ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ
পরিবহন খাতে পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রয়োজন ঈদে নাড়ির টানে মানুষ ছুটে যায় তার আপনজনদের কাছে। আত্মীয়-পরিজন নিয়ে একত্রে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। আবহমান বাংলার এ এক নিয়মিত চিত্র। যত দিন যাচ্ছে, ঘরে ফেরার কাফেলা ততই দীর্ঘ হচ্ছে। কিন্তু ঘরে ফেরার সুযোগ একই অনুপাতে বাড়ছে না।
ফলে দুর্ভোগ ক্রমেই বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এবারও মানুষকে প্রচুর দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ট্রেনের একটি টিকিটের জন্য সারা রাত লাইনে অপেক্ষা করেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে অনেক মানুষকে। সড়কপথেও রয়েছে দীর্ঘ যানজট। যোগাযোগমন্ত্রী নিজেই গত বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিলেন। যোগাযোগমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রেনের ছাদে কোনো যাত্রী না তোলার জন্য। কিন্তু প্রয়োজন কোনো নির্দেশ মানে না। তাই ট্রেনের ছাদে চড়েও অনেককে বাড়ি ফিরতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি বাসের ছাদে চড়েও অনেককে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। লঞ্চের চিত্রও ভিন্ন নয়। সেগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে যাত্রী উঠছে অনেক বেশি। আবার পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে অচল নৌযানগুলোয় রং মাখিয়ে এবং জোড়াতালি দিয়ে সচল করা হচ্ছে। ফলে নৌপথে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়ে গেছে। এত কষ্ট করে বাড়ি ফেরার পরও কি দুশ্চিন্তার অবসান হয়? দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে রকম বাজে অবস্থা, তাতে বাড়ি ফিরেও অনেককে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে।
যত দিন যাবে, যাত্রীর সংখ্যা তত বাড়বে। কাজের প্রয়োজনে মানুষকে এখানে-সেখানে ছুটে বেড়াতে হবে। তাই দেশের যোগাযোগব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবেই এগিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সড়কপথের চেয়ে রেলওয়েকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অথচ রেলওয়ের বেহাল বা বিপর্যস্ত অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরেই। সংস্কারহীন রেললাইনগুলোতে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালানো যায় না। লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনাও অনেক। ইঞ্জিনগুলোর বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিপূণ। বেশির ভাগ সময় ওয়ার্কশপেই রাখতে হয় এবং বগির সংখ্যাও খুবই কম। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইলেই যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের সংখ্যা খুব বাড়িয়ে দেবে- তা সম্ভব নয়। এদিকে দেশের নৌপথও ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যেটুকু নৌপথ আছে, সেখানেও চলছে নৈরাজ্যকর অবস্থা। ত্রুটিপূর্ণ নৌযান এবং প্রশিক্ষণহীন চালকের কারণে নৌদুর্ঘটনার সংখ্যাও অনেক বেশি। মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ফলে সড়কপথেই যাত্রীদের চাপ পড়ছে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সড়কগুলোর অবস্থাও সুখকর নয়। পত্রপত্রিকায় রেলওয়ের বেহাল অবস্থা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। দুদিন আগেও রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সারদা পুলিশ একাডেমীর কাছে লাইনচ্যুত হয়েছে। ফলে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনেও কয়েক দফা ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। কর্মচারীর অভাবে একের পর এক স্টেশন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। যে সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে স্বাধীনতার আগেও বছরে দুই শতাধিক বগি তৈরি হতো। গত তিন যুগেও সেখানে কোনো বগি তৈরি হয়নি। অথচ বিদ্যমান কারখানাগুলোতে লোকবল ও যন্ত্রপাতি বাড়িয়ে শুধু বগি নয়, ইঞ্জিন সংযোজনের কাজও করা যেত। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, বিগত সরকারগুলো সেদিকে মনোযোগী হয়নি। এমনকি কোনো কোনো সরকার উল্টো কাজটিই করেছে, রেলওয়েকে দুর্বল করেছে। জানা যায়, বর্তমান সরকার রেলওয়ের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; কিন্তু সেগুলোর সুফল এখনো দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ রেলওয়েকে তার আগের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হবে। তা না হলে শুধু ঈদে কেন, সারা বছরই এ দেশের মানুষ যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে থাকবে।
যত দিন যাবে, যাত্রীর সংখ্যা তত বাড়বে। কাজের প্রয়োজনে মানুষকে এখানে-সেখানে ছুটে বেড়াতে হবে। তাই দেশের যোগাযোগব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবেই এগিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সড়কপথের চেয়ে রেলওয়েকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অথচ রেলওয়ের বেহাল বা বিপর্যস্ত অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরেই। সংস্কারহীন রেললাইনগুলোতে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালানো যায় না। লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনাও অনেক। ইঞ্জিনগুলোর বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিপূণ। বেশির ভাগ সময় ওয়ার্কশপেই রাখতে হয় এবং বগির সংখ্যাও খুবই কম। ফলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইলেই যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের সংখ্যা খুব বাড়িয়ে দেবে- তা সম্ভব নয়। এদিকে দেশের নৌপথও ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যেটুকু নৌপথ আছে, সেখানেও চলছে নৈরাজ্যকর অবস্থা। ত্রুটিপূর্ণ নৌযান এবং প্রশিক্ষণহীন চালকের কারণে নৌদুর্ঘটনার সংখ্যাও অনেক বেশি। মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ফলে সড়কপথেই যাত্রীদের চাপ পড়ছে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সড়কগুলোর অবস্থাও সুখকর নয়। পত্রপত্রিকায় রেলওয়ের বেহাল অবস্থা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। দুদিন আগেও রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সারদা পুলিশ একাডেমীর কাছে লাইনচ্যুত হয়েছে। ফলে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনেও কয়েক দফা ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। কর্মচারীর অভাবে একের পর এক স্টেশন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। যে সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপে স্বাধীনতার আগেও বছরে দুই শতাধিক বগি তৈরি হতো। গত তিন যুগেও সেখানে কোনো বগি তৈরি হয়নি। অথচ বিদ্যমান কারখানাগুলোতে লোকবল ও যন্ত্রপাতি বাড়িয়ে শুধু বগি নয়, ইঞ্জিন সংযোজনের কাজও করা যেত। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, বিগত সরকারগুলো সেদিকে মনোযোগী হয়নি। এমনকি কোনো কোনো সরকার উল্টো কাজটিই করেছে, রেলওয়েকে দুর্বল করেছে। জানা যায়, বর্তমান সরকার রেলওয়ের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; কিন্তু সেগুলোর সুফল এখনো দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ রেলওয়েকে তার আগের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিতে সচেষ্ট হবে। তা না হলে শুধু ঈদে কেন, সারা বছরই এ দেশের মানুষ যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে থাকবে।
No comments