আমাদের দিকে ফিরে তাকান by প্রধানমন্ত্রীকে নিখোঁজদের স্বজনরা
গুমের
শিকার ৮ ব্যক্তিকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাদের
স্বজনরা। ২০১৩ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর ওই ৮ ব্যক্তিকে বাসা থেকে দুর্বৃত্তরা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায়। প্রিয়জন
হারানোর এক বছর পূর্তিতে তারা সমবেত হয়েছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি
লাউঞ্জে। সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানিয়েছেন, ছেলের খোঁজ না পেয়ে
কয়েকজনের বাবা-মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। সন্তানদের সঠিক খোঁজ চান
তারা। আর সরকার চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সন্তানরা ফিরে আসবে। সংবাদ
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিখোঁজ ঢাকা মহানগরের ৩৮নং ওয়ার্ড বিএনপির
সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনের ছোট বোন সানজিদা ইসলাম তুলি। উপস্থিত
স্বজনরা এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভিআইপি লাউঞ্জে সৃষ্টি হয় আবেগঘন
পরিবেশের। উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অনেকে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। সংবাদ
সম্মেলনে অংশ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। এ পরিবারগুলোর সঙ্গে সরকার
রসিকতা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মাসব্যাপী বিজয় দিবস উদযাপন করি।
পারলে বছরজুড়ে উদযাপন করি। মুক্তিযুদ্ধের নাম করে সরকার বড় বড় কথা বলে এ
স্বজনদের কণ্ঠস্বরকে নিচু করে দিচ্ছে। এ অমানবিকতা বন্ধ হোক। তাদের জানতে
দেয়া হোক তাদের সন্তানরা কোথায় আছে। প্রশাসনের কাছে এই পরিবারগুলো বোঝা হয়ে
গেছে। র্যাব এখন কথা বলতে চায় না, বিরক্ত হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের
নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অথচ ক্ষমতাসীনরা কত রকমের আইন করছে নিজেদের
নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। সরকারের উদ্দেশে মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী
নিরাপত্তা যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার প্রয়োজন কম
নয়। যে সব পরিবারের সদস্যরা গুম হয়েছে তারা এ দেশেরই নাগরিক। ১ বছর পার হয়ে
গেল এখনও সরকার বলতেই পারছে না তারা কোথায় আছে কিভাবে আছে- নাকি মরে গেছে।
তাদের স্বজনরা তাদের জন্য দোয়াও করতে পারে না কারণ তাদের কোন খবরই এখনও
কোন স্বজনই পায়নি। আমরা এরকম চাইনি কখনও। বাংলার কোটি মানুষের নিরাপত্তার
জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এ গুমের ঘটনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
ভূলুণ্ঠিত হয়েছে দাবি করে মান্না বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে
সরকার জনগণকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। গত ১০ মাসে সরকার জানিয়েছে তোমরা ভোট
দাও বা না দাও তোমাদের উন্নয়নের দায়িত্ব আমরা নিলাম। এখানে কতটুকু উন্নয়ন
হয়েছে সে বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ।
মাজহারুল ইসলাম রাসেলের বোন লাবণী আক্তার বলেন, আদরের ছোট ভাই রাসেল মেধাবী ছাত্র। জানি না তার কি অপরাধ। মা বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। বাবা অস্বাভাকি আচরণ করছেন। এমন জীবন চাই না। পৃথিবীতে কেন জন্ম নিলাম? ফজরের নামাজের আগে ঘুম থেকে উঠে মা কান্না শুরু করেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাবার কান্না শুনতে পাই। এত কষ্ট কিভাবে সহ্য করি। প্রতিটি মুহূর্ত আমরা অপেক্ষা করি। আর কত অপেক্ষা করতে হবে জানি না। আসাদুজ্জামান রানার বোন মিনারা বেগম বলেন, এক বছর পূর্ণ হলো। আমরা জানতে পারলাম না আমাদের ভাই কোথায়। অনেক কষ্ট করে রানা পড়ালেখা করেছে। তার ইচ্ছে ছিল বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেবে। মা যখন রানার কথা জিজ্ঞেস করে তখন কোন উত্তর দিতে পারি না। এ ঘটনা জানলে কোন গ্রামের ছেলে আর ঢাকায় পড়ালেখা করতে আসবে না। অনেক বলেছি। মনে হয় এসব কথা প্রধানমন্ত্রীর কানে যায় না। আমাদের ভাগ্যে কি হয়েছে তা-ও জানি না। সঠিক সংবাদ জানতে চাই। আর কতকাল আমরা কাঁদবো? সাজেদুল ইসলাম সুমনের ৪ বছরের শিশুকন্যা আরোয়া ও ৯ বছরের রাইয়া প্রেস ক্লাবে এসেছিল বাবাকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি নিয়ে। তাদের মুখে একটাই কথা, বাবাকে ফিরিয়ে পেতে চাই। বাবাকে এনে দাও। মাসুমের মা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাসুমের জন্ম ১৬ই ডিসেম্বর। গত বছরের ৪ঠা ডিসেম্বর বাসা থেকে বের হওয়ার আগে তাকে বারণ করেছিলাম বাইরে না যাওয়ার জন্য। সে বলেছিল, মা আমি চোর না, সন্ত্রাসী না। আমি কেন ফিরবো না? ছেলের জন্য ঘুরে বেড়াই। কোন হদিস পাই না। কি অপরাধ তাদের? সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়ার কারণে কোন কথাই বলতে পারছিলেন না আদনান চৌধুরীর মা কানিজ ও শাহীনবাগের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কাওসার আহমেদের মা কমলা আক্তার। কাওসারের মা শুধু বিলাপ করছিলেন, ছেলেকে হারিয়ে আমি এখন রাস্তার ভিখারি। আমার ছেলেকে একটু দেখতে চাই। জাহিদুল কবির তানভীরের মা নিলুফা বেগম পুুতুল বলেন, আমার ছেলে ফজরের নামাজের সময় ডেকে দিতো। এখন আর কেউ আমাকে ডাকে না। ভাইয়ের সন্ধান পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন ফেরদৌসী আক্তার আঁখি বলেন, আমরা আর পারছি না। আমাদের দিকে ফিরে তাকান। ছোট্ট ভাইয়ের চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ছোট্ট মেয়ে আরোয়া বাবাকে ফিরিয়ে আনতে বলে। