থমকে আছে ‘ভৌগোলিক নির্দেশক’ আইনের উদ্যোগ- হাতছাড়া হবে জামদানি, নকশিকাঁথা আর ফজলি আম? by পার্থ শঙ্কর সাহা
‘না, না। দুনিয়ার সবাই জানে, জামদানি বাংলাদেশের শাড়ি। অন্য কেউ এর মালিক হতে পারে না। আমরা এটা মানব না।’ মুঠোফোনে প্রায় চিৎকার করে কথাটা বললেন মো. হামিদউল্লাহ। নারায়ণগঞ্জের দক্ষিণ রূপসীর বাসিন্দা হামিদউল্লাহর পরিবার কয়েক পুরুষ ধরে জামদানি শাড়ি তৈরি ও এর ব্যবসা করে।
হামিদউল্লাহকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের অতিপরিচিত জামদানি শাড়ি সারা বিশ্বে ভারতীয় পণ্য হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। তাতেই তাঁর এমন প্রতিক্রিয়া।
শুধু জামদানি শাড়ি নয়, বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম উপাদান নকশিকাঁথা আর সুপরিচিত ফজলি আমও চিহ্নিত হতে যাচ্ছে ভারতের পণ্য হিসেবে। কারণ, আন্তর্জাতিক এক চুক্তির আওতায় ‘ভৌগোলিক নির্দেশক’ (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশনস) আইন করে পণ্য তিনটির পেটেন্ট বা স্বত্ব নিজেদের হিসেবে নিবন্ধন করেছে ভারত। এতে পণ্যগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, দর-কষাকষি থেকে শুরু করে মেধাস্বত্ব লাভ করার পথ উন্মুক্ত হয়েছে দেশটির জন্য।
যেভাবে পণ্যের স্বত্ব স্থির হয়: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তির একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি-প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক, মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে, তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে। ভারত ১৯৯৯ সালেই আইনটি করে ফেলে। এরপর দেশটি বাংলাদেশের এই তিনটি ঐতিহ্যবাহী পণ্যের নিবন্ধন করে।
বাংলাদেশের অবস্থা: ‘ভৌগোলিক নির্দেশক’ আইনের খসড়া এখনো মতামতের অপেক্ষায় ওয়েবসাইটে ঝুলছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ২০০৮ সাল থেকে এ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
আইনটি কার্যকর করার দাবিতে আন্দোলন করছে ‘বিল্ড বেটার বাংলাদেশ’ (বি-কিউব) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর সাধারণ সম্পাদক বিপাশা মতিন ক্ষোভ জানিয়ে প্রথম আলোকে বললেন, ‘জামদানি, নকশিকাঁথা আর ফজলির পর তবে কি আমাদের আরেক গর্ব বেঙ্গল টাইগারও ভারতীয় টাইগার নামে নিবন্ধিত হবে?’
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া স্বীকার করেছেন, আইনটি করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জাতীয় সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনেই আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হবে। ১০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদে বি-কিউব আয়োজিত এক সভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
খসড়ার ‘দুর্বলতা’: আইনটির খসড়ার দুর্বলতা অনেক বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বাংলা কেমিক্যালের নির্বাহী প্রধান এম এস সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের আইনটি বৈশ্বিক মানের নয়। খসড়ায় আসলে আমলাদের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। নিজেদের সম্পদ রক্ষা করার চেয়ে শাসন করার বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’
তিন ঐতিহ্যের ইতিকথা: প্রাচীনকালেই বাংলার সূক্ষ্ম বস্ত্রের খ্যাতি ছিল। জামদানির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে। ঢাকা অঞ্চলকে ঘিরে জামদানি তাঁতের প্রচলন এবং প্রসার ঘটে। আজ বাংলার এই প্রাচীন শিল্পের মালিকানা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের তাঁতিরা এবং দুটি নিবন্ধিত তাঁতি সংগঠন ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামে জামদানি শাড়ির নিবন্ধন করিয়েছে।
নকশিকাঁথা এখনো বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীন একে নাগরিক জীবন এবং পরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছিলেন তাঁর ১৯২৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ নক্সী কাঁথার মাঠ দিয়ে। আর দেশে রাজশাহীর ফজলি আমের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার কথা বলাই বাহুল্য।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রাজিয়া বেগম বলেন, ‘কোনো বিচারেই এসব পণ্য ভারতীয় হতে পারে না। পণ্য তিনটির স্বত্ব ভারতের কাছে থাকলে এসবের অভ্যন্তরীণ ভোগ বা বিপণনে হয়তো সমস্যা হবে না, তবে রপ্তানি সমস্যার মধ্যে পড়বে।’
বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ভারতেই। ভারত এই শাড়ির স্বত্ব পেলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন জামদানি শাড়ির ব্যবসায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা। জামদানি উৎপাদনকারীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি এম আর মোস্তফা বলেন, ‘ভারত যখন কিছুদিন আগে উপ্পাদা জামদানি নিজেদের নামে নিবন্ধন করে, তখন আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা হয়তো অচিরেই এই পণ্য ভারতে রপ্তানিতে বাধার মুখে পড়ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতের এই নিবন্ধনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ আছে। বাসমতী চাল যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নামে নিবন্ধন করানোর পর এ নিয়ে মামলা হয়েছে। এর স্বত্ব এখন ভারত ও পাকিস্তানের পাওনা। তাই আমাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
কপিরাইট আইন বিশেষজ্ঞ তানজীব উল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত বা অন্য যে কেউ এ ধরনের পেটেন্টকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। কারণ, নকশিকাঁথা শুধু ভারতেই হয়, এমন ভাবা যৌক্তিক নয়। ফজলি আম বা জামদানি শাড়ির ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। আমাদের ঢাকাই শাড়ির ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। তাই আমরা যদি ঢাকাই জামদানি নামে আমাদের শাড়ির পেটেন্ট করি, তাহলে কারও কিছু করার নেই।’
এই বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায় কপিরাইট নিয়ে কাজ করা এনামুল হকের কথায়ও। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি ভিন্ন নাম দিয়ে জামদানি শাড়ি নিবন্ধন করিয়েছে। আমরা যদি আমাদের জামদানি ঢাকাই জামদানি হিসেবে নিবন্ধন করি, তবে সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না।’
তবে বিশেষজ্ঞদের সবাই একটি ব্যাপারে একমত। তা হলো, বিস্তর সময় নষ্ট হয়েছে। এখন দ্রুত আইনটি করা দরকার। নইলে আরও অনেক দেশি সম্পদ অন্যের নামে নিবন্ধিত হবে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা সব দেশজ পণ্য এবং প্রজাতির একটি তথ্যভান্ডারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তালিকা তৈরি করেই আইনের আওতায় নিবন্ধন শুরু করতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
শুধু জামদানি শাড়ি নয়, বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম উপাদান নকশিকাঁথা আর সুপরিচিত ফজলি আমও চিহ্নিত হতে যাচ্ছে ভারতের পণ্য হিসেবে। কারণ, আন্তর্জাতিক এক চুক্তির আওতায় ‘ভৌগোলিক নির্দেশক’ (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশনস) আইন করে পণ্য তিনটির পেটেন্ট বা স্বত্ব নিজেদের হিসেবে নিবন্ধন করেছে ভারত। এতে পণ্যগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, দর-কষাকষি থেকে শুরু করে মেধাস্বত্ব লাভ করার পথ উন্মুক্ত হয়েছে দেশটির জন্য।
যেভাবে পণ্যের স্বত্ব স্থির হয়: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তির একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩(খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি-প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক, মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে, তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে। ভারত ১৯৯৯ সালেই আইনটি করে ফেলে। এরপর দেশটি বাংলাদেশের এই তিনটি ঐতিহ্যবাহী পণ্যের নিবন্ধন করে।
বাংলাদেশের অবস্থা: ‘ভৌগোলিক নির্দেশক’ আইনের খসড়া এখনো মতামতের অপেক্ষায় ওয়েবসাইটে ঝুলছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ২০০৮ সাল থেকে এ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
আইনটি কার্যকর করার দাবিতে আন্দোলন করছে ‘বিল্ড বেটার বাংলাদেশ’ (বি-কিউব) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর সাধারণ সম্পাদক বিপাশা মতিন ক্ষোভ জানিয়ে প্রথম আলোকে বললেন, ‘জামদানি, নকশিকাঁথা আর ফজলির পর তবে কি আমাদের আরেক গর্ব বেঙ্গল টাইগারও ভারতীয় টাইগার নামে নিবন্ধিত হবে?’
