দুদকের ভূমিকাই দুর্নীতিকে উসকে দিচ্ছে
ট্রান্সপারেন্সি
ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক’ প্রত্যাখ্যান করার কোনো
সুযোগ নেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। আর প্রত্যাখ্যান করে দুদক দেশে
দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার বাস্তবতাকেই অস্বীকার করেছে। এটি দুদকের প্রকৃত কাজও
নয়। দুর্নীতিবিরোধী একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের দায়িত্ব
দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার কারণ চিহ্নিত করাসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে
অনুসন্ধান ও তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা। অথচ দেখা গেছে,
যাদের বিষয়ে দুর্নীতিবাজ হিসেবে দেশের বেশিরভাগ মানুষের পারসেপশন (ধারণা)
রয়েছে তাদের দুদক একে একে সততার সার্টিফিকেট দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে এবং এ
প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। বাস্তবে দুদকের এই অবস্থান বা ভূমিকাই দুর্নীতিকে
এক অর্থে উসকে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও
বিশ্লেষক যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেন। দেশে দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে
যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন,
দুদক এখন দায়মুক্তির সনদ বিতরণ করছে। নিজেই একবার কিছু লোককে ‘দুর্নীতিবাজ’
হিসেবে চিহ্নিত করছে আবার নিজেই তাদের পরে দায়মুক্তির সনদ দিচ্ছে। কিছুদিন
হম্বিতম্বি করে শেষ বিচারে দেখা গেল তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এটি দুদকের
কাজ নয়।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। যে কারণে এই আইন দিয়ে দুদক একটি দুর্নীতির মামলাও চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। আসলে দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে নয়-রাজনীতি দমনেই কাজ করছে দুদক। পলিটিক্যালি ভিক্টিমাইজ করা হচ্ছে। লক্ষ্য করুন, সরকার বলছে- রফিক উল হক দুর্নীতিবাজ- তাকে ধর। দুদক ধরছে। আবার দেখুন, ইদানীং সরকারদলীয় লোকদের দায়মুক্তি দিচ্ছে। অর্থাৎ দুদকের উদ্দেশ্যের মাঝেই দুর্নীতি নিহিত।’
রফিক উল হক আরও বলেন, ‘টিআই’র সূচক প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দুদকের নেই। তাদের উচিত বাস্তবতাকে অস্বীকার না করে দায়িত্বের সঙ্গে দুর্নীতি অনুসন্ধান ও তদন্ত করা। প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় শাস্তি নিশ্চিত করা।’
বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘টিআই’র ধারণা সূচক সম্পর্কে দুদকের এ প্রতিক্রিয়া অনভিপ্রেত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দুদকের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। করেছে দুর্নীতি সম্পর্কে এবং শুধু বাংলাদেশ নিয়ে নয়- ১৭৫টি দেশের ওপর সমীক্ষা করে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আসলে দুদক সরকারি দলের নেতাদের মতোই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এ ধরনের প্রতিক্রিয়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণœ করবে।’
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘দুদক টিআই’র ধারণা সূচক প্রত্যাখ্যান করতেই পারে। এটি তার বাক স্বাধীনতার অংশ। কিন্তু সূচকে দু’ধাপ নেমে যাওয়ার কাৃরণ হিসেবে আমার মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময় সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের দায়মুক্তি, সরকারদলীয় ব্যক্তিরা দুর্নীতি করলে যে কোনো জবাবদিহিতা নেই- এ ধারণাতো নিঃসন্দেহে আমাদের দিয়েছে। ইদানীং নির্বাচনের হলফনামায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য দেয়ার পরও দুদক থেকে দায়মুক্তি পাওয়ার মতো ঘটনায় শুধু দুই ধাপ কেন- আরও কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেলেও আমি অবাক হতাম না।’
অবনমিত ধারণা সূচক সম্পর্কে সরকার এবং দুদকের প্রতিক্রিয়া একই রকম হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘দুদক সরকারের নিয়ন্ত্রণে নয়’- এ কথা বলার সুযোগ নেই। বরং বলা যায়, দুর্নীতি দমন ব্যুরো থাকাকালে সংস্থাটি যেমন সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল- এখনও তাই আছে।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। যে কারণে এই আইন দিয়ে দুদক একটি দুর্নীতির মামলাও চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। আসলে দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে নয়-রাজনীতি দমনেই কাজ করছে দুদক। পলিটিক্যালি ভিক্টিমাইজ করা হচ্ছে। লক্ষ্য করুন, সরকার বলছে- রফিক উল হক দুর্নীতিবাজ- তাকে ধর। দুদক ধরছে। আবার দেখুন, ইদানীং সরকারদলীয় লোকদের দায়মুক্তি দিচ্ছে। অর্থাৎ দুদকের উদ্দেশ্যের মাঝেই দুর্নীতি নিহিত।’
রফিক উল হক আরও বলেন, ‘টিআই’র সূচক প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দুদকের নেই। তাদের উচিত বাস্তবতাকে অস্বীকার না করে দায়িত্বের সঙ্গে দুর্নীতি অনুসন্ধান ও তদন্ত করা। প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় শাস্তি নিশ্চিত করা।’
বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘টিআই’র ধারণা সূচক সম্পর্কে দুদকের এ প্রতিক্রিয়া অনভিপ্রেত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দুদকের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। করেছে দুর্নীতি সম্পর্কে এবং শুধু বাংলাদেশ নিয়ে নয়- ১৭৫টি দেশের ওপর সমীক্ষা করে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আসলে দুদক সরকারি দলের নেতাদের মতোই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এ ধরনের প্রতিক্রিয়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণœ করবে।’
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘দুদক টিআই’র ধারণা সূচক প্রত্যাখ্যান করতেই পারে। এটি তার বাক স্বাধীনতার অংশ। কিন্তু সূচকে দু’ধাপ নেমে যাওয়ার কাৃরণ হিসেবে আমার মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময় সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের দায়মুক্তি, সরকারদলীয় ব্যক্তিরা দুর্নীতি করলে যে কোনো জবাবদিহিতা নেই- এ ধারণাতো নিঃসন্দেহে আমাদের দিয়েছে। ইদানীং নির্বাচনের হলফনামায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য দেয়ার পরও দুদক থেকে দায়মুক্তি পাওয়ার মতো ঘটনায় শুধু দুই ধাপ কেন- আরও কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেলেও আমি অবাক হতাম না।’
অবনমিত ধারণা সূচক সম্পর্কে সরকার এবং দুদকের প্রতিক্রিয়া একই রকম হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘দুদক সরকারের নিয়ন্ত্রণে নয়’- এ কথা বলার সুযোগ নেই। বরং বলা যায়, দুর্নীতি দমন ব্যুরো থাকাকালে সংস্থাটি যেমন সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল- এখনও তাই আছে।
No comments