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য। আজ নিজের সন্তানদের নিরাপত্তা নেই। সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন বলেন, এক বছর পার হয়ে গেল। আমি আর কিছু চাই না আমি আমার সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। অন্যান্য মায়ের সন্তানদেরও তাদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে একজন অসহায় মা হিসেবে ফরিয়াদ করছি। তিনি আরও বলেন, সরকার ইচ্ছা করলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমার সন্তানসহ অন্যান্য মায়ের সন্তানরা কোথায় আছে কিভাবে আছে তা বের করে দিতে পারে। জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সদস্য জাকিয়া বেগম, সুরক্ষা কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন। এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গুম হওয়া ৮ ব্যক্তির সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করে জাতীয় মানবাধিকার সমিতি। জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, লেবার পার্টির ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শামসুদ্দিন, তেজগাঁও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার মানববন্ধনে অংশ নেন।
মাজহারুল ইসলাম রাসেলের বোন লাবণী আক্তার বলেন, আদরের ছোট ভাই রাসেল মেধাবী ছাত্র। জানি না তার কি অপরাধ। মা বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। বাবা অস্বাভাকি আচরণ করছেন। এমন জীবন চাই না। পৃথিবীতে কেন জন্ম নিলাম? ফজরের নামাজের আগে ঘুম থেকে উঠে মা কান্না শুরু করেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাবার কান্না শুনতে পাই। এত কষ্ট কিভাবে সহ্য করি। প্রতিটি মুহূর্ত আমরা অপেক্ষা করি। আর কত অপেক্ষা করতে হবে জানি না। আসাদুজ্জামান রানার বোন মিনারা বেগম বলেন, এক বছর পূর্ণ হলো। আমরা জানতে পারলাম না আমাদের ভাই কোথায়। অনেক কষ্ট করে রানা পড়ালেখা করেছে। তার ইচ্ছে ছিল বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেবে। মা যখন রানার কথা জিজ্ঞেস করে তখন কোন উত্তর দিতে পারি না। এ ঘটনা জানলে কোন গ্রামের ছেলে আর ঢাকায় পড়ালেখা করতে আসবে না। অনেক বলেছি। মনে হয় এসব কথা প্রধানমন্ত্রীর কানে যায় না। আমাদের ভাগ্যে কি হয়েছে তা-ও জানি না। সঠিক সংবাদ জানতে চাই। আর কতকাল আমরা কাঁদবো? সাজেদুল ইসলাম সুমনের ৪ বছরের শিশুকন্যা আরোয়া ও ৯ বছরের রাইয়া প্রেস ক্লাবে এসেছিল বাবাকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি নিয়ে। তাদের মুখে একটাই কথা, বাবাকে ফিরিয়ে পেতে চাই। বাবাকে এনে দাও। মাসুমের মা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাসুমের জন্ম ১৬ই ডিসেম্বর। গত বছরের ৪ঠা ডিসেম্বর বাসা থেকে বের হওয়ার আগে তাকে বারণ করেছিলাম বাইরে না যাওয়ার জন্য। সে বলেছিল, মা আমি চোর না, সন্ত্রাসী না। আমি কেন ফিরবো না? ছেলের জন্য ঘুরে বেড়াই। কোন হদিস পাই না। কি অপরাধ তাদের? সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়ার কারণে কোন কথাই বলতে পারছিলেন না আদনান চৌধুরীর মা কানিজ ও শাহীনবাগের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কাওসার আহমেদের মা কমলা আক্তার। কাওসারের মা শুধু বিলাপ করছিলেন, ছেলেকে হারিয়ে আমি এখন রাস্তার ভিখারি। আমার ছেলেকে একটু দেখতে চাই। জাহিদুল কবির তানভীরের মা নিলুফা বেগম পুুতুল বলেন, আমার ছেলে ফজরের নামাজের সময় ডেকে দিতো। এখন আর কেউ আমাকে ডাকে না। ভাইয়ের সন্ধান পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন ফেরদৌসী আক্তার আঁখি বলেন, আমরা আর পারছি না। আমাদের দিকে ফিরে তাকান। ছোট্ট ভাইয়ের চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ছোট্ট মেয়ে আরোয়া বাবাকে ফিরিয়ে আনতে বলে। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য। আজ নিজের সন্তানদের নিরাপত্তা নেই। সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন বলেন, এক বছর পার হয়ে গেল। আমি আর কিছু চাই না আমি আমার সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। অন্যান্য মায়ের সন্তানদেরও তাদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে একজন অসহায় মা হিসেবে ফরিয়াদ করছি। তিনি আরও বলেন, সরকার ইচ্ছা করলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমার সন্তানসহ অন্যান্য মায়ের সন্তানরা কোথায় আছে কিভাবে আছে তা বের করে দিতে পারে। জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সদস্য জাকিয়া বেগম, সুরক্ষা কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন। এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গুম হওয়া ৮ ব্যক্তির সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করে জাতীয় মানবাধিকার সমিতি। জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, লেবার পার্টির ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শামসুদ্দিন, তেজগাঁও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার মানববন্ধনে অংশ নেন।
No comments