বিদ্যুতের দাম ফের বাড়বে ঈদের পর by আরিফুজ্জামান তুহিন
বর্তমান সরকারের আমলে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে পাঁচবার। বিদ্যুৎ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সরকারের নির্দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। এর জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে আইন ভাঙতে হচ্ছে। ঈদের পর খুচরা বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়বে।
বিইআরসি গণশুনানি না করেই অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বাড়াতে যাচ্ছে বিদ্যুতের দাম। বিইআরসি বিদ্যুৎসহ সব ধরনের জ্বালানির মূল্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রকাশ্য গণশুনানিতে সব পক্ষের মতামত নেওয়ার কথা। বাস্তবে কমিশন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগেভাগে মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, গণশুনানিতে উপস্থিত ভোক্তাপক্ষকে হুমকি-ধমকিও দিয়ে থাকে সংস্থাটি। কার্যত এটি সরকারের তল্পিবাহকে পরিণত হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঈদের পরই পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেবে বিইআরসি। ইতিমধ্যে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে গণশুনানি হয়েছে। তবে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আগে গণশুনানি করা হবে না।
বিইআরসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঈদের পরই পাইকারি বিদ্যুতের সঙ্গে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হবে। খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে গণশুনানি করা হবে না।'
এ বিষয়ে বিইআরসির সদস্য ইমদাদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিইআরসি চেয়ারম্যান ব্রাজিলে গেছেন। তিনি দেশে ফিরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।' এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণশুনানি না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো বেআইনি। 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩'-এর ৩৪-এর ৬ উপধারায় বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন জ্বালানি পণ্যের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটি উন্মুক্ত গণশুনানি করে তবেই দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত দেশের অন্তত প্রধান দুটি পত্রিকায় প্রকাশের সাত দিন পরই কেবল দাম বাড়ানো যাবে।'
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার তুহিন মালিক বলেন, 'কমিশন যেভাবে এবং যে পদ্ধতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দেশে কোনো আইন নেই। তারা আইনের তোয়াক্কা করে না। কমিশন এর আগেও আইন লঙ্ঘন করেছে। বিষয়টিতে উচ্চ আদালতের দৃষ্টি আর্কষণ করা উচিত।'
কমিশনের আইন ভাঙার কারণ কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যে ধরনের লোকজনকে কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাঁদের যোগ্যতার ঘাটতি আছে। এখানে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারদলীয় রাজনীতির যোগসূত্র রয়েছে। এ কারণে কমিশন জনগণের পক্ষে না বলে সরকারের পক্ষে কথা বলে।'
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে গণশুনানির পাশাপাশি অন্তত দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা থাকলেও বিইআরসি কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় না।
গণশুনানি না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে কি গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা পাবে?- এ প্রশ্নের জবাবে ভোক্তা অধিকার রক্ষাসংক্রান্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, 'গণশুনানি ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্টত আইনের পরিপন্থী হবে। এভাবে চলতে থাকলে বিইআরসি দ্রুত তার কার্যকারিতা হারাবে। এই রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের স্বার্থ না দেখে সরকারের স্বার্থ দেখছে।' তিনি বলেন, 'যেহেতু পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে একটি গণশুনানি হয়েছে, তাই এখন খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পথটি পরিষ্কার করা হয়েছে। পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়।'
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে
পিডিবি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় বাজারে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়। অথচ চলতি বছরের গত সাত মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সব খরচসহ বিপিসির প্রতি লিটার অপরিশোধিত তেলের আমদানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ২৫ টাকা। এর মধ্যে ৯ টাকা লিটার দরেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনেছে বিপিসি।
এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এম শামসুল আলম বলেন, 'তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ১০ শতাংশ চালু রাখার কথা বলেছিলাম, তারা এখন ২৮ শতাংশ চালু রাখার ঘোষণা দিচ্ছে। তারা ভোক্তাদের কথা মাথায় রাখে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়তির দিকে, অতএব তেলের দামের দোহাই দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যৌক্তিক নয়।'
তরল জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়া বাকি বিদ্যুতের সব থেকে বড় অংশ আসে গ্যাসনির্ভর কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে পিডিবি পেট্রোবাংলার কাছ থেকে ১.৩ ডলারে কিনছে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস। গ্যাস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে আড়াই টাকা পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের বাজার নিম্নমুখী, আর গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ছে। তাহলে কেন বিদ্যুতের দাম বাড়বে!
