সংঘর্ষের জন্য শাবি প্রশাসনকে দায়ী করলেন সিনিয়র শিক্ষকরা by ওয়েছ খছরু
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের গুলি বিনিময় ও ছাত্রলীগ নেতা সুমন হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সিনিয়র শিক্ষকরা। এ ঘটনায় শাবি প্রশাসনের নগ্ন চেহারা ফুটে উঠেছে দাবি করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা শাবি প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন। সিনিয়র শিক্ষকরা দাবি করেছেন, ২০শে নভেম্বরের ঘটনার মতো শাবির ইতিহাসে কখনও এরকম ঘটনা ঘটেনি। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই এই সংঘর্ষের দায় এড়াতে পারে না। বৃহস্পতিবার মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক ফোরাম-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিমের নেতৃত্বে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভুইয়ার কার্যালয়ে দেখা করে এ স্মারকলিপি দেয়। স্মারকলিপিতে উল্লিখিত দাবিগুলো হচ্ছে, ঘটনার পরে প্রক্টরিয়াল বডির যে সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আগে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করা, সংঘর্ষের দিন প্রশাসনিক ভবনে কারা অস্ত্র রেখেছে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা ও যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা, মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ করা, বহিঃশক্তি যেন ক্যাম্পাসে অপপ্রচার চালাতে সাহস না পায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা। স্মারকলিপিতে তারা বলেন, গত ২০শে নভেম্বর শাবির ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু’টি বিবদমান গ্রুপের মধ্যে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় তা অত্যন্ত নিন্দনীয়, যার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনভাবেই এড়াতে পারে না। শাবি ইতিহাসে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি কখনও সৃষ্টি হয়নি। মিডিয়ার কল্যাণে শাবিপ্রবি পরিবারের সদস্য ও দেশবাসী সেদিন বিভীষিকাময় পরিস্থিতি অবলোকন করেছে। বরাবরের মতো প্রশাসনের উদ্দেশ্যমূলক নির্লিপ্ততা দেখে আমরা বিস্ময়ে হতবাক হয়েছি। দিনের বেলায় বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক হল দখল এবং ২য় পর্বে আর এক গ্রুপ বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে এবং ক্যাম্পাসজুড়ে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়েছে অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কতিপয় স্বার্থান্বেষীর প্রত্যক্ষ মদত ও ইন্ধনে হল ও ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তারকরণে ছাত্রলীগকে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্তিকরণ, পছন্দের গ্রুপকে মদত দান, অপছন্দের গ্রুপকে নাজেহাল কিংবা বহিষ্কার বা কোণঠাসা করে রাখা মদতপুষ্ট গ্রুপের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার না করা ইত্যাদির ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নগ্ন চেহারা অবলোকন করেই সন্ত্রাসীরা বাধাহীনভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যক্কারজনক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, জীবন দিতে হয়েছে, একজনকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে অনেককেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থায় দীর্ঘ সেশনজটের কবলে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. আশরাফ, অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল, অধ্যাপক ড. ইসমাইল, অধ্যাপক ড. তাজউদ্দিন, নজরুল ইসলাম, মোখলেছুর রহমান, সুমন আকন্দ, সাহাবুল হক প্রমুখ।
No comments