বাঁধভাঙা মাথা ব্যথা?
সকালে ঘুম থেকে উঠলেন খুব ফুরফুরে মনে। দিনের শুরুটা আনন্দময়। দিন গড়িয়ে মধ্যাহ্ন। গোধূলিবেলা। এরপর হয়তো ক্লান্ত দেহে ঘরে ফেরা। এরই মধ্যে কাজ করতে করতে টের পান নিত্যযন্ত্রণা মাথাব্যথা। কর্মজীবী নারী-পুরুষ অনেকেই প্রতিনিয়ত ভুগছেন এই মাথাব্যথায়। রাজধানীতে বসবাসরত একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন_ 'মাথাব্যথা যে কী অসহ্য একটা জিনিস তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পাই! সকালবেলা একটু সুস্থ থাকলেও
দুপুরের পর কিংবা রাতে মনে হয় আমার মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। দু'পাশের রগ ফুলে থাকে। আমার একটু সাইনাসের সমস্যা আছে। ডাক্তার দেখিয়েছি। বলেছেন অপারেশন করাতে হবে। সাইনাসের কারণে আমার মাথাব্যথা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এর ফলে আমি কোনো কাজ মনোযোগ সহকারে করতে পারি না।'
শুধুই কি সাইনাসের কারণে এই মাথাব্যথা? নাকি নাগরিক ব্যস্ততা, যন্ত্রনির্ভর কাজ এই মাথাব্যথার অন্যতম কারণ? এমন অনেককেই দেখা যায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সুযোগ নিতে গিয়ে ভুগছেন এই মাথাব্যথায়। এমনই একজন আনোয়ারুল আলম। তিনি জানান, 'সকালে ঘুম থেকে উঠি ফ্রেশ মাথায়। কিন্তু সময় যত গড়ায়, দেখি আমার মাথাব্যথা বাড়তেই থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মাথাব্যথাটা খুব তীব্র হয়। আমি খেয়াল করে দেখেছি, অনেকক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বললে নয়তো কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার মাথাব্যথাটা শুরু হয়।'
তথ্যপ্রযুক্তির নানা ব্যবহার ছাড়াও ব্যক্তিভেদে একেকজনের একেক কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথার কারণে বিঘ্ন ঘটে নিত্য কাজের। তাই মাথাব্যথা রোধ করার জন্য কী কী উপায় অবলম্বন করে সুস্থ থাকা যায় তার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। তিনি বলেন, 'অসংখ্য মানুষ ক্রনিক হেডেকে ভুগছেন প্রতিদিন। কেউ কেউ যান ডাক্তারের কাছে। অনেকে ফার্মেসি থেকে পেইনকিলার কিনে খান। উপশম হয় কিছুটা মাত্র। যারা ভাবেন মাথাব্যথা হয় ভাগ্যের দোষে, ডাক্তার কী করবেন? কথাটা ঠিক নয়। মাথাব্যথা সমস্যার সমাধান এখন অনেক উন্নত। তাই পেশাদারি পরামর্শ নেওয়া খুবই দরকার। তা না করে যদি প্রায়শ বেদনার বড়ি গিলে যেতে থাকেন তাহলে অবস্থা হবে আরও শোচনীয়। তাই মেনে চলুন কিছু নিয়মকানুন।'
ষ কাজের টেবিল এমনভাবে বিন্যস্ত করুন, যে জিনিসগুলো ব্যবহার করেন সেগুলো যেন সহজে হাতের নাগালের মধ্যে থাকে, যাতে অনর্থক আগ বাড়িয়ে এগিয়ে পেশির ওপর চাপ না দিতে হয়।
