পরিবহনে নৈরাজ্য
তোহুর আহমদ: সরকারি সিদ্ধান্তের আগেই পরিবহন খাতে ভাড়া নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক নৈরাজ্য। তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। নীতি বা নিয়মের তোয়াক্কা করছে না পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। গতকাল বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে বিভিন্ন বাসে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের হাতাহাতি, বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির ঘটনা পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ১
ঘটেছে। পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আবার যেসব বাস গ্যাসে চলে সেসব বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। কিছু অসাধু পরিবহন মালিক ও শ্রমিক গ্যাসের দাম বাড়লেও ভাড়া বৃদ্ধি করে। আবার তেলের দাম বাড়লেও ভাড়া বাড়িয়ে ফায়দা লোটে- এমন অভিযোগ যাত্রীদের। তবে এসব অসাধু পরিবহন মালিক শ্রমিক নিজেদের ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা বলে পরিচয় দেয়। ফলে তাদের কাছে পুলিশ প্রশাসনও অসহায় হয়ে পড়ে। অবশ্য সীমিত কিছু ক্ষেত্রে পরিবহনের মালিক বাড়তি ভাড়া আদায়ের নির্দেশ না দিলেও পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এমন চিত্র দেখা গেছে। ওদিকে শুক্রবার সড়ক ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সরকার ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করার আগে কেউ ভাড়া বাড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৫ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী এখন পেট্রল লিটারপ্রতি ৯১ টাকা, অকটেন ৯৪, কেরোসিন ৬১, ডিজেল ৬১ ও ফার্নেস ওয়েল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে পরিবহন নৈরাজ্যের নানা চিত্র দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণ জানতে চাইলে পরিবহন শ্রমিকরা মারমুখি হয়ে উঠেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে পালিয়ে গেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ভাড়া বাড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিবহন শ্রমিকরা স্বাভাবিক এবং যুক্তিসঙ্গত আচরণ করেননি। একইভাবে উত্তেজিত মারমুখি ছিলেন যাত্রীরা। বিশেষ করে রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষ যারা লোকাল বাসে চলাচল করে থাকেন তাদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। মিরপুর ১-এর ভিশন গার্মেন্টসের সুপারভাইজার জালাল আহমেদ গতকাল তানজিল পরিবহনে মিরপুর থেকে গুলিস্তান যাচ্ছিলেন। তার কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩০ টাকা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। বললেন, সরকার বার বার তেলে দাম বাড়াচ্ছে। আর এর সুযোগে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আবদুল্লাহপুর থেকে ফার্মগেট যাওয়ার জন্য ৩নং বাসে উঠেছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির সিটি করেসপন্ডেন্ট আবদুল মান্নান। তিনি বললেন, আমার কাছে ভাড়া চাওয়া হয়েছে ১৮ টাকা। কারণ জানতে চাইলে বলছে ‘ভাড়া দেন নইলে নাইমা যান।’ অথচ সরকার এখনও ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়নি। আবদুল মান্নান এয়ারপোর্ট ওভারব্রিজের কাছে এসে বাসটি তেলে না গ্যাসে চলে তা চালকের কাছে জানতে চান। দেখা যায় বাসটি গ্যাসচালিত। এ অবস্থায় যাত্রীরা চালক জহুরুল ইসলাম ও কনডাক্টর মনিরকে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। পরে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট বাসটি জব্দ করে। গতকাল সরজমিনে ঘুরে দেয়া যায়, ৬নং সিটিং সার্ভিসে মতিঝিল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১৬ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ১২ টাকা। এ পরিবহনে নতুন বাজার থেকে ফার্মগেটের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ৭ টাকা। তুরাগ পরিবহনের লোকাল বাসে টঙ্গি থেকে যাত্রাবাড়ী যেতে ভাড়া লাগতো ২২ টাকা। গতকাল থেকে আদায় করা হচ্ছে ২৭ টাকা। তুরাগ পরিবহনে টঙ্গি থেকে সায়েদাবাদ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৩২ টাকা। আগে নেয়া হতো ২৫ টাকা। আবদুল্লাহপুর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ৩নং রুটের বাসে আদায় করা হচ্ছে ২৫ টাকা। আগে নেয়া হতো ২০ টাকা। ৩নং বাসে এখন আবদুল্লাহপুর থেকে কাওরানবাজার পর্যন্তই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১৮ টাকা। ৪/এ রুটে চলাচলকারী সুপ্রভাত সিটি সার্ভিসে টঙ্গি থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। আগে ছিল ২৪ টাকা। গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যেতে ৮নং বাসে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২৫ টাকা। আগে ছিল ২০ টাকা। মিরপুর ১২নং থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে এনা পরিবহন আদায় করেছে ২৪ টাকা। আগে নেয়া হতো ২০ টাকা। একই দূরত্বে বিহঙ্গ পরিবহন আদায় করছে ২৫ টাকা। মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত তানজিল পরিবহনে আদায় করা হচ্ছে ৩০ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ২২ টাকা। মিরপুর ১২নং থেকে যাত্রাবাড়ী যেতে শিখর পরিবহন আদায় করা শুরু করেছে ২৬ টাকা। আগে নেয়া হতো ২১ টাকা। মিরপুর ১২ থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত যেতে ইটিসি পরিবহন আদায় করছে ২২ টাকা। আগে নেয়া হতো ১৭ টাকা। তবে কাউন্টারভিত্তিক বাসগুলোতে বেশিদামে টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায়নি।
