ড্রোনও তৈরি করতে পারে আনসার উল্লাহ!
‘ড্রোন’
তৈরির প্রজেক্টসহ আনসার উল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি)’র দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার
করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃত তানজিল হোসেন বাবু
(২৬) ও মো. গোলাম মাওলা মোহন (২৫)-এর কাছ থেকে ১টি ‘ড্রোন’ বা ‘কোয়াড
হেলিকপ্টার’ তৈরির সরঞ্জাম, বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ১০টি বই
উদ্ধার করা হয় বলে গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর
মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো
হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম
বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ৮টায় যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক হোসেন সড়ক এলাকার একটি
ভাড়া বাড়ি থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত উগ্র মতদর্শী আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। তারা
দুজনই ওই জঙ্গি দলের অন্যতম নেতা মাওলানা জসীম উদ্দিন রাহমানীর অনুসারী
হিসেবে কথিত জিহাদি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তিনি আরও বলেন, ওই দুজন
২৫-৩০ তলা কোন বিল্ডিংয়ের সমতুল্য কোন উচ্চতায় উড়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে
হামলা করার সক্ষমতা সম্পন্ন কোয়াড হেলিকপ্টার বা ড্রোন তৈরির সক্ষমতা
অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা
ব্যবস্থার কারণে তারা ভূমি থেকে ভূমিতে আক্রমণ কষ্টসাধ্য বলে এ রূপ আকাশপথে
আক্রমণের পরিকল্পনা করছিল। ২৫-৩০ কেজি ওজনের কোন বোমা বহনে সক্ষম এরূপ
একটা কোয়াড হেলিকপ্টার তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। মনিরুল ইসলাম
আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত গোলাম মাওলা মোহন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রিন
ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়েছে। অন্যজনেরও
টেকনিক্যাল জ্ঞানের ওপর দক্ষতা আছে। এছাড়া তারা টেকনিক্যাল জ্ঞানে পারদর্শী
অন্য বন্ধুদের প্রেরণা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। পাকিস্তানের একটি স্কুলে
তেহরিক-এ-তালেবানের সদস্যরা হামলা চালিয়ে বিপুল প্রাণহানি ঘটিয়েছে ওই জঙ্গি
গোষ্ঠীর কার্যক্রম বাংলাদেশে আছে কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে
তিনি বলেন, তেহেরিক-এ-তালেবানের কোন কার্যক্রম বাংলাদেশের নেই। তবে তাদের
উগ্র আদর্শ ও কথিত জেহাদের মতবাদে বিশ্বাসী এমন জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশে
আছে। বিশ্বের যেখানেই জঙ্গি গোষ্ঠীরা হামলা চালায় ওই হামলার বিভিন্নভাবে
প্রেরণা পেয়ে থাকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা। তিনি
জানান, আটককৃত দু’জন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই জঙ্গিদলের অন্য
সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায়
যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে
হাজির করে রিমান্ডে এনে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ
বিভাগের ডিসি কৃষ্ণপদ রায়, ডিসি মিডিয়া মো. মাসুদুর রহমান ও ডিবি দক্ষিণ
বিভাগের এসি আমিনুল ইসলাম।
No comments