'বিচার হোক'
একাত্তরে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর ও ফরিদপুরের আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার। তাঁর বিরুদ্ধে নগরকান্দা, সালথা ও বোয়ালমারী এলাকায় নিরীহ নারী-পুরুষ হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে বাহাত্তর সালে বাচ্চুর বিরুদ্ধে বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর বিচারের মুখোমুখি হয়েও অজ্ঞাত কারণে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল ও ৫ মে সালথা ও নগরকান্দা থানায় বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে একাত্তরে স্বজনহারা পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাচ্চু রাজাকারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার পর নগরকান্দা ও সালথা এলাকার স্বজনহারারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, 'বাচ্চু রাজাকার নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা তাঁর বিচার দেখে মরতে চাই।'
স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী বলেন, নগরকান্দার বড়খারদিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার ছিলেন ফরিদপুর জেলা আলবদর বাহিনীর প্রধান। এই বাহিনী নগরকান্দা, সালথা ও বোয়ালমারী এলাকায় নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী বোয়ালমারীর কলারং গ্রামের সুধাংশু কুমার রায়, কালীনগরের জীবন ডাক্তার, হাসামদিয়ার যজ্ঞেশ্বর সাহা, খরসুতির নারায়ণ চন্দ্র কুণ্ডু, হরিপদ মণ্ডল, বড়দিয়ার ধীরেন বিশ্বাস, নগরকান্দার ফুলবাড়িয়ার চিত্তরঞ্জন দাস, পুরুরা গ্রামের মাধব চন্দ্র বিশ্বাস ও মহব্বতকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরে মুজিব বাহিনীর প্রধান শাহ্ মো. আবু জাফর বলেন, 'আমরা ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফেরার পর শুনতে পাই, মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। স্বাধীনতার পর তাঁকে আমরা খুঁজে পাইনি।'
সালথা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে বাচ্চু রাজাকার তাঁর কৃতকর্মের জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে চলেছেন- এটা আনন্দের সংবাদ।'
নগরকান্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আলতাফ হোসেন খান বলেন, 'পাপ করে কখনো পার পাওয়া যায় না। একাত্তরে বাচ্চু রাজাকার নিরীহ মানুষকে খুন করে যে পাপ করেছেন, এবার তার বিচার হবে।'
অভিযোগ রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯ জ্যৈষ্ঠ বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে নগরকান্দার ফুলবাড়িয়া গ্রামে হত্যা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাচ্চু রাজাকার নিজ হাতে ওই গ্রামের চিত্তরঞ্জন দাসকে গুলি করে হত্যা করেন। সে সময় চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী জ্যোৎস্না রানী দাস ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বাড়িঘর লুট ও অকালে স্বামী হারিয়ে চার শিশু সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন জ্যোৎস্না। প্রাণ বাঁচাতে তিনি সন্তানদের নিয়ে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে শরণার্থী ক্যাম্পে অপুষ্টি ও অসুখে তাঁর তিন শিশুসন্তান মারা যায়। বেঁচে থাকে একমাত্র মেয়ে সাগরিকা (৮)। ওই ক্যাম্পে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখে জন্ম নেয় ছোট সন্তান গোপাল। সেই গোপাল এখন স্থানীয় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন জ্যোৎস্না রানী। আদালত বাচ্চু রাজাকারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন জেনে গতকাল তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মরার আগে বাচ্চু রাজাকারের বিচার দেখে যেতে চাই।' তাঁর সন্তান গোপাল দাস বলেন, 'জন্মের আগেই আমাকে পিতৃহারা হতে হয়েছে। এখন পিতৃহন্তার বিচার দেখতে চাই।'
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল ও ৫ মে সালথা ও নগরকান্দা থানায় বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে একাত্তরে স্বজনহারা পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাচ্চু রাজাকারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়ার পর নগরকান্দা ও সালথা এলাকার স্বজনহারারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, 'বাচ্চু রাজাকার নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা তাঁর বিচার দেখে মরতে চাই।'
স্থানীয় একাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী বলেন, নগরকান্দার বড়খারদিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার ছিলেন ফরিদপুর জেলা আলবদর বাহিনীর প্রধান। এই বাহিনী নগরকান্দা, সালথা ও বোয়ালমারী এলাকায় নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী বোয়ালমারীর কলারং গ্রামের সুধাংশু কুমার রায়, কালীনগরের জীবন ডাক্তার, হাসামদিয়ার যজ্ঞেশ্বর সাহা, খরসুতির নারায়ণ চন্দ্র কুণ্ডু, হরিপদ মণ্ডল, বড়দিয়ার ধীরেন বিশ্বাস, নগরকান্দার ফুলবাড়িয়ার চিত্তরঞ্জন দাস, পুরুরা গ্রামের মাধব চন্দ্র বিশ্বাস ও মহব্বতকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরে মুজিব বাহিনীর প্রধান শাহ্ মো. আবু জাফর বলেন, 'আমরা ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফেরার পর শুনতে পাই, মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। স্বাধীনতার পর তাঁকে আমরা খুঁজে পাইনি।'
সালথা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে বাচ্চু রাজাকার তাঁর কৃতকর্মের জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে চলেছেন- এটা আনন্দের সংবাদ।'
নগরকান্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আলতাফ হোসেন খান বলেন, 'পাপ করে কখনো পার পাওয়া যায় না। একাত্তরে বাচ্চু রাজাকার নিরীহ মানুষকে খুন করে যে পাপ করেছেন, এবার তার বিচার হবে।'
অভিযোগ রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯ জ্যৈষ্ঠ বাচ্চু রাজাকারের নেতৃত্বে নগরকান্দার ফুলবাড়িয়া গ্রামে হত্যা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাচ্চু রাজাকার নিজ হাতে ওই গ্রামের চিত্তরঞ্জন দাসকে গুলি করে হত্যা করেন। সে সময় চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী জ্যোৎস্না রানী দাস ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বাড়িঘর লুট ও অকালে স্বামী হারিয়ে চার শিশু সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন জ্যোৎস্না। প্রাণ বাঁচাতে তিনি সন্তানদের নিয়ে ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে শরণার্থী ক্যাম্পে অপুষ্টি ও অসুখে তাঁর তিন শিশুসন্তান মারা যায়। বেঁচে থাকে একমাত্র মেয়ে সাগরিকা (৮)। ওই ক্যাম্পে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখে জন্ম নেয় ছোট সন্তান গোপাল। সেই গোপাল এখন স্থানীয় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন জ্যোৎস্না রানী। আদালত বাচ্চু রাজাকারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন জেনে গতকাল তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মরার আগে বাচ্চু রাজাকারের বিচার দেখে যেতে চাই।' তাঁর সন্তান গোপাল দাস বলেন, 'জন্মের আগেই আমাকে পিতৃহারা হতে হয়েছে। এখন পিতৃহন্তার বিচার দেখতে চাই।'
No comments