চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে বঞ্চিত মানুষ বসে থাকবে না: সন্তু লারমা
পার্বত্য
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নেতা সন্তু লারমা বলেছেন, পাহাড়ে আন্দোলন চলছে।
সরকার যদি শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে
আন্দোলন আরও গতি পাবে। শান্তি চুক্তি বিরোধীদের দোহাই দিয়ে চুক্তি
বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ করা হলে যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ
বসে থাকবে না। গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে বিশেষ শাসন ব্যবস্থায় প্রশাসনিক
প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালীকরণ শীর্র্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে
তিনি এসব কথা বলেন। সন্তুু লারমা বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন
হলেই পার্বত্য অঞ্চলে বিশেষ শাসন ব্যবস্থার আওতায় প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলো
শক্তিশালী হবে। তবে তার আগে প্রয়োজন নির্বাচিত, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল
উদার শাসন ব্যবস্থা। সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদকে নিজেদের প্রতিপক্ষ অ্যাখ্যা
দিয়ে তিনি বলেন, যারা সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদের পক্ষে তারা পার্বত্য
শান্তি চুক্তি সমর্থন করবে না। সন্তু লারমা বলেন, সশস্ত্র ও নিরস্ত্র
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। ১৭ বছর পর আবারও
আমাদের মনে হচ্ছে, সেই অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। সামরিক ও বেসামরিক
আমলাতান্ত্রিকতাকে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের পর বাধা উল্লেখ করে তিনি
বলেন, যদি সরকারপ্রধান সাহসী ভূমিকা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের নিয়ে এগিয়ে
আসেন তাহলে স্বাভাবিকভাবে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়িত হবে। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত
ফেরদৌস বলেন, পূর্ব পাকিস্তানিরা একসময় বাঙালিদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। এখন
বাংলাদেশ পাহাড়িদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। নিপীড়িত কিভাবে নিপীড়কের ভূমিকায়
অবতীর্ণ হয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। তিনি বলেন, আমরা
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে না তবে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে। পার্বত্য চট্টগ্রামে
এখন জনসংখ্যাতাত্ত্বিক রাজনীতি চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ রকম চলতে
থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে পাহাড়িরা সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। পার্বত্য
আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদ অসাধারণ মডেল হতে পারতো অভিমত প্রকাশ করে
রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে এটি বাস্তবায়ন
করা যায়নি। দৈনিক প্রথম আলোর উপ-সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, আমরা
সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিরা এক অমানবিক মনস্তাত্ত্বিকতা নিয়ে বাস করি। তারা
পাহাড়ে গেলে মুসলমান হয়ে যায় আর বিহারী ক্যাম্পে গেলে বাঙালি হয়ে যায়।
বাঙালিরা বা মুসলমানরা যে অধিকার ভোগ করে পাহাড়িদেরও সে অধিকার ভোগ করতে
দিতে হবে দাবি করে তিনি প্রশ্ন রাখেন- তিন পার্বত্য জেলায় ৬টি সেনানিবাস
কার জন্য? সামরিক কর্তা, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা পাহাড়িদের সঙ্গে
বর্ণবাদী আচরণ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পাহাড়িদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে
শান্তি চুক্তির প্রতিটি ধারা বাস্তবায়ন করতে হবে।
সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিক। আর তা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। ১৭ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভোটার তালিকা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পাহাড়িদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হয়।
জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের জন্য পাহাড়িরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছেন। তারা জুম চাষ করতে না পেরে মাটির আলু খাচ্ছেন। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ও ঋণ লাভের আশায় ধর্মান্তরিত হয়েও তাদের লাভ হচ্ছে না। উপরন্তু কাপ্তাই লেক ও সামরিক ক্যাম্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকলেও আমলাদের কারণে চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ড. হালিম।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে যে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে সেজন্য তাদের একত্রিত না করে আমাদের উদযাপন করার কথা। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এত বছর পরেও আমরা তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারিনি। পাহাড়ে সংগঠিত ধর্ষণ ও অপহরণের একটিরও বিচার হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দেশে প্রচলিত ন্যূনতম আইনের শাসন পাহাড়ে নেই। শান্তি চুক্তির ৭১টি ধারার মধ্যে ৬৮টি বাস্তবায়িত হয়েছে অথচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমি বণ্টন সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রভাবশালী মহল শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে শাহীন প্রশ্ন রাখেন- তাহলে কি প্রভাবশালীরা রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী? সরকারের সদিচ্ছা থাকলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে ৬ মাসও লাগবে না বলে জানান তিনি। কাপেং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সারেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আদিবাসীদের জন্য সংসদীয় ককাস গ্রুপের সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ এমপি, উষাতন তালুকদার এমপি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বক্তব্য রাখেন।
সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিক। আর তা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। ১৭ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভোটার তালিকা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পাহাড়িদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে হয়।
জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনের জন্য পাহাড়িরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছেন। তারা জুম চাষ করতে না পেরে মাটির আলু খাচ্ছেন। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ও ঋণ লাভের আশায় ধর্মান্তরিত হয়েও তাদের লাভ হচ্ছে না। উপরন্তু কাপ্তাই লেক ও সামরিক ক্যাম্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকলেও আমলাদের কারণে চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ড. হালিম।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে যে বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে সেজন্য তাদের একত্রিত না করে আমাদের উদযাপন করার কথা। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এত বছর পরেও আমরা তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারিনি। পাহাড়ে সংগঠিত ধর্ষণ ও অপহরণের একটিরও বিচার হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, দেশে প্রচলিত ন্যূনতম আইনের শাসন পাহাড়ে নেই। শান্তি চুক্তির ৭১টি ধারার মধ্যে ৬৮টি বাস্তবায়িত হয়েছে অথচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমি বণ্টন সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রভাবশালী মহল শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে শাহীন প্রশ্ন রাখেন- তাহলে কি প্রভাবশালীরা রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী? সরকারের সদিচ্ছা থাকলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে ৬ মাসও লাগবে না বলে জানান তিনি। কাপেং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ সারেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আদিবাসীদের জন্য সংসদীয় ককাস গ্রুপের সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ এমপি, উষাতন তালুকদার এমপি, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বক্তব্য রাখেন।
No comments