প্রাণভিক্ষা না চেয়ে গুপ্তচর ধরায় উদ্যোগী হোন by আনু মুহাম্মদ
প্রথম কথা হচ্ছে উপদেষ্টাদের নিয়ে। ড. মসিউর রহমানের মতো উপদেষ্টারাই তো বাহুল্য। সরকারের মন্ত্রণালয় পরিচালনায় এসব উপদেষ্টার ভূমিকা কী? সব ক্ষেত্রেই যদি আমরা লক্ষ করি, তাহলে দেখতে পাব, এ ধরনের উপদেষ্টারা যে ভূমিকা রাখছেন, তার সবই প্রশ্নবিদ্ধ। আর ড. মসিউর রহমানের কথা যদি বলেন, তাহলে আমাদের চোখে ভাসে তাঁর কর্মকাণ্ড।
তিনি তো বিভিন্ন সময় লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের দ্বারস্থ হতে সুপারিশ করেছেন। বিশ্বব্যাংক তাঁকে সে জন্য প্রতিদানও দিয়েছে। তারাও বলেছে, এই প্রকল্পে তাঁকে যেন ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজার করা হয়। সরকার বিশ্বব্যাংকের সেই সুপারিশ রেখেছে। তাঁকে ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলছেন, বিশ্বব্যাংক গুপ্তচর নিয়োগ করেছে। এগুলো তো খুবই অস্পষ্ট কথাবার্তা। তিনি তো নিজেই বিপজ্জনক ভূমিকা পালন করেছেন এরই মধ্যে। তাঁর বিপজ্জনক ভূমিকা সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। যেমন টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে কমবেশি সবারই জানা আছে। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। এটা তো তাঁরই কথা। তিনি অনেক বড় দায়িত্বে আছেন। তিনি কী করছেন, কী করছেন না; অর্থাৎ তিনি ক্ষতিকর কিছু করছেন কি না, সে বিষয়ে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকা উচিত। তিনি বললেন ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হোক। আর সে জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। এমন অনেক কিছুই বলা যায়।
বিশ্বব্যাংকের কাছে তাঁর বিরাগভাজন হওয়ার ব্যাপারটি আমাদের জানা নেই। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংক যদি অর্থায়ন করেও তাতেও এ সরকারের আমলে পদ্মা সেতু নির্মাণের কোনো অগ্রগতি হবে না। কিংবা নিজস্ব অর্থায়নেও এর কাজ শুরু করার বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। আমরাও তাই বলি। সম্ভব হলে নিজস্ব অর্থায়নে করা ভালো। আসলে সরকারেরও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বিশ্বব্যাংক সম্পর্কেও সরকারের অবস্থান পরিষ্কার নয়। একবার প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে একহাত নিলেন। আমরা আবার দেখলাম, তিনি বিশ্বব্যাংকের হাত-পা ধরতেও পিছপা হলেন না। ফলে স্পষ্ট হচ্ছে না বিশ্বব্যাংকের অবস্থান সম্পর্কে সরকার কোন ভূমিকা নিচ্ছে। একবার গালি দেওয়া, আরেকবার পায়ে ধরার মতো কাজ করতে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি তো আর বাকি রইল না। আর কত নাটক হবে এই কাজটি নিয়ে? এই যে গালি দেওয়ার পর আবার বিশ্বব্যাংকের শর্তগুলোই মেনে নিল সরকার। অর্থ উপদেষ্টাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের যোগাযোগ হচ্ছে। নতুন উদ্যোগ নিয়েই সেই যোগাযোগ করা হচ্ছে। আরো তো কথা আছে। এই পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা এ ব্যাপারেও সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। প্রধানমন্ত্রী যা বলেন মন্ত্রী-উপদেষ্টারা হয়তো বলছেন তার বিপরীত।
উপদেষ্টা চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিকদের সামনে। তিনি নিজের জীবন বাঁচাতে উদ্বিগ্ন, এমন মনে হতেই পারে। তিনি যে ভাষায় তাঁর উদ্বেগের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন, তাতে মনে হতে পারে, তিনি একটা জালে আটকা পড়েছেন। আমরা জানি না, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তাঁর কী হলো। সহানুভূতি কামনা করে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তাও পরিষ্কার নয়। তিনি যদি মনে করে থাকেন তিনি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন, তাহলে তিনি তো পদত্যাগ করতে পারতেন। তাই আবারও মনে হয়, তিনি একটা জালে আটকা পড়েছেন।
