দায়মুক্ত হোক বাংলাদেশ-বিচারবহির্ভূত হত্যা
আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে প্রকারান্তরে এ ধরনের ঘটনা যে ঘটছে তার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতই অস্বীকার করুক না কেন, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে।
সোমবার সিরডাপ মিলনায়তনে পুলিশ সম্পর্কে ১০১টি প্রশ্নোত্তর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানেও বক্তারা একই কথা বলেছেন। আইনমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, আইনের কোনো বিধানেই বিচার ছাড়া কারও প্রাণ নেওয়ার অধিকার নেই। পুলিশ কোনো অবস্থাতেই আইনের ঊর্ধ্বে কাজ করতে পারে না। আইনমন্ত্রী যেদিন সেমিনারে এ বক্তব্য দিচ্ছিলেন, সেদিনই হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে ডিবি পুলিশের হাতে নূরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর প্রথম আলোতে ছাপা হয়, যাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত তাঁর ছেলে জেবুকে পুলিশেঝর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আটক করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সহযোগীরা ডাকাত ডাকাত বলে তাদের ওপর হামলা চালায়। এরপর পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। নিহত নূরুল ইসলামের স্ত্রী বলেছেন, বিনা দোষে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনা যেভাবেই ঘটুক না কেন, কোনো অবস্থাতেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকে জায়েজ করা যায় না। কোনো আসামিকে ধরতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও লোকবল থাকা প্রয়োজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তাও তারা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের কাছ থেকে পাল্টা হামলার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হয়ে তার বাবাকে গুলি করে হত্যা করা নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। আইনমন্ত্রী এসব অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হলো, তদন্তকাজটি কে করবে? যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরই যদি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে অপরাধী শনাক্ত হবে না, শাস্তিও পাবে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিকল্প পন্থায় তদন্তের ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল, তারা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করবে। কেননা বিরোধী দলে থাকতে এই দলের অনেক কর্মী বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। কেবল রাজনৈতিক কারণেই যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকে, তা নয়। অরাজনৈতিক ঘটনায়ও অহরহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিগৃহীত ও নিহত হয়ে থাকেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ যত গুরুতরই হোক না কেন, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। দ্বিতীয় কথা হলো, বিচারের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নয়। তাদের কাজ অভিযোগ তদন্ত এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা।
আইনমন্ত্রী বিচারবহির্ভূত হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যরাও একই কথা বলেছেন। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার নজির তেমন নেই। অতএব, নিষ্ফল তদন্তে কোনো কাজ হবে না। যেকোনো উপায়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এমনকি আত্মরক্ষার নামেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হত্যার অবাধ ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালনে বাধ্য করতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যার দায় থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতেই হবে।
ঘটনা যেভাবেই ঘটুক না কেন, কোনো অবস্থাতেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকে জায়েজ করা যায় না। কোনো আসামিকে ধরতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও লোকবল থাকা প্রয়োজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তাও তারা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের কাছ থেকে পাল্টা হামলার আশঙ্কা কম থাকে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হয়ে তার বাবাকে গুলি করে হত্যা করা নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। আইনমন্ত্রী এসব অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হলো, তদন্তকাজটি কে করবে? যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরই যদি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে অপরাধী শনাক্ত হবে না, শাস্তিও পাবে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিকল্প পন্থায় তদন্তের ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল, তারা বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করবে। কেননা বিরোধী দলে থাকতে এই দলের অনেক কর্মী বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। কেবল রাজনৈতিক কারণেই যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকে, তা নয়। অরাজনৈতিক ঘটনায়ও অহরহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিগৃহীত ও নিহত হয়ে থাকেন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ যত গুরুতরই হোক না কেন, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। দ্বিতীয় কথা হলো, বিচারের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নয়। তাদের কাজ অভিযোগ তদন্ত এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা।
আইনমন্ত্রী বিচারবহির্ভূত হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যরাও একই কথা বলেছেন। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার নজির তেমন নেই। অতএব, নিষ্ফল তদন্তে কোনো কাজ হবে না। যেকোনো উপায়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এমনকি আত্মরক্ষার নামেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হত্যার অবাধ ছাড়পত্র দেওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালনে বাধ্য করতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যার দায় থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতেই হবে।
No comments