মানুষের নির্মমতা দেখল কচ্ছপ! by আব্দুল কুদ্দুস
বহু বছর আগে মিয়ানমার থেকে বৌদ্ধ সাধকদের আনা সোনালি কচ্ছপগুলোও রেহাই পায়নি সাম্প্র্রদায়িক তাণ্ডব থেকে। লালচিং ও সাদাচিং মন্দির প্রাঙ্গণে ডেরাবাঁধা বেশির ভাগ সোনালি কচ্ছপ ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছে। বেঁচে যাওয়া কচ্ছপগুলো এখন মানুষকে ভয় পায়।
‘ছোটবেলা থেকে এই কচ্ছপ দেখছি। মন্দিরে ঘোরাফেরা করত বলে এর নাম দেওয়া হয় ঠাকুর কচ্ছপ। মানুষ দেখলেই কচ্ছপগুলো ঝোপ-জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসত। আর এখন মানুষ দেখলে দৌড়ে পালায়। মন্দিরে আগুন দেওয়ার পর অনেক কচ্ছপ পুড়ে মরেছে।’
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের রামুর শ্রীকুল গ্রামের লালচিং বৌদ্ধমন্দির প্রাঙ্গণে হাইটুপী গ্রামের গৃহবধূ রিংকু বড়ুয়া (৪০) কথাগুলো বলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধ্বংস হওয়া বৌদ্ধমন্দির দেখতে এসেছিলেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হঠাৎ দেখতে পান একটি আহত মা কচ্ছপ। অগ্নিদগ্ধ কচ্ছপটি দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
আহত কচ্ছপটির হাঁটাচলার শক্তিও ছিল না। ৩০০ বছরের বৌদ্ধমন্দিরের বহু ঐতিহ্যের সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে ঠাকুর কচ্ছপের আবাসস্থলও।
মন্দিরে আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে শ্রীকুলের এই লালচিং বৌদ্ধমন্দিরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মন্দির প্রাঙ্গণে থাকা বহু কচ্ছপ মারা যায়। অগ্নিদগ্ধ একাধিক কচ্ছপ এখনো মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
লালচিং মন্দিরের ভিক্ষু ওয়েছেকা ছারা মহাথেরো (৮৭) বলেন, ‘কয়েকজন বৌদ্ধ সাধক বহু আগে মিয়ানমার থেকে এসব কচ্ছপ এখানে নিয়ে আসেন। ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আগুনে বেশ কিছু কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারীদের অনেকে লাঠি দিয়েও কচ্ছপ মেরেছে। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে রক্তাক্ত কচ্ছপ পড়ে থাকতে দেখেছি। মানুষের হিংসা থেকে নিরীহ কচ্ছপগুলোও রক্ষা পায়নি।’
স্থানীয় লোকজন জানান, ঠাকুর কচ্ছপকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ ‘লক্ষ্মী’ মনে করেন। অনেকে পূজা করেন এই কচ্ছপকে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লালচিং মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে রক্তাক্ত বেশ কয়েকটি ঠাকুর কচ্ছপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মৃত একটি কচ্ছপের গায়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এটির ওজন প্রায় তিন কেজি।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বঙ্কিম বড়ুয়া জঙ্গল থেকে আড়াই কেজি ওজনের একটি ঠাকুর কচ্ছপ ধরে এনে বলেন, ‘এই কচ্ছপটিও আগুনে পুড়ে আহত হয়েছে। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছে না। এটির বয়স কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ বছর হবে। ১০০ থেকে ২০০ বছর বয়সী কচ্ছপও এখানে ছিল। এখন কচ্ছপগুলো দেখছি না।’
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুকুমার বড়ুয়া (৪৬) বলেন, ‘গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে সাত-আটটি কচ্ছপের ডিম থেকে প্রচুর বাচ্চা ফুটেছে। কয়েক মাস বয়সী এই বাচ্চাগুলোকে মন্দিরের পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। সাম্প্রতিক মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশির ভাগ বাচ্চা কচ্ছপ মারা গেছে। আহত কচ্ছপগুলো ঝোপ-জঙ্গল থেকে বেরোনোর সাহস পাচ্ছে না। মানুষকে আর কচ্ছপগুলো নিরাপদ মনে করছে না।’
