মিলেমিশে বৈশাখী আয়োজন by তৌহিদা শিরোপা
এটা ছেলেদের কাজ, ওটা মেয়েদের কাজ—অনেক সময় কাজের ক্ষেত্রে এভাবেই বৈষম্য টেনে আনা হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বৈশাখী আয়োজনের পরিবেশ ভিন্ন কথা বলে। ছেলেমেয়েরা এখানে কাজ করেন সমান তালে। এ যেন মিলেমিশে বৈশাখী আয়োজন। চৈত্রের মধ্যদুুপুর।
চারুকলা অনুষদের বারান্দায় সারি সারি সরা সাজানো। কেউ সরাচিত্র, চিত্রকর্ম, ছোট কাগজের পাখি, পাখা বিক্রি করছেন, কেউ বা পাশে বসে মগ্ন হয়ে সরায় আঁকছেন। সরাচিত্রের ভালো আঁকিয়ের প্রসঙ্গ এলেই ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের মাস্টার্স প্রথম পর্বের শিক্ষার্থী জেসমিন ঝুমার নাম আসে।
একজন পরিচয় করিয়ে দিলেন তাঁর সঙ্গে। জেসমিন ঝুমা বলেন, ‘সেই প্রথম বর্ষ থেকেই কাজ করছি। শিশির স্যার প্রথম দিন বলেছিলেন, তোমার কাজ তো ভালো। ব্যস। অনুপ্রাণিত হয়ে আরও ভালো করার চেষ্টা করছি। প্রতিবারই ভাবি, এবার নতুন কিছু করব। আর এখানে যাঁর যে কাজ ভালো, তাঁকে সেটি করতে দেওয়া হয়। তিনি ছেলে কি মেয়ে এটা কখনোই কারও মনে হয় না।’
মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের দায়িত্ব থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর। এই শোভাযাত্রা আয়োজনের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য নিজের সৃজনশীলতাকে তাঁরা কাজে লাগান। সবাই মিলে সরাচিত্র, চিত্রকর্ম, মুখোশ ও মাসকট তৈরি করেন। চৈত্র মাস থেকেই শুরু হয়ে যায় এর প্রস্তুতি।
মুখোশে তুলির আঁচড় দিতে ব্যস্ত সুমা চন্দ। কাজের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘১১তম ব্যাচই মূলত এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করছে। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। নিজের সেরা কাজটা উপহার দিতে চায় সবাই। ছেলে-মেয়ের কোনো বৈষম্য থাকে না এখানে। কাজ করতে বেশ রাত হয়ে গেলে বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যায়। কারও সমস্যা থাকলে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। যেহেতু চারুকলার শিক্ষার্থী আমরা, তাই বৈশাখের আগের এই ব্যস্ততা পরিবারের সবাই জানে। কোনো অসুবিধা হয় না।’
মৃৎশিল্পের শিক্ষার্থী নবেন্দু সাহা মজা করে বলেন, ‘এবার মনে হচ্ছে মেয়েদের আধিপত্য বেশি। একেকজন একেক কাজ ভালো পারে। সেভাবে কাজ ভাগ করা হয়। মানের তারতম্য হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। হয়তো মাসকটের কাঠামো তৈরিতে ছেলেরা কাজ করছে। কিন্তু সেটি সাজানোর কাজে মেয়েরা পারদর্শী। এভাবেই চলছে কাজ।’
সরা বিক্রি করছিলেন ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুতমা। তিনি বলেন, ‘নিজের নকশা করা কোনো কিছু বিক্রি হলে খুব ভালো লাগে। সারা বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করি এ সময়ের জন্য। এবার যেহেতু আমাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করছে, তাই দায়িত্বটাও বেশি। ভীষণ উপভোগ করছি।’
‘পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ মিলে হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করেন। তেমনি চারুকলার শিক্ষার্থীরাও ছেলে-মেয়ে মিলেমিশে কাজ করে। আমার তো মনে হয় এটি এমন একটা আয়োজন, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকে না। এটি অন্যদের কাছেও শিক্ষণীয়,’ বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক শিশির ভট্টাচার্য্য। তাঁর কথার সঙ্গে এখানকার শিক্ষার্থীরাও একমত। মিলেমিশে একাত্ম হয়েই তো বৈশাখের সেরা আয়োজন করতে হবে। দম ফেলার ফুরসত নেই এখন তাঁদের। এ ব্যস্ততা যে বৈশাখী মহাযজ্ঞের!
