ল্যান্ড ফোন-যুগের সঙ্গে বদলাতে হবে

এক সময়ে একটি ল্যান্ড ফোনের সংযোগ পেতে কতই না আকুতি ছিল। এ জন্য বিপুল অর্থ ব্যয়েও আপত্তি ছিল না। কিন্তু এখন চিত্র ভিন্ন। গ্রাহক ভোগান্তি, সেবার মনোভাব না থাকা ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে ল্যান্ড ফোনের প্রতি আগ্রহ কমছে।


এ কারণে গ্রাহক পর্যায়ে নতুন নতুন সুবিধা দেওয়ার পরও অনেক গ্রাহক ল্যান্ড ফোনকে উটকো ঝামেলা মনে করে। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ল্যান্ড ফোন কোম্পানি বিটিসিএলের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা মার খাচ্ছে। মঙ্গলবার সমকালের প্রথম পৃষ্ঠায় 'ল্যান্ড ফোনের করুণ হাল' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ল্যান্ড ফোনের বর্তমান করুণ অবস্থার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা হয়েছে। দেখা যায়, বিটিসিএল ল্যান্ড ফোন গ্রাহকদের 'এক দেশ এক রেট' ঘোষণার আওতায় সারাদেশে একই কলরেট বাস্তবায়নে অনেক দূর অগ্রসর হলেও মানুষের মধ্যে নতুন করে ল্যান্ড ফোন নেওয়ার আগ্রহ তেমন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কলরেট মোবাইল ফোনের চেয়ে কম রাখা এবং ডিজিটাল পদ্ধতি কার্যকর হওয়ার কারণে অতীতের মতো ভুতুড়ে বিলের তাণ্ডব একেবারে হ্রাস পেলেও মানুষ মোবাইল ফোনকেই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছে। অথচ ঢাকায় ল্যান্ড ফোন প্রাপ্তিতে জেলা ও উপজেলার মতো কোনো অর্থ না লাগার ব্যবস্থা চালু হলে এখানে এর ব্যবহারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেত। তদুপরি জেলা-উপজেলায়, এমনকি রাজধানীসহ মহানগরীগুলোতে নানা কারণে ল্যান্ড ফোন আকস্মিকভাবে বন্ধ থাকায়ও গ্রাহকদের এর প্রতি আগ্রহ কমছে। এ ক্ষেত্রে ত্বরিত সেবা নিশ্চিত করা গেলে ল্যান্ড ফোন ব্যবহারকারীরা হয়রানিমুক্ত থাকতে পারতেন। ল্যান্ড ফোন সংযোগের সঙ্গে হ্যান্ডসেট রাখার সাশ্রয়ী ব্যবস্থা থাকাও আবশ্যক। অবশ্য মোবাইল ফোনের মতো যে কোনো জায়গায় ব্যবহারের সুবিধা ল্যান্ড ফোনে পাওয়া যাবে না বলে এই ব্যবস্থা মোবাইল ফোনের বিকল্প নয়। কিন্তু কলরেট কম ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়া গেলে ল্যান্ড ফোন বাসস্থান ও অফিস যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কার্যকর বিবেচিত হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন বিটিসিএলের কার্যকর উদ্যোগ ও গ্রাহক পর্যায়ে সেবা পেঁৗছানোর জন্য উদ্যমী কর্মী বাহিনী। তবেই তারা যুগের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে।

No comments

Powered by Blogger.