ভিন্ন আয়োজন

মঞ্চে নেই কোনো সভাপতি বা বিশেষ অতিথি। এর বদলে রয়েছে তানপুরা, হারমোনিয়াম আর তবলা। হঠাৎ মঞ্চের বাঁ দিকটায় খানিকটা আলো পড়ল রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হকের ওপর। গানের বেদনার সুর দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তেই অনুষ্ঠানের ঘোষণাপত্র পাঠ করলেন রেহানা সামদানী।


বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে ১৯ মার্চ ছায়ানট মিলনায়তনে নারীপক্ষের আয়োজনে ‘কালের যাত্রায় ভুলেছি যাদের’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের চিত্র এটি। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ওপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরতেই এই ভিন্নমাত্রার আয়োজন।
মূল অনুষ্ঠান শুরু হতেই মঞ্চে এলেন নায়লা আজাদ। তিনি একক অভিনয় করলেন সৈয়দ শামসুল হকের নাটক পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়। এরপর ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবৃত্তি আর সুরতীর্থের দলীয় গান। আবারও একক অভিনয়। দেখানো হলো কমফোর্ট ওমেন। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানে নারীনির্যাতনের চিত্র। এরপর ধারাবাহিকভাবে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের নাটকমুখোশ এবং সুরতীর্থের গান পরিবেশিত হয়।
পুরো আয়োজন শেষ হয় একটি নৃত্যের মাধ্যমে। চমৎকার কোরিওগ্রাফিতে এই উপস্থাপনাটি ছিল অসাধারণ। বীরাঙ্গনা সেই নারীরা পেয়েছেন অপমান, বিদ্রূপ আর তাচ্ছিল্য। উদ্বেগ, শঙ্কা, নিরাপত্তা আর মর্যাদার সংকটে তাঁরা কাটিয়েছেন দীর্ঘ ৪০ বছর। বীরাঙ্গনাদের পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজও সরকারিভাবে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। এই বীর নারীদের মর্যাদা আর সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্যই এই ব্যতিক্রম প্রতিবাদী আয়োজন। জানালেন ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী তামান্না খান। নারীপক্ষের এই আয়োজনে উপস্থিত হয়েছিলেন ফেরদৌস আজীম, সারা যাকের, আলী যাকের, শিরীন হক, শিরীন আখতারসহ আরও অনেকে।
সুচিত্রা সরকার

No comments

Powered by Blogger.