টি-টোয়েন্টির গদ্য-ছন্দ by সানাউল হক খান
শক্তিপেশির খেলা নয়, তবু পেশিশক্তির প্রয়োজন, বড্ড প্রয়োজন! নইলে বাতাস ছিঁড়েফেঁড়ে, বেদম প্রহারে সাদা বলটাকে বেধড়ক আছড়ে মেরে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেয় কেউ? হ্যাঁ, দ্যায়। কেউ কেউ... টি-টোয়েন্টি বলেই কথা।
সঙ্গে স্কিল-টেকনিক আর শট-সিলেকশন—সে তো টি-টোয়েন্টিরই বাড়তি কর্মযজ্ঞ! ব্যাকরণবিধি মেনেই!
স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্র বলে: গেইল কি ক্রিকেটার? গোমড়ামুখো এক দজ্জাল, মায়াদয়াহীন হাতে ঈশা খাঁর তরবারি। ছয় ইনিংসে ১৬ ছক্কা! বোলার পেলেই হলো, তাকে কুপিয়ে সাবাড় করাটা যার ফরজ কাজ। আর শেন ওয়াটসন? ওই শ্বেতাঙ্গটাই বা কম গ্যালো কিসে? বোনাসসমেত এই অলরাউন্ডার। গড় প্রায় ৫০ তো যেমন-তেমন, বল হাতেও কি কম গেলেন? একেই বলে কিনা সার্থক অলরাউন্ডার। ছয় ম্যাচে ১৭৬ রানের হাদিয়া-খরচায় ১১টি উইকেট, মাশা’ল্লাহ! কিন্তু না, কাজের কাজটা হলো না। ক্রিকেট-মাতবরির দিন শেষ? কে জানে!
তবে দিলশান-সাঙ্গাকারা-মাহেলার মুখের আলো এ-যাত্রায় অনেকটাই নিভন্ত উনুনের কয়লা। তাই বলে একেবারে ময়লা বলাটা ঠিক হবে না। তা না হলে ফাইনালটা খেলল কীভাবে? টি-টোয়েন্টি বলেই কথা? না মানি না, মানব না। মানতে বাধ্য এটুকুই: ‘আমার বধুঁয়া আনবাড়ি যায় আমারই আঙিনা দিয়া’: শ্লা’র ট্রফিটা নিয়েই গ্যালো ড্যারেন স্যামি! সত্যি করে বলো তো, মাহেলা—যারা ওদের ‘ডার্কহর্স’ বলেছিল, তাদের অনুমান কি লঙ্কার হনুমানেরা বুঝে উঠতে পেরেছিল? সেমিতে মাংস পাকালাম, ফাইনালে পোলাও রাঁধলাম: খাবারটা কি না খেয়ে গ্যালো ক্যারিবীয়রা? টি-টোয়েন্টি বলেই কথা? না, মানি না। গেইলকে শিকলে বাঁধলাম। কিন্তু স্যামুয়েলস? ম্যাচটাকে হাতছাড়া করতে দিল না তো দিলই না! নাচের কী বাহার! সাধে কি আর লোকে বলে, শ্বেতাঙ্গিনী-যূনী তরুণীদের প্রথম পছন্দ ‘স্ট্রং অ্যান্ড স্টাউট ব্ল্যাক’ ভালোবাসার গুল্লি মেরে ওরা ছোটে ‘ভালো লাগা’য় দলিত-মথিত হতে। হোটেলে-মোটেলে ধরা খেয়েছে তো কী হয়েছে? শোনোনি অতুল প্রসাদ: ‘পাগলা...আ...আ...মনটারে তুই বাঁধ’, কে কারে বাঁধে? ওসব ক্যামেরাম্যানের ধার ধারে কি শ্বেতাঙ্গিনী-যূনীরা? গেইল-স্যামুয়েলসরাও ওসবের তোয়াক্কা করে না;
ভালো কথা: পাকিদের প্যাঁকানি-প্যাঁক, আর প্যাঁক-প্যাঁকানিই বা কোথায় গেল? বুম বুম আফ্রিদি নামের ছোকরা কি ক্রিকেট নামের মানুষ না ‘মানুষ’ নামের ‘ক্রিকেট’, ব্যাটে-বলে এমন পল্টি খায়! কথায় বলে, বেশি বাড়ালে নরসুন্দরের চুলে কাঁচি পড়ে। ক্রিকেটকাতর মন জানে, খলবলে নদীর পানি কারা, কারাই বা ধোনিতে মাতোয়ারা! পাঁচ ইনিংসে মাত্র ৩০, সর্বাধিক ১৪? ছ্যাঁ-ছ্যাঁ-ছ্যাঁ-ছ্যাঁ! আর বল হাতে সেই শশব্যস্ত পাঠান যুবক এখন আর ‘পাঠান’ নয়: মিয়ার ব্যাটা ফেলু মিয়া বনে গ্যাছে
এবার নিজেদের চরকায় একটু তেল দিই: পাইবাসকে একটু বাইপাস করিয়ে আমাদের ব্যাটিংয়ের ব্লক-স্পটগুলো জেনে নিলে ক্যামন হয়? ‘সময় বহিয়া যায়’ যেভাবে উপবাসী ক্রিকেটের উদর পেয়েছিল জলযোগতৃপ্তি, ঠিক সেভাবেই খুঁজে ফিরি যেন রক্তের সঙ্গে ব্যাট-বল-বাউন্ডারির দীপ্তি: প্রশ্ন আর সন্দেহের মাঝপথে উঁকি মারা সাকিবের কীর্তি যদি আরও দু-চারজনের মধ্যে সঞ্চারিত না হয়, তা হলে বলতেই হয়: এখন তোমার শোয়াও যা, বসাও তা, আমাদের হাতিও যা, মশাও তা
আমি নিজের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে, চলতে চলতে বারবার পড়ছি পিছিয়ে, অতৃপ্তির মায়াজাল বিছিয়ে...
