মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে যৌক্তিক মীমাংসা প্রয়োজন-বিমানে অসন্তোষ

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসন্তোষের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। সরকারঘোষিত বেতন স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতনকাঠামো ও পেনশনসুবিধা পুনর্বহালের দাবি নিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা গত মঙ্গলবার বিমানের প্রধান কার্যালয় অবরোধ করে রাখেন। বলা বাহুল্য, অবরোধ শান্তিপূর্ণ ছিল না।


বিমানের কোম্পানি-সচিব বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঞ্ছিত হন এবং এমডি হয়ে থাকেন অবরুদ্ধ।
বিমান কর্তৃপক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে আপাতত অচলাবস্থা সামাল দিয়েছেন। কিন্তু সমঝোতার শর্ত অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টির সুরাহা না হলে ধর্মঘট শুরু করার ঘোষণাও আন্দোলনকারীরা দিয়ে রেখেছেন। পরিস্থিতি যা-ই হোক, দেশের প্রধান অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কোনো অবস্থাতেই অকার্যকর হতে পারে না। দাবি পূরণে আন্দোলনকারীদের বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে।
গতকালের প্রথম আলোর সংবাদে বিমানকর্মীদের অভিযোগের কথা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বরাবর সরকারনির্ধারিত বেতনকাঠামো অনুযায়ী বিমানের কর্মীদের বেতন ঠিক করা হলেও এবার তা করা হয়নি। উপরন্তু অবসর গ্রহণের পর অবসরভাতা পাওয়ার নিয়মও রদ করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যদি সরকারনির্ধারিত বেতনে চলতে পারে, তাহলে বিমানের বেলায় কেন বৈষম্য করা হবে? তাঁদের অভিযোগে যুক্তি রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস একটি স্পর্শকাতর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এ সংস্থায় দক্ষতা, সততা ও কর্মসন্তুষ্টি নিশ্চিত করা না গেলে বিমান যেমন তার স্থবিরতা কাটাতে পারবে না, তেমনি প্রতিযোগিতাতেও পিছিয়ে পড়বে। অন্যদের চেয়ে কম বেতন কিংবা পেনশনের নিশ্চয়তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে নিষ্ঠার অভাব ঘটবে; দুর্নীতি ও সুবিধাবাদিতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও অমূলক নয়। এসব কারণেই বিমানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বঞ্চনার বোধ দূর করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, সমস্যাটি বহু দিনের। সমাধানের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষ দুই মাস সময়ও চেয়ে নিয়েছিল। সে সময়ের মধ্যে এর সুষ্ঠু মীমাংসা কেন হলো না, ভবিষ্যতের অসন্তোষ ও পরিচালনার ঘাটতি দূর করায় তাও খতিয়ে দেখা দরকার। সে কাজে বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.