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া স্বীকার করেছেন, আইনটি করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জাতীয় সংসদের আগামী শীতকালীন অধিবেশনেই আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হবে। ১০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদে বি-কিউব আয়োজিত এক সভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
খসড়ার ‘দুর্বলতা’: আইনটির খসড়ার দুর্বলতা অনেক বলে মনে করছেন কেউ কেউ। বাংলা কেমিক্যালের নির্বাহী প্রধান এম এস সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের আইনটি বৈশ্বিক মানের নয়। খসড়ায় আসলে আমলাদের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। নিজেদের সম্পদ রক্ষা করার চেয়ে শাসন করার বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’
তিন ঐতিহ্যের ইতিকথা: প্রাচীনকালেই বাংলার সূক্ষ্ম বস্ত্রের খ্যাতি ছিল। জামদানির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে। ঢাকা অঞ্চলকে ঘিরে জামদানি তাঁতের প্রচলন এবং প্রসার ঘটে। আজ বাংলার এই প্রাচীন শিল্পের মালিকানা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে। ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের তাঁতিরা এবং দুটি নিবন্ধিত তাঁতি সংগঠন ‘উপ্পাদা জামদানি’ নামে জামদানি শাড়ির নিবন্ধন করিয়েছে।
নকশিকাঁথা এখনো বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক ঘনিষ্ঠ অনুষঙ্গ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীন একে নাগরিক জীবন এবং পরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেছিলেন তাঁর ১৯২৯ সালে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ নক্সী কাঁথার মাঠ দিয়ে। আর দেশে রাজশাহীর ফজলি আমের পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার কথা বলাই বাহুল্য।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রাজিয়া বেগম বলেন, ‘কোনো বিচারেই এসব পণ্য ভারতীয় হতে পারে না। পণ্য তিনটির স্বত্ব ভারতের কাছে থাকলে এসবের অভ্যন্তরীণ ভোগ বা বিপণনে হয়তো সমস্যা হবে না, তবে রপ্তানি সমস্যার মধ্যে পড়বে।’
বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ভারতেই। ভারত এই শাড়ির স্বত্ব পেলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন জামদানি শাড়ির ব্যবসায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা। জামদানি উৎপাদনকারীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি এম আর মোস্তফা বলেন, ‘ভারত যখন কিছুদিন আগে উপ্পাদা জামদানি নিজেদের নামে নিবন্ধন করে, তখন আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা হয়তো অচিরেই এই পণ্য ভারতে রপ্তানিতে বাধার মুখে পড়ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতের এই নিবন্ধনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ আছে। বাসমতী চাল যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নামে নিবন্ধন করানোর পর এ নিয়ে মামলা হয়েছে। এর স্বত্ব এখন ভারত ও পাকিস্তানের পাওনা। তাই আমাদেরও হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
কপিরাইট আইন বিশেষজ্ঞ তানজীব উল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত বা অন্য যে কেউ এ ধরনের পেটেন্টকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। কারণ, নকশিকাঁথা শুধু ভারতেই হয়, এমন ভাবা যৌক্তিক নয়। ফজলি আম বা জামদানি শাড়ির ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। আমাদের ঢাকাই শাড়ির ঐতিহ্য অনেক পুরোনো। তাই আমরা যদি ঢাকাই জামদানি নামে আমাদের শাড়ির পেটেন্ট করি, তাহলে কারও কিছু করার নেই।’
এই বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যায় কপিরাইট নিয়ে কাজ করা এনামুল হকের কথায়ও। তিনি বলেন, ‘ভারত একটি ভিন্ন নাম দিয়ে জামদানি শাড়ি নিবন্ধন করিয়েছে। আমরা যদি আমাদের জামদানি ঢাকাই জামদানি হিসেবে নিবন্ধন করি, তবে সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না।’
তবে বিশেষজ্ঞদের সবাই একটি ব্যাপারে একমত। তা হলো, বিস্তর সময় নষ্ট হয়েছে। এখন দ্রুত আইনটি করা দরকার। নইলে আরও অনেক দেশি সম্পদ অন্যের নামে নিবন্ধিত হবে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা সব দেশজ পণ্য এবং প্রজাতির একটি তথ্যভান্ডারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তালিকা তৈরি করেই আইনের আওতায় নিবন্ধন শুরু করতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।
No comments