বর্তমানকে দখল করতে গিয়ে সরকার ভবিষ্যৎকে ভয়ংকর করে তুলছে by আনু মোহাম্মদ
বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তির দিনে এক
শ্বাসরুদ্ধকর অনিশ্চিত নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশে। সরকার
বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের সভা-সমাবেশ বন্ধ করতে গিয়ে পুরো দেশকে
অচলাবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। মাঠে নামিয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ছাড়াও
দলীয় বিভিন্ন বাহিনী। সরকারের এই অগণতান্ত্রিক ভূমিকা তার দুর্বলতাকেই
প্রকট করে তুলেছে। যে ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাতে
এ সরকারকে বলা যায় স্বনির্বাচিত সরকার। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দুর্বলতার
কারণে আইনগত বৈধতা থাকলেও বর্তমান সরকার সামাজিক ও রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা
তৈরি করতে পারেনি। সরকারের নিজের দুর্বলতার কারণে পুলিশ ও র্যাবের কোনো
কোনো সদস্য যে আচরণ করছে তা দুঃখজনক।
নিজের দুর্বলতার কারণেই সরকার দিন দিন আরও বেশি স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠছে। সরকার নিজের দুর্বলতা ঢাকতে গিয়ে দেশের ভেতরে-বাইরের অনেক শক্তির সঙ্গে আপস করছে। ছাড় দিতে হচ্ছে অনেক কিছু। দেশী-বিদেশী অনেকের দাবি-আবদার মানতে হচ্ছে। অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি ওপর ভর করে চলতে হচ্ছে। জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেশী-বিদেশী গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে হচ্ছে। দেশে বর্তমান যে শাসন ব্যবস্থা চলছে তাকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন, পুলিশ-র্যাবসহ নানা বাহিনী সরকারি দলের বিভিন্ন অংশ- সবাইকে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ফলে নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক ন্যূনতম রাজনৈতিক অধিকার- কোনো কিছুই রক্ষিত হচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-গ্রেফতার বাণিজ্য- এগুলো আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সুবিধাভোগী যারা, তাদের হাতে সারা দেশের মানুষ জিম্মি এবং একক ক্ষমতার কারণে লুণ্ঠন-দখল নিয়ে সরকারি দলের মধ্যেই সংঘাত-সহিংসতা সৃষ্টি হচ্ছে। জনস্বার্থে কাজ করলে, জনগণের ওপর ভরসা করতে পারলে সভা-সমাবেশ-নির্বাচন কোনো কিছু নিয়েই সরকারের ভয় থাকত না। কিন্তু সর্বজনের স্বার্থবিরোধী কাজ করায় তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে বল প্রয়োগের ওপর।
এ ধরনের সন্ত্রাসী রাজনীতি ও লুটেরা অর্থনীতিকে স্থায়িত্ব দেয়ার বাসনায় সরকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার এ বেপরোয়া ভূমিকার কারণে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলগুলো তাদের হারানো বৈধতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে; দেশী-বিদেশী নানা স্বার্থগোষ্ঠী সুযোগ খুঁজছে আরও দখলদারিত্বের। সরকার বর্তমানকে দখল করতে গিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে আরও ভয়ংকর পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আনু মোহাম্মদ : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
নিজের দুর্বলতার কারণেই সরকার দিন দিন আরও বেশি স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠছে। সরকার নিজের দুর্বলতা ঢাকতে গিয়ে দেশের ভেতরে-বাইরের অনেক শক্তির সঙ্গে আপস করছে। ছাড় দিতে হচ্ছে অনেক কিছু। দেশী-বিদেশী অনেকের দাবি-আবদার মানতে হচ্ছে। অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি ওপর ভর করে চলতে হচ্ছে। জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেশী-বিদেশী গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে হচ্ছে। দেশে বর্তমান যে শাসন ব্যবস্থা চলছে তাকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসন, পুলিশ-র্যাবসহ নানা বাহিনী সরকারি দলের বিভিন্ন অংশ- সবাইকে অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ফলে নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক ন্যূনতম রাজনৈতিক অধিকার- কোনো কিছুই রক্ষিত হচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন-গ্রেফতার বাণিজ্য- এগুলো আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সুবিধাভোগী যারা, তাদের হাতে সারা দেশের মানুষ জিম্মি এবং একক ক্ষমতার কারণে লুণ্ঠন-দখল নিয়ে সরকারি দলের মধ্যেই সংঘাত-সহিংসতা সৃষ্টি হচ্ছে। জনস্বার্থে কাজ করলে, জনগণের ওপর ভরসা করতে পারলে সভা-সমাবেশ-নির্বাচন কোনো কিছু নিয়েই সরকারের ভয় থাকত না। কিন্তু সর্বজনের স্বার্থবিরোধী কাজ করায় তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে বল প্রয়োগের ওপর।
এ ধরনের সন্ত্রাসী রাজনীতি ও লুটেরা অর্থনীতিকে স্থায়িত্ব দেয়ার বাসনায় সরকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার এ বেপরোয়া ভূমিকার কারণে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলগুলো তাদের হারানো বৈধতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে; দেশী-বিদেশী নানা স্বার্থগোষ্ঠী সুযোগ খুঁজছে আরও দখলদারিত্বের। সরকার বর্তমানকে দখল করতে গিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে আরও ভয়ংকর পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আনু মোহাম্মদ : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments