মুখ খুললেন সাদ্দামের আশ্রয়দাতা
ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের চরম দুর্দিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে মানুষটি তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তিনি নিতান্তই একজন সাধারণ ইরাকি। রাজধানী বাগদাদের উত্তর-পশ্চিমের প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরের শহর তিকরিতের কাছাকাছি টাইগ্রিস নদীর তীরের এক গ্রামে তাঁর জন্ম। নাম আলা নামিক (৪১)।
আলা নামিকের তৈরি করা গর্তের মতো সুড়ঙ্গেই ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত লুকিয়ে ছিলেন সাদ্দাম। মার্কিন সেনাদের ফাঁকি দিয়ে নামিকের সহায়তায় মাঝেমধ্যে সাদ্দামের দুই ছেলে ওই গর্তের ভেতরে বাবার সঙ্গে দেখাও করেছেন। পরে বিশ্বের মানুষের কাছে ওই গর্তটি পরিচিত হয় ‘স্পাইডার হোল’ নামে। ২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মার্কিন সেনারা ওই গর্তের ভেতর থেকেই সাদ্দাম হোসেনকে খুঁজে বের করে।
তবে সাদ্দামকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আলা নামিককে কম দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। সাদ্দামের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেপ্তার করেছিল মার্কিন সেনারা। এর পর দীর্ঘ ছয় বছর আবু গারাইব কারাগারে দুর্বিষহ জীবন কেটেছে তাঁর।
আলা নামিক বলেন, ‘তিনি (সাদ্দাম হোসেন) এখানে (তিকরিত) এসেছিলেন এবং আমাদের কাছে সাহায্য চান। তিনি আমাকে বলেছিলেন, “ধরা পড়লে তোমার ওপর নির্যাতন চালানো হতে পারে।” কিন্তু আরব উপজাতীয় ঐতিহ্য এবং ইসলামি বিধান অনুযায়ী বিপদগ্রস্ত মানুষ সাহায্য চাইলে আমরা তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসি।’
সাদ্দাম হোসেনের জন্ম তিকরিতের কাছাকাছি এক গ্রামে। তাঁর বিশ্বাস ছিল তিকরিতের কোথাও না-কোথাও তাঁর আশ্রয় জুটবেই।
আলা নামিক জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সম্প্রতি টাইগ্রিস নদীর তীরে খাবারের দোকান দিয়েছেন। তবে আলা নামিক সে সময়কার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এখনই বলতে চান না। একদিন হয়তো পুরো সত্যটা জানাবেন। এমনকি এসব ঘটনা নিয়ে বই লেখারও ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। এসব ঘটনা নিয়ে সিনেমাও তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
No comments