ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ওই সমাবেশ চলাকালে দুপুরের পর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শুরু হয় পেশাজীবীদের সমাবেশ। এতে যোগ দিয়ে মির্জা ফখরুল গত বছরের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আজকের এ দিন আমাদের জাতীয় জীবনে একটি কলঙ্কিত দিন। এই দিনে আমরা ভোটের অধিকার হারিয়েছি। গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়েছি।’
গত দুই দিনে ঢাকাসহ সারা দেশের পরিস্থিতির উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার একদিকে পাহারা বসিয়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবিকে, অন্যদিকে তাদের পেটুয়া বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের ওপর। তিনি বলেন, এই কারাগার ভেঙে ফেলতে হবে। লাথি মার ভাঙ রে তালা, যত সব বন্দিশালা—কবি নজরুল ইসলামের সেই কবিতা বারবার করে বলতে হবে।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং পেশাজীবীদের মর্যাদা ও অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এ সমাবেশ করে। এতে সভাপতিত্ব করে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বেসরকারি শিক্ষকনেতা মো. সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই সিকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন|
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কর্মসূচি শেষেই মারপিটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে দুই পক্ষের সাংবাদিক নেতারা ক্লাবের একটি কক্ষে বৈঠক করেন। এ সময় ইকবাল সোবহান চৌধুরী, রুহুল আমিন গাজী, মনজুরুল আহসান বুলবুল, শওকত মাহমুদসহ কয়েকজন সাংবাদিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রেসক্লাব থেকে বহিরাগতদের বের করা নিয়ে আলোচনা হয় বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
সন্ধ্যার দিকে প্রেসক্লাব ভিআইপি লাউঞ্জে মির্জা ফখরুলের প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন গণমাধ্যমকর্মীরা। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই কক্ষে ব্রিফিং করে সরকার-সমর্থক সাংবাদিক নেতারা বলেন, বিএনপি-সমর্থিত নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে ক্লাবের ফটকের পাশে শহীদ সাংবাদিকের স্মৃতিফলক ভেঙে ফেলেছেন।
রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ক্লাবের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। ক্লাবের বাইরে অসংখ্য পুলিশ রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, রাতের বেলায় তিনি গ্রেপ্তার হতে চান না। আজ মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তার হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাবের ভেতরেই তিনি অপেক্ষা করছেন।
No comments