ধনবান হতে গিয়ে... by আরিফ হোসেন
ডেসটিনি নিয়ে প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় খবর থাকছে। অনেকের অনেক টাকা গচ্চা গেছে বা যাবে। স্বপ্ন ভেঙে খান খান। অনেক অনেক টাকা উপার্জনের স্বপ্ন। জীবনটাকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন। মঙ্গলবার সমকাল জানিয়েছে, 'পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হায় হায় কোম্পানি :দিনাজপুরে বাবা ও মেয়ের প্রতারণা'।
রেভোনেক্স বিডি কোম্পানি লিমিটেডের প্রতি ৪০০ বিনিয়োগকারী আস্থা রেখেছিল। এখন সবার মাথায় হাত। বাবা-মেয়ে নিজেদের বাড়িতেই অফিস স্থাপন করেছিলেন। সদস্যদের কাছ থেকে ফি নেন ৭ হাজার টাকা করে। প্রলোভন দেখানো হয়, মাসে ৩০ শতাংশ হারে ২১০০ টাকা করে লাভ দেওয়া হবে। ৬ মাস পরপর মুনাফা মিলবে ১২ হাজার ৬০০ টাকা। এমন লাভের সুযোগ থাকলে কে না টাকা খাটাবে? কিছু লোক এমন মুনাফা হাতে পাওয়ায় অন্যরা উৎসাহিত হয়েছে। মাসে ৩০ পার্সেন্ট মুনাফার অর্থ হচ্ছে, বছরে কমপক্ষে ৩৬০ পার্সেন্ট মুনাফা। অবিশ্বাস্য এক অঙ্ক বৈকি। চক্রবৃদ্ধি হারে মুনাফার হিসাব যাদের জানা তারা বলবেন, অঙ্কটা চারশ' শতাংশ ছাড়াবে। আপনি লাভের টাকাটাও বিনিয়োগ করলে নতুন করে লাভ আসবে। এমন পরিস্থিতিতে এটাই স্বাভাবিক যে, পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসবে বিনিয়োগকারীরা। তারা বেহুঁশ হবেই হবে।
এ সময়ে হুঁশ থাকার কথা সর্বাগ্রে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। একটু মাথা ঘামালেই কর্তাব্যক্তিদের বোঝার কথা যে, বছরে কমপক্ষে ৩৬০ শতাংশ লাভ করার মতো বৈধ ব্যবসা বাংলাদেশ কেন, কোনো দেশেই থাকার কথা নয়। গ্রামের একটি বাজারে টাকার থলি নিয়ে অনেক মানুষ কেন ছুটে আসছে_ সেটা তারা খোঁজ নেবে না? নাকি তারা ম্যানেজ হয়ে গিয়েছিল?
টাকার থলি নিয়ে যারা ছুটে এসেছিল, তাদের দোষ দেওয়াই যায়। শেয়ারবাজারে যারা এসেছিল, তাদের সম্পর্কেও এমন কথা বলা যায়। চরম ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে স্বর্ণালঙ্কার বা জমি বিক্রি করে কেউ টাকা খাটায়? বলতে পারি যে, মানুষের ধনবান হওয়ার স্বপ্ন থাকে; এদের মধ্যে একদল থাকে যারা জানে কী করে অপরকে ঠকিয়ে নিজের ভাগ্যটা বদলাতে হয়। শেয়ারবাজারে এটা ঘটেছে। ডেসটিনি গ্রুপ এটা করেছে। দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় এটাই আমরা দেখতে পেলাম। যশোরের কোটচাঁদপুরের 'হুন্ডি কাজল'-এর কথা মনে আছে তো? সেও এভাবেই লাভের আশা দেখিয়েছিল। যারা এভাবে 'টাকা খাটিয়ে' বিপদে পড়ে, তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সরকার বলবে, আমাদের তো জানিয়ে এটা করেনি। কিন্তু দেশের শাসনভার যার হাতে থাকে; তাকে অবশ্যই দায় নিতে হয়। শেয়ারবাজারে যখন অস্বাভাবিক সব লেনদেন হচ্ছিল, তখনও দায় ছিল সরকারের। কিন্তু কিছু লোক যে ম্যানেজ হয়েছিল! তারা বাজারকে উঠতে দিয়েছে, যাতে আরও অনেক অনেক লোক টাকার বস্তা নিয়ে ছুটে আসে। সেটাই ঘটেছিল। এক সময়ে অনেক লোক পথে বসে গেল। আর কিছু লোক টাকার পাহাড়ে উঠে এখন মিটিমিটি হাসছে।
দিনাজপুরের সিরাজুল ইসলাম এবং তার মেয়ে সুলতানা পারভীন মৌসুমীও হয়তো হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ে বলছে, মানুষ এত্ত বোকা কেন? এত লাভ যে কোনো ব্যবসাতেই হয় না_ সে সামান্য বুদ্ধিও তাদের ঘটে ধরে না?