আর গুপ্তচরের কথা তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের পঞ্চমবাহিনী হিসেবে মন্ত্রণালয়গুলোই ভূমিকা পালন করে থাকে। শেখ হাসিনার আগের সরকারের সময় তিনি ছিলেন ইআরডিতে। তিনি এখনো বড় দায়িত্বে আছেন। সুতরাং তিনি যে গুপ্তচরের কথা বললেন, সেই তথ্য যদি তাঁর জানা থাকে তাহলে তাঁকে তার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রশ্নটাও তাঁর দিকে যাবে। তিনি যদি নিশ্চিত হন যে এখানে গুপ্তচর কাজ করছে, তাহলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? তিনি প্রাণভিক্ষা না চেয়ে গুপ্তচর ধরার ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে পারতেন।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন
বিশ্বব্যাংকের কাছে তাঁর বিরাগভাজন হওয়ার ব্যাপারটি আমাদের জানা নেই। তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংক যদি অর্থায়ন করেও তাতেও এ সরকারের আমলে পদ্মা সেতু নির্মাণের কোনো অগ্রগতি হবে না। কিংবা নিজস্ব অর্থায়নেও এর কাজ শুরু করার বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। আমরাও তাই বলি। সম্ভব হলে নিজস্ব অর্থায়নে করা ভালো। আসলে সরকারেরও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বিশ্বব্যাংক সম্পর্কেও সরকারের অবস্থান পরিষ্কার নয়। একবার প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে একহাত নিলেন। আমরা আবার দেখলাম, তিনি বিশ্বব্যাংকের হাত-পা ধরতেও পিছপা হলেন না। ফলে স্পষ্ট হচ্ছে না বিশ্বব্যাংকের অবস্থান সম্পর্কে সরকার কোন ভূমিকা নিচ্ছে। একবার গালি দেওয়া, আরেকবার পায়ে ধরার মতো কাজ করতে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তি তো আর বাকি রইল না। আর কত নাটক হবে এই কাজটি নিয়ে? এই যে গালি দেওয়ার পর আবার বিশ্বব্যাংকের শর্তগুলোই মেনে নিল সরকার। অর্থ উপদেষ্টাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের যোগাযোগ হচ্ছে। নতুন উদ্যোগ নিয়েই সেই যোগাযোগ করা হচ্ছে। আরো তো কথা আছে। এই পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা এ ব্যাপারেও সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। প্রধানমন্ত্রী যা বলেন মন্ত্রী-উপদেষ্টারা হয়তো বলছেন তার বিপরীত।
উপদেষ্টা চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিকদের সামনে। তিনি নিজের জীবন বাঁচাতে উদ্বিগ্ন, এমন মনে হতেই পারে। তিনি যে ভাষায় তাঁর উদ্বেগের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন, তাতে মনে হতে পারে, তিনি একটা জালে আটকা পড়েছেন। আমরা জানি না, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তাঁর কী হলো। সহানুভূতি কামনা করে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তাও পরিষ্কার নয়। তিনি যদি মনে করে থাকেন তিনি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন, তাহলে তিনি তো পদত্যাগ করতে পারতেন। তাই আবারও মনে হয়, তিনি একটা জালে আটকা পড়েছেন।
আর গুপ্তচরের কথা তিনি বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের পঞ্চমবাহিনী হিসেবে মন্ত্রণালয়গুলোই ভূমিকা পালন করে থাকে। শেখ হাসিনার আগের সরকারের সময় তিনি ছিলেন ইআরডিতে। তিনি এখনো বড় দায়িত্বে আছেন। সুতরাং তিনি যে গুপ্তচরের কথা বললেন, সেই তথ্য যদি তাঁর জানা থাকে তাহলে তাঁকে তার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রশ্নটাও তাঁর দিকে যাবে। তিনি যদি নিশ্চিত হন যে এখানে গুপ্তচর কাজ করছে, তাহলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? তিনি প্রাণভিক্ষা না চেয়ে গুপ্তচর ধরার ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে পারতেন।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন
No comments