জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান রাজনীতি by শামশাদ আহম্মেদ

আগামী সংসদ নির্বাচন আমাদের দুয়ারে খট্-খট্ করছে। পত্রিকায় দেখলাম সরকার আগাম নির্বাচনও দিতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে নির্বাচনের জন্য এখন থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। বিলম্বে হলেও ওবায়দুল কাদেরের মতো তরুণ, কর্মঠ, সত্যনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল মন্ত্রী পেয়েছি যার জন্য তিনি প্রশংসাযোগ্য।


বর্তমান মন্ত্রিসভায় মতিয়া চৌধুরী, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ব্যারিস্টার সফিক আহমেদসহ দু’একজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কর্তব্য পালন করে যাচ্ছেন। মোহাম্মদ নাসিম মন্ত্রী না হয়েও নিঃস্বার্থভাবে নিজ এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন এবং বোঝাতে চাচ্ছেন আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় প্রয়োজন কেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তোফায়েল আহমেদের মতো একজন ত্যাগী নেতা মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন নি। তার যদি অভিমান থাকে তাহলে তা ভাঙাতে হবে। তাদের মতো দু’একজনকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া একান্ত প্রয়োজন। বাচাল মির্জা ফখরুল ইসলাম যে সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন তার দাঁত-ভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। দু’একজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছাড়া অন্য যারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন তাদেরকে জনসাধারণ বিশেষ করে ভোটাররা চেনেন কি না সন্দেহ। তাদের কোন সভা-সমিতি, বক্তব্য-সম্মেলন পত্রিকায় কিংবা টিভির পর্দায় কদাচিৎ দেখা যায়। ফলে জনমনে ধারণা জন্মেছে যে তারা আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। এ সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা উপযুক্ত না হয়েও তিন-সাড়ে তিন বছর যাবত নানা সুবিধা ভোগ করছেন।
আবদুল মুহিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কিভাবে পালন করছেন তা একমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই জানেন। একটি বিশেষ অনুরোধ, তাকে যেন কোন বক্তৃতা বিবৃতি দিতে দেয়া না হয়। সাংবাদিক সম্মেলন করতে না দেয়া হয়। কারণ তিনি হয়ত নিজেই জানেন না তিনি কি বলতে চান। এতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
সুরঞ্জিত বাবুর চরিত্র হনন করার চেষ্টা হয়েছিল, যা তিনি তার সততার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সংসদ অধিবেশন যদি ছুটিতে থাকে তাহলে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যগণ যার যার নির্বাচনী এলাকায় দলের নির্বাচনী ওয়াদা কতটা সফল হয়েছে আর জনগুরুত্বপূর্ণ কতটা প্রকল্প চালু রয়েছে এবং কি পর্যায়ে রয়েছে তা যুক্তির সাহায্যে অবগত করবেন এবং বোঝাতে সচেষ্ট হবেন। মনে রাখতে হবে (আল্লাহ্ না করুন) যদি অন্য কোন দল বিশেষ করে বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে আওয়ামী লীগের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলো যা হাতে নেবার বাকি রয়ে গেছে, তা সম্পূর্ণ বানচাল হয়ে যাবে। যুদ্ধাপরাধী দানবদের এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো ধামাচাপা দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর বাকি ছয়জন খুনী যারা বিদেশে পালিয়ে আছে তাদেরকে বিচারের রায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। সুতরাং আগামী টার্মে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতেই হবে।

লেখক : সাবেক আমলা

No comments

Powered by Blogger.