ষ সম্ভব হলে দিনের কাজ এমনভাবে তৈরি করুন যাতে একই কাজ দীর্ঘসময় ধরে করতে না হয়। তাহলে বিভিন্ন পেশির ব্যবহার মাথাব্যথা প্রতিহত করবে।
ষ দীর্ঘ ফোনালাপ থাকলে দাঁড়িয়ে পড়ূন সে আলাপে। ক্লান্ত পায়ের পেশিগুলো টান টান করার এই হলো সুযোগ। গলা ও ঘাড়ের মধ্যে ফোন রেখে আলাপ করবেন না। হেডসেট থাকলে তা ব্যবহার করুন।
ষ কম্পিউটার স্ক্রিন এমনভাবে বিন্যস্ত করুন, এটি দেখতে হলে যেন সোজাসুজি তাকাতে হয়। নিচু হয়ে বা উপর দিকে তাকিয়ে নয়। হাতে লেখা কোনো কিছু টাইপ করতে হলে লেখাটি স্ক্রিনের ঠিক পাশে রাখুন।
ষ ড্রাইভ করার সময় হেডবেল্টকে অ্যাডজাস্ট করে নিন, যাতে মাথার সঠিক অবলম্বন হয়। দীর্ঘ ড্রাইভের পরও মাথাব্যথা হবে না।
ষ ঘুমানোর জন্য ভালো বালিশ ও তোশক ব্যবহার করুন। একটি বালিশ ব্যবহার করা ভালো।
এ ছাড়া আরও কিছু উপায় উপশম করতে পারে আপনার এই নিত্য মাথাব্যথা।
ঘাম ঝরান শরীরের :মাথাব্যথা চিকিৎসার জন্য শরীরচর্চা উপকারী। নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম পেশি শিথিল করে। রক্ত চলাচল বাড়ায়।
ম্যাসাজ করুন :ম্যাসাজ পেশি শিথিল করার একটি উন্নত উপায়। মাথাব্যথা রোধে কার্যকর। মাথাব্যথা রোধে নিজেকে নিজে ম্যাসাজ করুন।
হাঁটুন :শরীরচর্চায় মাথাব্যথা রোধ হয়। যদি আগেভাগে করা হয়, একটু হাঁটা কিংবা জগিং আপনার মাথাব্যথা রোধে ভূমিকা পালন করবে।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর যদি পছন্দ অনুযায়ী একটু ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে কুসুম গরম পানি দিয়ে সেরে নিন একটা সতেজ গোসল। দেখবেন মাথাব্যথা কমে গেছে অনেকখানি। কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি ছাপিয়ে মনে বিরাজ করবে প্রশান্তি। আর ব্যথাটা যদি অসহনীয় তীব্র হয়, তবে দেরি না করে শরণাপন্ন হওয়া উচিত ডাক্তারের।
লেখা : সুদীপ্তা শিউলী
শুধুই কি সাইনাসের কারণে এই মাথাব্যথা? নাকি নাগরিক ব্যস্ততা, যন্ত্রনির্ভর কাজ এই মাথাব্যথার অন্যতম কারণ? এমন অনেককেই দেখা যায় আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সুযোগ নিতে গিয়ে ভুগছেন এই মাথাব্যথায়। এমনই একজন আনোয়ারুল আলম। তিনি জানান, 'সকালে ঘুম থেকে উঠি ফ্রেশ মাথায়। কিন্তু সময় যত গড়ায়, দেখি আমার মাথাব্যথা বাড়তেই থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মাথাব্যথাটা খুব তীব্র হয়। আমি খেয়াল করে দেখেছি, অনেকক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বললে নয়তো কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার মাথাব্যথাটা শুরু হয়।'
