সাধু সাবধান! by মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় সেদিন এটিএন নিউজের NEWS HOUR EXTRA দেখছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আআমস আরেফিন সিদ্দিকসহ অনুষ্ঠানে কয়েকজন সাংবাদিক বক্তব্য রেখেছেন। একপর্যায়ে ‘এই সময়’ পত্রিকার সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন যা বললেন তা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম সম্পর্কে যেভাবে তিনি ‘ওনাকে খুশি করতে পারলেই কাজ হয়ে যায়, অর্থ দিলে তিনি খুশি হন, তিনি অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, টাকার বিনিময়ে পোস্টিং দেন,’ ইত্যাদি কথা অবলীলায় বলে গেলেন, তা শুনে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার অবস্থা। এইচটি ইমাম উপরোক্ত দুষ্কর্মগুলোতে জড়িত কি-না জানি না, তবে বক্তা কিন্তু চটপট বলে দিলেন, চাইলে তিনি প্রমাণ দিতে পারবেন।
অতঃপর বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করে দেখলাম এসব বলার জেরে তার কাছে কোনো প্রমাণ চাওয়া হয় কি-না? কারণ যার বিরুদ্ধে এসব বলা হল তিনি যেনতেন ব্যক্তি নন, খোদ প্রধানমন্ত্রীর একান্ত কাছের লোক। সুতরাং প্রমাণ ছাড়া এটিএন নিউজের অমন একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলে পার পাবেন এমনটি ভাবি কী করে? আমরাও তাই মনে করলাম, সম্পাদক সাহেবের কাছে এসবের তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হবে। কিন্তু এতদিনেও এ বিষয়ে কেউ তেমন কোনো উচ্চবাচ্য করেছেন, তেমনটি লক্ষ্য করা গেল না। অথচ সেদিন যেসব কথা উঠেছে বা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত ভয়ংকর। কোনোক্রমেই তা উপেক্ষার যোগ্য নয়। দেশের এক নম্বর ক্ষমতাধর ব্যক্তির উপদেষ্টার বিরুদ্ধে এমন সব মারাত্মক দুর্নীতির খবর টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে, আর দলীয় হাইকমান্ডের কেউ তা দেখেননি বা শোনেননি, এমনটিও নয়। এইচটি ইমামের এসব দুর্নীতির খবর যে তৎক্ষণাৎ দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে একথাও ঠিক। এ ঘটনার আগে-পরেও তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ শিরোনাম হওয়ায় এসব অভিযোগ জনগণ বিশ্বাসও করছেন। সরকারের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শক্তি তাকে নিজেদের লোক বলেও আখ্যায়িত করেছে। অবশ্য সেদিনের সে আলোচনায় অন্য একজন সাংবাদিক বলেছেন, ইমাম সাহেবের যথেষ্ট বয়স হয়েছে। অর্থাৎ বয়সের কারণে তিনি কথাবার্তায় ভারসাম্য রাখতে পারছেন না। কিন্তু অর্থ লেনদেনের বিষয়ে আরিফুর রহমান দোলন যা বললেন, সে বিষয়টি তো আর বয়স দিয়ে ঢাকা যাবে না। এ ক্ষেত্রে জনাব ইমামের উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে সেদিন এটিএন নিউজে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়গুলো ভুল প্রমাণ করা। অন্যথায় এতবড়, এত বেশি অপবাদ মাথায় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পদে আসীন থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলেই আমাদের ধারণা। মনে করা প্রয়োজন, এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা কোনো রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে আসেনি, এসেছে একজন পত্রিকা সম্পাদকের মুখ থেকে। এ অবস্থায় জনগণ এ বিষয়ে সরকারের মুখ থেকেও কিছু শুনতে চান। সরকারেরও এ বিষয়ে মুখ খোলা উচিত। জনাব ইমাম এ নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। কারণ একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির সুস্পষ্ট সংবাদ প্রচারিত হবে আর সরকারের হাইকমান্ড কানে তুলো গুঁজে বসে থাকবেন, এটাও বোধহয় ঠিক নয়। সরকারি দলকে মনে রাখতে হবে- আজ হোক, কাল হোক, নির্বাচনের সময় তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। আর সে সময় এসব ঘটনাই সামনে চলে আসবে। অতএব সাধু সাবধান!
মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : রাজনীতিক, কলাম লেখক
অতঃপর বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করে দেখলাম এসব বলার জেরে তার কাছে কোনো প্রমাণ চাওয়া হয় কি-না? কারণ যার বিরুদ্ধে এসব বলা হল তিনি যেনতেন ব্যক্তি নন, খোদ প্রধানমন্ত্রীর একান্ত কাছের লোক। সুতরাং প্রমাণ ছাড়া এটিএন নিউজের অমন একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলে পার পাবেন এমনটি ভাবি কী করে? আমরাও তাই মনে করলাম, সম্পাদক সাহেবের কাছে এসবের তথ্য-প্রমাণ চাওয়া হবে। কিন্তু এতদিনেও এ বিষয়ে কেউ তেমন কোনো উচ্চবাচ্য করেছেন, তেমনটি লক্ষ্য করা গেল না। অথচ সেদিন যেসব কথা উঠেছে বা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত ভয়ংকর। কোনোক্রমেই তা উপেক্ষার যোগ্য নয়। দেশের এক নম্বর ক্ষমতাধর ব্যক্তির উপদেষ্টার বিরুদ্ধে এমন সব মারাত্মক দুর্নীতির খবর টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে, আর দলীয় হাইকমান্ডের কেউ তা দেখেননি বা শোনেননি, এমনটিও নয়। এইচটি ইমামের এসব দুর্নীতির খবর যে তৎক্ষণাৎ দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে একথাও ঠিক। এ ঘটনার আগে-পরেও তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সংবাদ শিরোনাম হওয়ায় এসব অভিযোগ জনগণ বিশ্বাসও করছেন। সরকারের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শক্তি তাকে নিজেদের লোক বলেও আখ্যায়িত করেছে। অবশ্য সেদিনের সে আলোচনায় অন্য একজন সাংবাদিক বলেছেন, ইমাম সাহেবের যথেষ্ট বয়স হয়েছে। অর্থাৎ বয়সের কারণে তিনি কথাবার্তায় ভারসাম্য রাখতে পারছেন না। কিন্তু অর্থ লেনদেনের বিষয়ে আরিফুর রহমান দোলন যা বললেন, সে বিষয়টি তো আর বয়স দিয়ে ঢাকা যাবে না। এ ক্ষেত্রে জনাব ইমামের উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে সেদিন এটিএন নিউজে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়গুলো ভুল প্রমাণ করা। অন্যথায় এতবড়, এত বেশি অপবাদ মাথায় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পদে আসীন থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলেই আমাদের ধারণা। মনে করা প্রয়োজন, এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কথা কোনো রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে আসেনি, এসেছে একজন পত্রিকা সম্পাদকের মুখ থেকে। এ অবস্থায় জনগণ এ বিষয়ে সরকারের মুখ থেকেও কিছু শুনতে চান। সরকারেরও এ বিষয়ে মুখ খোলা উচিত। জনাব ইমাম এ নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। কারণ একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির সুস্পষ্ট সংবাদ প্রচারিত হবে আর সরকারের হাইকমান্ড কানে তুলো গুঁজে বসে থাকবেন, এটাও বোধহয় ঠিক নয়। সরকারি দলকে মনে রাখতে হবে- আজ হোক, কাল হোক, নির্বাচনের সময় তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। আর সে সময় এসব ঘটনাই সামনে চলে আসবে। অতএব সাধু সাবধান!
মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : রাজনীতিক, কলাম লেখক
No comments