পদোন্নতি নিয়ে মন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা দাবি এমপিদের by কাজী সোহাগ
পদোন্নতি নিয়ে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের অসন্তোষ ও ক্ষোভ নিয়ে মন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন এমপিরা। পাশাপাশি পদের তুলনায় কর্মকর্তার অতিরিক্ত সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এসবের সদুত্তর দিতে পারেননি প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। কেবল আশ্বাস দিয়েছেন। এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি এমপিরা। বৈঠকে তারা জানান, জনপ্রশাসনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দেয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে না। পদোন্নতি বঞ্চিতরা থেকে যাচ্ছেন বঞ্চিতই। অনেক ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্নদের পদোন্নতি দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে সিভিল প্রশাসনে হতাশা ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ চিত্র উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটির সদস্য খোরশেদ আরা হক মানবজমিনকে বলেন, বৈঠকের বেশির ভাগ সময় জনপ্রশাসনের অসন্তোষ নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রীর কাছে আমরা এসবের বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। বলেছেন, মন্ত্রণালয় চেষ্টা করবে অসন্তোষ প্রশমনের। সংসদীয় কমিটির আলোচনা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেককে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে প্রশাসনে ১০৮টি অতিরিক্ত সচিব পদের বিপরীতে ৩০৭ জন অতিরিক্ত সচিব, ৪৩০টি যুগ্ম সচিব পদের বিপরীতে ৯৩১ জন, ৮৩০টি উপ-সচিব পদের বিপরীতে ১৩১৫ জন, ২৭০০ সিনিয়র সহকারী সচিব পদের বিপরীতে ১৭০০ জন কর্মরত রয়েছেন। এসব কর্মকর্তার পদোন্নতি এখনই দেয়া যাচ্ছে না। এর আগে ব্যাপক সংখ্যায় পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। যারা যোগ্য তারা বঞ্চিত হননি। পদের অভাবে পদোন্নতি প্রাপ্তদের যথাযথ পদায়ন করা যাচ্ছে না। বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম-সচিব ও উপ-সচিব পদে পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের চাপ রয়েছে। বিশেষ করে উপ-সচিব পদোন্নতির বিষয়ে প্রশাসনের ২০তম ব্যাচের চাপ রয়েছে। এদিকে উপ-সচিব পদোন্নতিতে ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও কর্মকর্তা সঙ্কটের কারণে সরকার এগুতে পারছে না। এ মুহূর্তে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পদে পদায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিনিয়র সহকারী সচিব পাওয়া যাবে না। ৪৯০টি উপজেলার কমপক্ষে ৪০০ উপ-সচিবকে ইউএনও হিসেবে পদায়ন করতে হবে। জেলা প্রশাসক এবং ইউএনও যদি একই পদ (উপ-সচিব) মর্যাদার কর্মকর্তা হন, তা মাঠপ্রশাসনে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করবে। তবে কিছু কিছু পদে পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কমিটি পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে পদোন্নতি দেয়া এবং পদোন্নতি বঞ্চিতদের আগে পদোন্নতি দেয়ার সুপারিশ করেছে। এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং খোরশেদ আরা হক অংশ নেন। বিশেষ আমন্ত্রণে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবু নাসেরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সংসদ সচিবালয় জানায়, বৈঠকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা অফিসারের বেতন স্কেলে সৃষ্ট বর্তমান বৈষম্য নিরসন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়, সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৪ এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদ সভায় উপস্থাপনের জন্য সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘সাবজেক্ট অফার’ পদে কর্মরত ২৯৪ জনের কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে আগামী এক মাসের মধ্যে তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
এদিকে বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কমিটি। জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবু নাসের জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের সনদ বাতিল করেছে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করেছে। এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোন ভূমিকা নেই। এবিষয়ে কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জানান, কি ভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটা কমিটি জানতে চায়। কারণ যাচাই-বাছাই করলে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। আর মুক্তিযোদ্ধার সুনির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। এসব বিষয়গুলো নিয়ে কমিটি সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে আলোচনায় আগ্রহী। তাই কমিটির আগামী বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
এদিকে বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কমিটি। জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবু নাসের জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের সনদ বাতিল করেছে। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করেছে। এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোন ভূমিকা নেই। এবিষয়ে কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জানান, কি ভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটা কমিটি জানতে চায়। কারণ যাচাই-বাছাই করলে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। আর মুক্তিযোদ্ধার সুনির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। এসব বিষয়গুলো নিয়ে কমিটি সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে আলোচনায় আগ্রহী। তাই কমিটির আগামী বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
No comments