সাদাচিং মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের পাশে বসে আহত একটি মা কচ্ছপের ক্ষতস্থান দেখাচ্ছিলেন কক্সবাজার থেকে আসা একজন নারী দর্শনার্থী। আগুনে কচ্ছপটির দুই পা পুড়ে গেছে। ঝলসে গেছে বুক। কচ্ছপটি দেখিয়ে ওই নারী বললেন, ‘এই অবুঝ কচ্ছপটি কী অপরাধ করেছিল? এটিকে আগুনে পুড়ে মরার যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে কেন?’ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে এল কণ্ঠ। আর কিছু বলতে পারলেন না তিনি। শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে নিঃশব্দে কেবল কাঁদতে থাকলেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের রামুর শ্রীকুল গ্রামের লালচিং বৌদ্ধমন্দির প্রাঙ্গণে হাইটুপী গ্রামের গৃহবধূ রিংকু বড়ুয়া (৪০) কথাগুলো বলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধ্বংস হওয়া বৌদ্ধমন্দির দেখতে এসেছিলেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হঠাৎ দেখতে পান একটি আহত মা কচ্ছপ। অগ্নিদগ্ধ কচ্ছপটি দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
আহত কচ্ছপটির হাঁটাচলার শক্তিও ছিল না। ৩০০ বছরের বৌদ্ধমন্দিরের বহু ঐতিহ্যের সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে ঠাকুর কচ্ছপের আবাসস্থলও।
মন্দিরে আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে শ্রীকুলের এই লালচিং বৌদ্ধমন্দিরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মন্দির প্রাঙ্গণে থাকা বহু কচ্ছপ মারা যায়। অগ্নিদগ্ধ একাধিক কচ্ছপ এখনো মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে।
লালচিং মন্দিরের ভিক্ষু ওয়েছেকা ছারা মহাথেরো (৮৭) বলেন, ‘কয়েকজন বৌদ্ধ সাধক বহু আগে মিয়ানমার থেকে এসব কচ্ছপ এখানে নিয়ে আসেন। ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আগুনে বেশ কিছু কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারীদের অনেকে লাঠি দিয়েও কচ্ছপ মেরেছে। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে রক্তাক্ত কচ্ছপ পড়ে থাকতে দেখেছি। মানুষের হিংসা থেকে নিরীহ কচ্ছপগুলোও রক্ষা পায়নি।’
স্থানীয় লোকজন জানান, ঠাকুর কচ্ছপকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ ‘লক্ষ্মী’ মনে করেন। অনেকে পূজা করেন এই কচ্ছপকে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লালচিং মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে রক্তাক্ত বেশ কয়েকটি ঠাকুর কচ্ছপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মৃত একটি কচ্ছপের গায়ে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এটির ওজন প্রায় তিন কেজি।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বঙ্কিম বড়ুয়া জঙ্গল থেকে আড়াই কেজি ওজনের একটি ঠাকুর কচ্ছপ ধরে এনে বলেন, ‘এই কচ্ছপটিও আগুনে পুড়ে আহত হয়েছে। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছে না। এটির বয়স কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ বছর হবে। ১০০ থেকে ২০০ বছর বয়সী কচ্ছপও এখানে ছিল। এখন কচ্ছপগুলো দেখছি না।’
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুকুমার বড়ুয়া (৪৬) বলেন, ‘গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে সাত-আটটি কচ্ছপের ডিম থেকে প্রচুর বাচ্চা ফুটেছে। কয়েক মাস বয়সী এই বাচ্চাগুলোকে মন্দিরের পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। সাম্প্রতিক মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেশির ভাগ বাচ্চা কচ্ছপ মারা গেছে। আহত কচ্ছপগুলো ঝোপ-জঙ্গল থেকে বেরোনোর সাহস পাচ্ছে না। মানুষকে আর কচ্ছপগুলো নিরাপদ মনে করছে না।’
সাদাচিং মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের পাশে বসে আহত একটি মা কচ্ছপের ক্ষতস্থান দেখাচ্ছিলেন কক্সবাজার থেকে আসা একজন নারী দর্শনার্থী। আগুনে কচ্ছপটির দুই পা পুড়ে গেছে। ঝলসে গেছে বুক। কচ্ছপটি দেখিয়ে ওই নারী বললেন, ‘এই অবুঝ কচ্ছপটি কী অপরাধ করেছিল? এটিকে আগুনে পুড়ে মরার যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে কেন?’ বাষ্পরুদ্ধ হয়ে এল কণ্ঠ। আর কিছু বলতে পারলেন না তিনি। শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে নিঃশব্দে কেবল কাঁদতে থাকলেন।
No comments