দুর্ধর্ষ অপরাধীদের জামিন-আইনের ফাঁকফোকর বন্ধে ব্যবস্থা নিন
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গত চার মাসে ১৪০ জন দুর্ধর্ষ অপরাধী জামিনে বেরিয়ে গেছে। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিদিন চারজন করে দাগি আসামি বের হয়ে গেছে। গত সোমবারের কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খুন, ডাকাতি, চোখে মলম লাগানো এবং ছিনতাইসহ গুরুতর অভিযোগে আটক ব্যক্তিরা এভাবে জামিন পেয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে এসব অপরাধ পুনরায় অনেক বেড়ে গেছে। জামিনের ব্যাপারটি ক্রমেই আমাদের কাছে রহস্যময় হয়ে উঠছে।
নিম্ন আদালতে হরহামেশাই এমনসব আসামি জামিন পাচ্ছে, যা শুনলেও আমরা ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন হই। আর শুধু নিম্ন আদালতই বা বলি কেন, এর আগে উচ্চ আদালত থেকেও প্রশ্নবিদ্ধ জামিনের আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার বহু ঘটনা ঘটেছে। খুন-ডাকাতি-রাহাজানির মামলার আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেছে। যাবজ্জীবন, এমনকি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও অভিনব পন্থায় প্রতারণার মাধ্যমে জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে বলে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। আর এসব কাজে আসামিদের সহায়তা করেন এক শ্রেণীর অসৎ আইনজীবী এবং আদালতের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ক্ষেত্রে বিচারকদের উদাসীনতাকেও কেউ কেউ দায়ী করেছেন। এ ধরনের ঘৃণ্য তৎপরতার জন্য ইতিমধ্যেই কিছুসংখ্যক আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। কিন্তু মামলা সঠিক গতিতে এগোচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। উল্টোদিকে, বিচার বিভাগের কিছু দুর্বলতাও আমাদের চোখে পড়ে। এমন বহু নিরপরাধ লোক আছেন, যাঁরা বছরের পর বছর জেলখানায় পচে মরছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কিছু অসৎ সদস্যকে খুশি করতে না পারায় তাঁদের গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়। এগুলো আমাদের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ কমিয়ে দিচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই দেশের সর্বোচ্চ আদালতকেই এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। কয়েক দিন আগেও দেশের প্রধান বিচারপতি আদালতের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছেন। আমরা আশা করি, তিনি তাঁর কথাকে কাজে পরিণত করার জন্য সাধ্যমতো সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
রাষ্ট্রকেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার পথে এখনো আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, কিন্তু চট্টগ্রামে আজ কী কী রায় হলো, ঢাকায় বসে তা দেখার উপায় নেই। একজন বিচারক চাইলেও কোনটি প্রকৃত এজাহার, আর কোনটি ভুয়া এজাহার, তা মিলিয়ে দেখতে পারবেন না। কারাগারগুলো ভুয়া জামিননামা এবং প্রকৃত জামিনাদেশ পরখ করে দেখতে পারে না। অপরাধী এবং অসৎ আইনজীবীরা এসব দুর্বলতারই সুযোগ নিয়ে থাকে। এ জন্য বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার পাশাপাশি যথেষ্ট লোকবলেরও ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়াটিও যথেষ্ট স্বচ্ছ হতে হবে। পাশাপাশি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধাগুলো আদালতে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেলে তা হবে জাতিগতভাবে আত্মহত্যারই শামিল। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এই লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
রাষ্ট্রকেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার পথে এখনো আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, কিন্তু চট্টগ্রামে আজ কী কী রায় হলো, ঢাকায় বসে তা দেখার উপায় নেই। একজন বিচারক চাইলেও কোনটি প্রকৃত এজাহার, আর কোনটি ভুয়া এজাহার, তা মিলিয়ে দেখতে পারবেন না। কারাগারগুলো ভুয়া জামিননামা এবং প্রকৃত জামিনাদেশ পরখ করে দেখতে পারে না। অপরাধী এবং অসৎ আইনজীবীরা এসব দুর্বলতারই সুযোগ নিয়ে থাকে। এ জন্য বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার পাশাপাশি যথেষ্ট লোকবলেরও ব্যবস্থা করতে হবে। বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়াটিও যথেষ্ট স্বচ্ছ হতে হবে। পাশাপাশি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধাগুলো আদালতে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা কমে গেলে তা হবে জাতিগতভাবে আত্মহত্যারই শামিল। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এই লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
No comments