ষষ্ঠবারের মতো বাড়ছে বিদ্যুতের দাম
বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের দাম বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ দাম বেড়েছে গত ২৮ মার্চ, যা ওই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। এটা ছিল মহাজোট সরকারের আমলে পঞ্চমবারের মতো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা। সেবার গ্রাহক পর্যায়ে সব শ্রেণীর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৩০ পয়সা। একই সঙ্গে পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ২৮ পয়সা বাড়ে। এর ফলে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য পাঁচ টাকা দুই পয়সা থেকে পাঁচ টাকা ৩২ পয়সা হয়। আর পাইকারি মূল্য দাঁড়ায় তিন টাকা ৭৪ পয়সা থেকে চার টাকা দুই পয়সায়।
ষষ্ঠবারের মতো দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসি শুধু পাইকারি বিদ্যুতের দামের ওপর গণশুনানি করেছে। সেখানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। পাশাপাশি সরকারের এ প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক পর্যায়ে খুচরা বিদ্যুতের দাম ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। সরকারের অন্যান্য বিতরণ কম্পানি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে।
বর্তমান সরকারের আমলে প্রথমবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ২০১০ সালের মার্চ মাসে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবারও দাম বাড়ানো হয়। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে আরেকবার দাম বাড়ায় সরকার। এর পর দাম বাড়ে ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে। সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গত ২৮ মার্চ, যা ১ মার্চ থেকে কার্যকর ধরা হয়।
সূত্র জানায়, ঈদের পরই পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেবে বিইআরসি। ইতিমধ্যে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে গণশুনানি হয়েছে। তবে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আগে গণশুনানি করা হবে না।
বিইআরসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঈদের পরই পাইকারি বিদ্যুতের সঙ্গে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হবে। খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে গণশুনানি করা হবে না।'
এ বিষয়ে বিইআরসির সদস্য ইমদাদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিইআরসি চেয়ারম্যান ব্রাজিলে গেছেন। তিনি দেশে ফিরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।' এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণশুনানি না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো বেআইনি। 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩'-এর ৩৪-এর ৬ উপধারায় বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন জ্বালানি পণ্যের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটি উন্মুক্ত গণশুনানি করে তবেই দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত দেশের অন্তত প্রধান দুটি পত্রিকায় প্রকাশের সাত দিন পরই কেবল দাম বাড়ানো যাবে।'
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার তুহিন মালিক বলেন, 'কমিশন যেভাবে এবং যে পদ্ধতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দেশে কোনো আইন নেই। তারা আইনের তোয়াক্কা করে না। কমিশন এর আগেও আইন লঙ্ঘন করেছে। বিষয়টিতে উচ্চ আদালতের দৃষ্টি আর্কষণ করা উচিত।'
কমিশনের আইন ভাঙার কারণ কী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যে ধরনের লোকজনকে কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাঁদের যোগ্যতার ঘাটতি আছে। এখানে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারদলীয় রাজনীতির যোগসূত্র রয়েছে। এ কারণে কমিশন জনগণের পক্ষে না বলে সরকারের পক্ষে কথা বলে।'
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে গণশুনানির পাশাপাশি অন্তত দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা থাকলেও বিইআরসি কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় না।
গণশুনানি না করে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে কি গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা পাবে?- এ প্রশ্নের জবাবে ভোক্তা অধিকার রক্ষাসংক্রান্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, 'গণশুনানি ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্পষ্টত আইনের পরিপন্থী হবে। এভাবে চলতে থাকলে বিইআরসি দ্রুত তার কার্যকারিতা হারাবে। এই রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের স্বার্থ না দেখে সরকারের স্বার্থ দেখছে।' তিনি বলেন, 'যেহেতু পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে একটি গণশুনানি হয়েছে, তাই এখন খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পথটি পরিষ্কার করা হয়েছে। পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়।'
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে
পিডিবি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় বাজারে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়। অথচ চলতি বছরের গত সাত মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সব খরচসহ বিপিসির প্রতি লিটার অপরিশোধিত তেলের আমদানি ব্যয় পড়েছে গড়ে ২৫ টাকা। এর মধ্যে ৯ টাকা লিটার দরেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনেছে বিপিসি।
এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো অযৌক্তিক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এম শামসুল আলম বলেন, 'তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ১০ শতাংশ চালু রাখার কথা বলেছিলাম, তারা এখন ২৮ শতাংশ চালু রাখার ঘোষণা দিচ্ছে। তারা ভোক্তাদের কথা মাথায় রাখে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়তির দিকে, অতএব তেলের দামের দোহাই দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যৌক্তিক নয়।'
তরল জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়া বাকি বিদ্যুতের সব থেকে বড় অংশ আসে গ্যাসনির্ভর কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে পিডিবি পেট্রোবাংলার কাছ থেকে ১.৩ ডলারে কিনছে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস। গ্যাস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে আড়াই টাকা পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের বাজার নিম্নমুখী, আর গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ছে। তাহলে কেন বিদ্যুতের দাম বাড়বে!
ষষ্ঠবারের মতো বাড়ছে বিদ্যুতের দাম
বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের দাম বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ দাম বেড়েছে গত ২৮ মার্চ, যা ওই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। এটা ছিল মহাজোট সরকারের আমলে পঞ্চমবারের মতো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা। সেবার গ্রাহক পর্যায়ে সব শ্রেণীর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৩০ পয়সা। একই সঙ্গে পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ২৮ পয়সা বাড়ে। এর ফলে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য পাঁচ টাকা দুই পয়সা থেকে পাঁচ টাকা ৩২ পয়সা হয়। আর পাইকারি মূল্য দাঁড়ায় তিন টাকা ৭৪ পয়সা থেকে চার টাকা দুই পয়সায়।
ষষ্ঠবারের মতো দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসি শুধু পাইকারি বিদ্যুতের দামের ওপর গণশুনানি করেছে। সেখানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। পাশাপাশি সরকারের এ প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক পর্যায়ে খুচরা বিদ্যুতের দাম ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে। সরকারের অন্যান্য বিতরণ কম্পানি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে।
বর্তমান সরকারের আমলে প্রথমবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ২০১০ সালের মার্চ মাসে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবারও দাম বাড়ানো হয়। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে আরেকবার দাম বাড়ায় সরকার। এর পর দাম বাড়ে ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে। সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গত ২৮ মার্চ, যা ১ মার্চ থেকে কার্যকর ধরা হয়।
No comments