১৬ এপ্রিল থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট বিমানে

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের এক দফা দাবিতে ১৬ এপ্রিল থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে 'বিমান বাঁচাও ঐক্য পরিষদ'। গতকাল মঙ্গলবার কুর্মিটোলায় বিমানের প্রধান কার্যালয় 'বলাকা'য় সমাবেশের পর ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোশিকুর রহমান এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।


মোশিকুর বলেন, '১৬ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ১৮ এপ্রিল সকাল ৬টা পর্যন্ত বিমানের কোনো কর্মী কাজে যোগ দেবেন না। তবে এর আগেই আমাদের দাবি পূরণ হয়ে গেলে এর আর কোনো প্রয়োজন পড়বে না। নইলে এরপর লাগাতার ধর্মঘটের কর্মসূচি দেওয়া হবে।'
সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় মোশিকুর রহমান বলেন, 'বিমানের আর্থিক ক্ষতি হোক, এমন কর্মসূচি আমরা দিতে চাইনি। কিন্তু এক মাস ধরে শ্রম আইন মেনে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি করে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে বিমানকে অচল করে দেওয়ার কর্মসূচি দিতে হচ্ছে। ধর্মঘট চলাকালে সব ধরনের প্রশাসনিক কাজ ও ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ থাকবে। ধর্মঘটের জন্য আর্থিকভাবে বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর দায়-দায়িত্ব বিমান কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।'
পরিচালনা পর্যদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব কটি সংগঠন 'বিমান বাঁচাও ঐক্য পরিষদের' ব্যানারে গত ৫ মার্চ থেকে আন্দোলন করে আসছে। গত ২৫ মার্চ এক কর্মসূচি থেকে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিমানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। সেদিনই গতকালের ওই সমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া হয়।
মহাসমাবেশে যোগ দিতে গতকাল সকাল ১১টার দিকে শত শত বিমানকর্মী বলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা পর্ষদ বাতিল এবং এর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দেন। ওই সময় বিপুলসংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ বলাকা ভবন ঘিরে রাখে। সমাবেশ শেষে পর্ষদ চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)-এর সভাপতি ক্যাপ্টেন এস এম হেলাল, সোসাইটি অব এয়ারক্রাফট মেনটেইনেন্স অ্যাসোসিয়েশন (সায়েব)-এর আখতারুজ্জামান, ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ফেনা) এস এ খালেক, কেবিন ক্রু অ্যাসোসিয়েশনের মাসুদুর রহমান, বিমান অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের জহিরুল হক, বিমান শ্রমিক ইউনিয়নের মো. তরফদার প্রমুখ।
ক্যাপ্টেন এস এম হেলাল বলেন, বিমানের দুর্নীতিবাজ পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে জবাবদিহিমূলক পর্ষদ গঠন করতে হবে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এই এক দফা দাবি আদায়ে বিমানের সব সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিরামহীন আন্দোলন চলবে।
আখতারুজ্জামান বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে নয়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বিমানকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করছেন। কারণ বিমান রক্ষার সঙ্গে রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি দেশের সুনামও জড়িত।
জহিরুল হক বলেন, 'ঐক্য পরিষদের চলমান আন্দোলন সরকারবিরোধী নয়। বরং সরকারকে সহায়তা করার জন্য। আমরা বিমানকে দুর্নীতিমুক্ত এবং এতে স্বচ্ছ প্রশাসন দেখতে চাই।'

No comments

Powered by Blogger.