আশ্রয় দেবে ইকুয়েডর-অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারে দূতাবাসে অভিযানের হুমকি ব্রিটেনের

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করতে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে অভিযানের হুমকি দিয়েছে ব্রিটেন। ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে ইকুয়েডরের দূতাবাসে। আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করা জরুরি বলে জানিয়েছে তারা।


তবে ব্রিটেনের হুমকির তীব্র বিরোধিতা করেছে ইকুয়েডর সরকার। অ্যাসাঞ্জকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত ইকুয়েডরের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে (বাংলাদেশ সময় গতকাল রাতে) জানানোর ঘোষণা দেয় তারা।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ (৪১) গত ১৯ জুন থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান করছেন। সুইডেনে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে তাঁর সর্বশেষ আপিলটি ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পরপরই তিনি ওই দূতাবাসে আশ্রয় নেন। একই সঙ্গে ইকুয়েডরে রাজনৈতিক আশ্রয়ও চান। দুই নারীকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে জিজ্ঞাসাবাদের অপেক্ষায় আছে সুইডেন। তবে অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা, সুইডেনে পাঠানো হলে গোপন মার্কিন দলিল ফাঁসের অভিযোগে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হতে পারে এবং সেখানে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা-সংক্রান্ত গোপন দলিল এবং লাখ লাখ কূটনৈতিক তারবার্তা প্রকাশ করে দিয়ে ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলে বিকল্পধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস।
'কূটনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদের আবাসস্থল-সংক্রান্ত আইন ১৯৮৭' বলে ইকুয়েডরের দূতাবাসে অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছে ব্রিটেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, 'অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনে প্রত্যর্পণে আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্রিটেন বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে ইকুয়েডরকে আমরা আমাদের আইনের ধারা সম্পর্কেও জানিয়েছে। তবে আমরা এখনো উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধানের ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী।' চিঠি পাঠানোর পর ইকুয়েডরের দূতাবাসের সামনে বেশ কিছু ব্রিটিশ পুলিশ সদস্যও জড়ো হন। রাজনৈতিক আশ্রয় পেলেও অ্যাসাঞ্জকে ইকুয়েডরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে ব্রিটেন।
এদিকে ব্রিটেনের হুমকির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইকুয়েডর। গত বুধবার ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্দো পাতিনো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তর করা না হলে আমাদের দূতাবাসে হামলার হুমকি দিয়েছে ব্রিটেন। ইকুয়েডর অত্যন্ত জোরালোভাবে এই হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছে। ব্রিটেনের মতো গণতান্ত্রিক, সভ্য ও নিয়মনিষ্ঠ একটি দেশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অসমীচীন। ব্রিটেনের ঘোষণা যদি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে ইকুয়েডর এই কাজকে অগ্রহণযোগ্য, অবন্ধুত্বসুলভ এবং আমাদের সার্বভৌমত্ববিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করব। আমরা ব্রিটেনের উপনিবেশ নই।' তিনি জানান, তাঁর সরকার অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। ইকুয়েডরের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে তা জানানো হবে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.