কিন্তু বাস্তবে এ গল্পের যে শেষ নেই। এ ধরনের ঠকবাজরা যুগে যুগে সব সমাজে থাকে। তারা সুযোগ নেয় মানুষের রাতারাতি ধনী হয়ে ওঠার স্বপ্নের। সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করে, তাতে মাত্রাটা কমিয়ে রাখা যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য! এমনটি কম ক্ষেত্রেই দেখা যায়। তারা প্রথমদিকে চোখ বন্ধ করে রাখে। প্রতারণা হচ্ছে, এ খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতে থাকলে তারা নড়েচড়ে বসে, কিন্তু ততক্ষণে যে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
এ সময়ে হুঁশ থাকার কথা সর্বাগ্রে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। একটু মাথা ঘামালেই কর্তাব্যক্তিদের বোঝার কথা যে, বছরে কমপক্ষে ৩৬০ শতাংশ লাভ করার মতো বৈধ ব্যবসা বাংলাদেশ কেন, কোনো দেশেই থাকার কথা নয়। গ্রামের একটি বাজারে টাকার থলি নিয়ে অনেক মানুষ কেন ছুটে আসছে_ সেটা তারা খোঁজ নেবে না? নাকি তারা ম্যানেজ হয়ে গিয়েছিল?
টাকার থলি নিয়ে যারা ছুটে এসেছিল, তাদের দোষ দেওয়াই যায়। শেয়ারবাজারে যারা এসেছিল, তাদের সম্পর্কেও এমন কথা বলা যায়। চরম ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে স্বর্ণালঙ্কার বা জমি বিক্রি করে কেউ টাকা খাটায়? বলতে পারি যে, মানুষের ধনবান হওয়ার স্বপ্ন থাকে; এদের মধ্যে একদল থাকে যারা জানে কী করে অপরকে ঠকিয়ে নিজের ভাগ্যটা বদলাতে হয়। শেয়ারবাজারে এটা ঘটেছে। ডেসটিনি গ্রুপ এটা করেছে। দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় এটাই আমরা দেখতে পেলাম। যশোরের কোটচাঁদপুরের 'হুন্ডি কাজল'-এর কথা মনে আছে তো? সেও এভাবেই লাভের আশা দেখিয়েছিল। যারা এভাবে 'টাকা খাটিয়ে' বিপদে পড়ে, তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সরকার বলবে, আমাদের তো জানিয়ে এটা করেনি। কিন্তু দেশের শাসনভার যার হাতে থাকে; তাকে অবশ্যই দায় নিতে হয়। শেয়ারবাজারে যখন অস্বাভাবিক সব লেনদেন হচ্ছিল, তখনও দায় ছিল সরকারের। কিন্তু কিছু লোক যে ম্যানেজ হয়েছিল! তারা বাজারকে উঠতে দিয়েছে, যাতে আরও অনেক অনেক লোক টাকার বস্তা নিয়ে ছুটে আসে। সেটাই ঘটেছিল। এক সময়ে অনেক লোক পথে বসে গেল। আর কিছু লোক টাকার পাহাড়ে উঠে এখন মিটিমিটি হাসছে।
দিনাজপুরের সিরাজুল ইসলাম এবং তার মেয়ে সুলতানা পারভীন মৌসুমীও হয়তো হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ে বলছে, মানুষ এত্ত বোকা কেন? এত লাভ যে কোনো ব্যবসাতেই হয় না_ সে সামান্য বুদ্ধিও তাদের ঘটে ধরে না?
কিন্তু বাস্তবে এ গল্পের যে শেষ নেই। এ ধরনের ঠকবাজরা যুগে যুগে সব সমাজে থাকে। তারা সুযোগ নেয় মানুষের রাতারাতি ধনী হয়ে ওঠার স্বপ্নের। সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করে, তাতে মাত্রাটা কমিয়ে রাখা যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য! এমনটি কম ক্ষেত্রেই দেখা যায়। তারা প্রথমদিকে চোখ বন্ধ করে রাখে। প্রতারণা হচ্ছে, এ খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতে থাকলে তারা নড়েচড়ে বসে, কিন্তু ততক্ষণে যে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
No comments