‘ক্রিকেট’ নামের শব্দটি অনন্তের সন্ধানে ছুটছে নানা ঘুরপাকে। পাইবাস জানে না তাকে।
স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্র বলে: গেইল কি ক্রিকেটার? গোমড়ামুখো এক দজ্জাল, মায়াদয়াহীন হাতে ঈশা খাঁর তরবারি। ছয় ইনিংসে ১৬ ছক্কা! বোলার পেলেই হলো, তাকে কুপিয়ে সাবাড় করাটা যার ফরজ কাজ। আর শেন ওয়াটসন? ওই শ্বেতাঙ্গটাই বা কম গ্যালো কিসে? বোনাসসমেত এই অলরাউন্ডার। গড় প্রায় ৫০ তো যেমন-তেমন, বল হাতেও কি কম গেলেন? একেই বলে কিনা সার্থক অলরাউন্ডার। ছয় ম্যাচে ১৭৬ রানের হাদিয়া-খরচায় ১১টি উইকেট, মাশা’ল্লাহ! কিন্তু না, কাজের কাজটা হলো না। ক্রিকেট-মাতবরির দিন শেষ? কে জানে!
তবে দিলশান-সাঙ্গাকারা-মাহেলার মুখের আলো এ-যাত্রায় অনেকটাই নিভন্ত উনুনের কয়লা। তাই বলে একেবারে ময়লা বলাটা ঠিক হবে না। তা না হলে ফাইনালটা খেলল কীভাবে? টি-টোয়েন্টি বলেই কথা? না মানি না, মানব না। মানতে বাধ্য এটুকুই: ‘আমার বধুঁয়া আনবাড়ি যায় আমারই আঙিনা দিয়া’: শ্লা’র ট্রফিটা নিয়েই গ্যালো ড্যারেন স্যামি! সত্যি করে বলো তো, মাহেলা—যারা ওদের ‘ডার্কহর্স’ বলেছিল, তাদের অনুমান কি লঙ্কার হনুমানেরা বুঝে উঠতে পেরেছিল? সেমিতে মাংস পাকালাম, ফাইনালে পোলাও রাঁধলাম: খাবারটা কি না খেয়ে গ্যালো ক্যারিবীয়রা? টি-টোয়েন্টি বলেই কথা? না, মানি না। গেইলকে শিকলে বাঁধলাম। কিন্তু স্যামুয়েলস? ম্যাচটাকে হাতছাড়া করতে দিল না তো দিলই না! নাচের কী বাহার! সাধে কি আর লোকে বলে, শ্বেতাঙ্গিনী-যূনী তরুণীদের প্রথম পছন্দ ‘স্ট্রং অ্যান্ড স্টাউট ব্ল্যাক’ ভালোবাসার গুল্লি মেরে ওরা ছোটে ‘ভালো লাগা’য় দলিত-মথিত হতে। হোটেলে-মোটেলে ধরা খেয়েছে তো কী হয়েছে? শোনোনি অতুল প্রসাদ: ‘পাগলা...আ...আ...মনটারে তুই বাঁধ’, কে কারে বাঁধে? ওসব ক্যামেরাম্যানের ধার ধারে কি শ্বেতাঙ্গিনী-যূনীরা? গেইল-স্যামুয়েলসরাও ওসবের তোয়াক্কা করে না;
ভালো কথা: পাকিদের প্যাঁকানি-প্যাঁক, আর প্যাঁক-প্যাঁকানিই বা কোথায় গেল? বুম বুম আফ্রিদি নামের ছোকরা কি ক্রিকেট নামের মানুষ না ‘মানুষ’ নামের ‘ক্রিকেট’, ব্যাটে-বলে এমন পল্টি খায়! কথায় বলে, বেশি বাড়ালে নরসুন্দরের চুলে কাঁচি পড়ে। ক্রিকেটকাতর মন জানে, খলবলে নদীর পানি কারা, কারাই বা ধোনিতে মাতোয়ারা! পাঁচ ইনিংসে মাত্র ৩০, সর্বাধিক ১৪? ছ্যাঁ-ছ্যাঁ-ছ্যাঁ-ছ্যাঁ! আর বল হাতে সেই শশব্যস্ত পাঠান যুবক এখন আর ‘পাঠান’ নয়: মিয়ার ব্যাটা ফেলু মিয়া বনে গ্যাছে
এবার নিজেদের চরকায় একটু তেল দিই: পাইবাসকে একটু বাইপাস করিয়ে আমাদের ব্যাটিংয়ের ব্লক-স্পটগুলো জেনে নিলে ক্যামন হয়? ‘সময় বহিয়া যায়’ যেভাবে উপবাসী ক্রিকেটের উদর পেয়েছিল জলযোগতৃপ্তি, ঠিক সেভাবেই খুঁজে ফিরি যেন রক্তের সঙ্গে ব্যাট-বল-বাউন্ডারির দীপ্তি: প্রশ্ন আর সন্দেহের মাঝপথে উঁকি মারা সাকিবের কীর্তি যদি আরও দু-চারজনের মধ্যে সঞ্চারিত না হয়, তা হলে বলতেই হয়: এখন তোমার শোয়াও যা, বসাও তা, আমাদের হাতিও যা, মশাও তা
আমি নিজের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে, চলতে চলতে বারবার পড়ছি পিছিয়ে, অতৃপ্তির মায়াজাল বিছিয়ে...
‘ক্রিকেট’ নামের শব্দটি অনন্তের সন্ধানে ছুটছে নানা ঘুরপাকে। পাইবাস জানে না তাকে।
No comments