কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ!
স্পোর্টস ডেস্ক: কারও পৌষ মাস আর কারও সর্বনাশ! বছরের শেষদিনে এ অবস্থাই হয়েছে ইংলিশ ফুটবল সমর্থকদের। হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমীর থার্টিফার্স্ট নাইটের আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর চেলসির মতো বড় দল যদি একদিনেই হার মানে, তবে অবস্থাটা কি হতে পারে- তা সহজেই অনুমেয়। নিচের দলের কাছে উপরের দিকের দল দু’টির এমন হারে অনেকের বিশেষ করে ম্যানচেস্টার সিটি আর আর্সেনাল শিবিরে বয়ে যায় খুশির বন্যা। কাল সিটি টপকে গেছে ইউনাইটেডকে আর আর্সেনাল টপকে গেছে চেলসিকে। বছরের বিদায়ী সূর্যটি সবচেয়ে বেশি বেদনাবিধূর মনে হতে পারে ম্যানইউ বস অ্যালেক্স ফার্গুসনের জন্য। নিজের ৭০তম জন্মদিন যে এতটা হতাশার হবে- তা হয়তো কল্পনাও করেননি তিনি। ইপিএল-এ শনিবার তালিকার একেবারের নিচের দিকের দল ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের কাছে ৩-২ গোলে হেরে গেছে ফার্গুসনের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর অ্যাস্টন ভিলার কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে চেলসি। তবে এদিন ১-০ গোলে কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সকে হারিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে আর্সেনাল। ১৯ খেলায় আর্সেনালের পয়েন্ট ৩৬। পঞ্চম স্থানে নেমে যাওয়া চেলসির পয়েন্ট সমান খেলায় ৩৪। ১৯ খেলায় ম্যান ইউ’র পয়েন্ট ৪৫। সমান খেলায় ব্ল্যাকবার্নের পয়েন্ট ১৪। শীর্ষে থেকে বছর শুরু করার সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারলো না বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট একই হলেও তারা খেলেছে ১৮ ম্যাচ। নিজেদের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মূলত গোলরক্ষক ডেভিডের ভুলে খেলার ৮০ মিনিটে তৃতীয় গোলটি খেয়ে বসে ম্যান ইউ। ব্ল্যাকবার্নের ডিফেন্ডার গ্র্যান্ট হ্যানলেইর ওই গোলই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। এই মওসুমে এটা ব্ল্যাকবার্নের তৃতীয় জয় হলেও প্রতিপক্ষের মাটিতে এটিই প্রথম। ম্যাচ শেষে বিক্ষুব্ধ ফার্গুসন বলেন, ‘এটা একটা বিপর্যয়। এমনটা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।’ বছরের শেষদিনে নিজেদের মাঠে তালিকার সবচেয়ে নিচের দলের সঙ্গে খেলা। তার উপর আবার কোচের জন্মদিন। স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের মেজাজে ছিল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ৭৫ হাজার দর্শক। কিন্তু তাদের স্তব্ধ করে দিয়ে খেলার ১৬ মিনিটে এগিয়ে যায় ব্ল্যাকবার্ন। অতিথি ডিফেন্ডার ক্রিস্টোফার সাম্বাকে অবৈধভাবে বাধা দেন দিমিতার বারবেতভ। পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি। গোল করেন ইয়াকুবু।
দ্বিতীয়ার্ধের ছয় মিনিটে নাইজেরিয়ার ইয়াকুবু ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। অবশ্য এক মিনিট পরই ব্যবধান কমিয়ে আনেন ম্যান ইউ’র স্ট্রাইকার বারবেতভ। ৬২ মিনিটে বারবেতভের দ্বিতীয় গোল খেলায় সমতা ফেরায়। তবে নিজেদের ভুলে শেষ পর্যন্ত মওসুমের সবচেয়ে বড় অঘটনের শিকার হতে হয় ম্যান ইউকে। পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে থাকা টটেনহ্যামও এদিন কোন রকমে ১-১ গোলে ড্র করেছে সোয়ানসি সিটির সঙ্গে। ২৩ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে চেলসিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন দিদিয়ের দ্রগবা। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অ্যাস্টন ভিলার পক্ষে ২৮ মিনিটে স্টিফেন আয়ারল্যান্ড খেলায় সমতা ফেরান। শেষদিকে ৮৩ ও ৮৬ মিনিটের মাথায় যথাক্রমে স্টিলিয়ান পেত্রোভ ও ড্যারেন বেন্ট গোল করে লন্ডনের দলটির সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন।
No comments