ঘটেছে। পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আবার যেসব বাস গ্যাসে চলে সেসব বাসেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। কিছু অসাধু পরিবহন মালিক ও শ্রমিক গ্যাসের দাম বাড়লেও ভাড়া বৃদ্ধি করে। আবার তেলের দাম বাড়লেও ভাড়া বাড়িয়ে ফায়দা লোটে- এমন অভিযোগ যাত্রীদের। তবে এসব অসাধু পরিবহন মালিক শ্রমিক নিজেদের ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা বলে পরিচয় দেয়। ফলে তাদের কাছে পুলিশ প্রশাসনও অসহায় হয়ে পড়ে। অবশ্য সীমিত কিছু ক্ষেত্রে পরিবহনের মালিক বাড়তি ভাড়া আদায়ের নির্দেশ না দিলেও পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এমন চিত্র দেখা গেছে। ওদিকে শুক্রবার সড়ক ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সরকার ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করার আগে কেউ ভাড়া বাড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৫ টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার থেকেই এটি কার্যকর হয়েছে। বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী এখন পেট্রল লিটারপ্রতি ৯১ টাকা, অকটেন ৯৪, কেরোসিন ৬১, ডিজেল ৬১ ও ফার্নেস ওয়েল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে পরিবহন নৈরাজ্যের নানা চিত্র দেখা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণ জানতে চাইলে পরিবহন শ্রমিকরা মারমুখি হয়ে উঠেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে পালিয়ে গেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ভাড়া বাড়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিবহন শ্রমিকরা স্বাভাবিক এবং যুক্তিসঙ্গত আচরণ করেননি। একইভাবে উত্তেজিত মারমুখি ছিলেন যাত্রীরা। বিশেষ করে রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষ যারা লোকাল বাসে চলাচল করে থাকেন তাদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। মিরপুর ১-এর ভিশন গার্মেন্টসের সুপারভাইজার জালাল আহমেদ গতকাল তানজিল পরিবহনে মিরপুর থেকে গুলিস্তান যাচ্ছিলেন। তার কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩০ টাকা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। বললেন, সরকার বার বার তেলে দাম বাড়াচ্ছে। আর এর সুযোগে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আবদুল্লাহপুর থেকে ফার্মগেট যাওয়ার জন্য ৩নং বাসে উঠেছিলেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির সিটি করেসপন্ডেন্ট আবদুল মান্নান। তিনি বললেন, আমার কাছে ভাড়া চাওয়া হয়েছে ১৮ টাকা। কারণ জানতে চাইলে বলছে ‘ভাড়া দেন নইলে নাইমা যান।’ অথচ সরকার এখনও ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়নি। আবদুল মান্নান এয়ারপোর্ট ওভারব্রিজের কাছে এসে বাসটি তেলে না গ্যাসে চলে তা চালকের কাছে জানতে চান। দেখা যায় বাসটি গ্যাসচালিত। এ অবস্থায় যাত্রীরা চালক জহুরুল ইসলাম ও কনডাক্টর মনিরকে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। পরে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট বাসটি জব্দ করে। গতকাল সরজমিনে ঘুরে দেয়া যায়, ৬নং সিটিং সার্ভিসে মতিঝিল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১৬ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ১২ টাকা। এ পরিবহনে নতুন বাজার থেকে ফার্মগেটের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ৭ টাকা। তুরাগ পরিবহনের লোকাল বাসে টঙ্গি থেকে যাত্রাবাড়ী যেতে ভাড়া লাগতো ২২ টাকা। গতকাল থেকে আদায় করা হচ্ছে ২৭ টাকা। তুরাগ পরিবহনে টঙ্গি থেকে সায়েদাবাদ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৩২ টাকা। আগে নেয়া হতো ২৫ টাকা। আবদুল্লাহপুর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ৩নং রুটের বাসে আদায় করা হচ্ছে ২৫ টাকা। আগে নেয়া হতো ২০ টাকা। ৩নং বাসে এখন আবদুল্লাহপুর থেকে কাওরানবাজার পর্যন্তই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১৮ টাকা। ৪/এ রুটে চলাচলকারী সুপ্রভাত সিটি সার্ভিসে টঙ্গি থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। আগে ছিল ২৪ টাকা। গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যেতে ৮নং বাসে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২৫ টাকা। আগে ছিল ২০ টাকা। মিরপুর ১২নং থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে এনা পরিবহন আদায় করেছে ২৪ টাকা। আগে নেয়া হতো ২০ টাকা। একই দূরত্বে বিহঙ্গ পরিবহন আদায় করছে ২৫ টাকা। মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত তানজিল পরিবহনে আদায় করা হচ্ছে ৩০ টাকা। আগে ভাড়া ছিল ২২ টাকা। মিরপুর ১২নং থেকে যাত্রাবাড়ী যেতে শিখর পরিবহন আদায় করা শুরু করেছে ২৬ টাকা। আগে নেয়া হতো ২১ টাকা। মিরপুর ১২ থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত যেতে ইটিসি পরিবহন আদায় করছে ২২ টাকা। আগে নেয়া হতো ১৭ টাকা। তবে কাউন্টারভিত্তিক বাসগুলোতে বেশিদামে টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায়নি।
No comments