একজন পরিচয় করিয়ে দিলেন তাঁর সঙ্গে। জেসমিন ঝুমা বলেন, ‘সেই প্রথম বর্ষ থেকেই কাজ করছি। শিশির স্যার প্রথম দিন বলেছিলেন, তোমার কাজ তো ভালো। ব্যস। অনুপ্রাণিত হয়ে আরও ভালো করার চেষ্টা করছি। প্রতিবারই ভাবি, এবার নতুন কিছু করব। আর এখানে যাঁর যে কাজ ভালো, তাঁকে সেটি করতে দেওয়া হয়। তিনি ছেলে কি মেয়ে এটা কখনোই কারও মনে হয় না।’
মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের দায়িত্ব থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর। এই শোভাযাত্রা আয়োজনের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য নিজের সৃজনশীলতাকে তাঁরা কাজে লাগান। সবাই মিলে সরাচিত্র, চিত্রকর্ম, মুখোশ ও মাসকট তৈরি করেন। চৈত্র মাস থেকেই শুরু হয়ে যায় এর প্রস্তুতি।
মুখোশে তুলির আঁচড় দিতে ব্যস্ত সুমা চন্দ। কাজের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘১১তম ব্যাচই মূলত এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করছে। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। নিজের সেরা কাজটা উপহার দিতে চায় সবাই। ছেলে-মেয়ের কোনো বৈষম্য থাকে না এখানে। কাজ করতে বেশ রাত হয়ে গেলে বাড়ি থেকে এসে নিয়ে যায়। কারও সমস্যা থাকলে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। যেহেতু চারুকলার শিক্ষার্থী আমরা, তাই বৈশাখের আগের এই ব্যস্ততা পরিবারের সবাই জানে। কোনো অসুবিধা হয় না।’
মৃৎশিল্পের শিক্ষার্থী নবেন্দু সাহা মজা করে বলেন, ‘এবার মনে হচ্ছে মেয়েদের আধিপত্য বেশি। একেকজন একেক কাজ ভালো পারে। সেভাবে কাজ ভাগ করা হয়। মানের তারতম্য হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। হয়তো মাসকটের কাঠামো তৈরিতে ছেলেরা কাজ করছে। কিন্তু সেটি সাজানোর কাজে মেয়েরা পারদর্শী। এভাবেই চলছে কাজ।’
সরা বিক্রি করছিলেন ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুতমা। তিনি বলেন, ‘নিজের নকশা করা কোনো কিছু বিক্রি হলে খুব ভালো লাগে। সারা বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করি এ সময়ের জন্য। এবার যেহেতু আমাদের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করছে, তাই দায়িত্বটাও বেশি। ভীষণ উপভোগ করছি।’
‘পাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ মিলে হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করেন। তেমনি চারুকলার শিক্ষার্থীরাও ছেলে-মেয়ে মিলেমিশে কাজ করে। আমার তো মনে হয় এটি এমন একটা আয়োজন, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকে না। এটি অন্যদের কাছেও শিক্ষণীয়,’ বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষক শিশির ভট্টাচার্য্য। তাঁর কথার সঙ্গে এখানকার শিক্ষার্থীরাও একমত। মিলেমিশে একাত্ম হয়েই তো বৈশাখের সেরা আয়োজন করতে হবে। দম ফেলার ফুরসত নেই এখন তাঁদের। এ ব্যস্ততা যে বৈশাখী মহাযজ্ঞের!
No comments