তথ্যপ্রযুক্তির নানা ব্যবহার ছাড়াও ব্যক্তিভেদে একেকজনের একেক কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথার কারণে বিঘ্ন ঘটে নিত্য কাজের। তাই মাথাব্যথা রোধ করার জন্য কী কী উপায় অবলম্বন করে সুস্থ থাকা যায় তার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। তিনি বলেন, 'অসংখ্য মানুষ ক্রনিক হেডেকে ভুগছেন প্রতিদিন। কেউ কেউ যান ডাক্তারের কাছে। অনেকে ফার্মেসি থেকে পেইনকিলার কিনে খান। উপশম হয় কিছুটা মাত্র। যারা ভাবেন মাথাব্যথা হয় ভাগ্যের দোষে, ডাক্তার কী করবেন? কথাটা ঠিক নয়। মাথাব্যথা সমস্যার সমাধান এখন অনেক উন্নত। তাই পেশাদারি পরামর্শ নেওয়া খুবই দরকার। তা না করে যদি প্রায়শ বেদনার বড়ি গিলে যেতে থাকেন তাহলে অবস্থা হবে আরও শোচনীয়। তাই মেনে চলুন কিছু নিয়মকানুন।'
ষ কাজের টেবিল এমনভাবে বিন্যস্ত করুন, যে জিনিসগুলো ব্যবহার করেন সেগুলো যেন সহজে হাতের নাগালের মধ্যে থাকে, যাতে অনর্থক আগ বাড়িয়ে এগিয়ে পেশির ওপর চাপ না দিতে হয়।
ষ সম্ভব হলে দিনের কাজ এমনভাবে তৈরি করুন যাতে একই কাজ দীর্ঘসময় ধরে করতে না হয়। তাহলে বিভিন্ন পেশির ব্যবহার মাথাব্যথা প্রতিহত করবে।
ষ দীর্ঘ ফোনালাপ থাকলে দাঁড়িয়ে পড়ূন সে আলাপে। ক্লান্ত পায়ের পেশিগুলো টান টান করার এই হলো সুযোগ। গলা ও ঘাড়ের মধ্যে ফোন রেখে আলাপ করবেন না। হেডসেট থাকলে তা ব্যবহার করুন।
ষ কম্পিউটার স্ক্রিন এমনভাবে বিন্যস্ত করুন, এটি দেখতে হলে যেন সোজাসুজি তাকাতে হয়। নিচু হয়ে বা উপর দিকে তাকিয়ে নয়। হাতে লেখা কোনো কিছু টাইপ করতে হলে লেখাটি স্ক্রিনের ঠিক পাশে রাখুন।
ষ ড্রাইভ করার সময় হেডবেল্টকে অ্যাডজাস্ট করে নিন, যাতে মাথার সঠিক অবলম্বন হয়। দীর্ঘ ড্রাইভের পরও মাথাব্যথা হবে না।
ষ ঘুমানোর জন্য ভালো বালিশ ও তোশক ব্যবহার করুন। একটি বালিশ ব্যবহার করা ভালো।
এ ছাড়া আরও কিছু উপায় উপশম করতে পারে আপনার এই নিত্য মাথাব্যথা।
ঘাম ঝরান শরীরের :মাথাব্যথা চিকিৎসার জন্য শরীরচর্চা উপকারী। নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম পেশি শিথিল করে। রক্ত চলাচল বাড়ায়।
ম্যাসাজ করুন :ম্যাসাজ পেশি শিথিল করার একটি উন্নত উপায়। মাথাব্যথা রোধে কার্যকর। মাথাব্যথা রোধে নিজেকে নিজে ম্যাসাজ করুন।
হাঁটুন :শরীরচর্চায় মাথাব্যথা রোধ হয়। যদি আগেভাগে করা হয়, একটু হাঁটা কিংবা জগিং আপনার মাথাব্যথা রোধে ভূমিকা পালন করবে।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর যদি পছন্দ অনুযায়ী একটু ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে কুসুম গরম পানি দিয়ে সেরে নিন একটা সতেজ গোসল। দেখবেন মাথাব্যথা কমে গেছে অনেকখানি। কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি ছাপিয়ে মনে বিরাজ করবে প্রশান্তি। আর ব্যথাটা যদি অসহনীয় তীব্র হয়, তবে দেরি না করে শরণাপন্ন হওয়া উচিত ডাক্তারের।
লেখা : সুদীপ্তা শিউলী
No comments