তাওয়াক্কুল কারমান ও তার ফেসবুক by জামান সরদার
নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন 'ম্যাজিক কল' পেয়েছিলেন ভোর ৫টায়। ভেবেছিলেন এত ভোরে ফোন! নিশ্চয়ই খারাপ খবর আছে। কিন্তু বাস্তবে জীবনের শ্রেষ্ঠ সংবাদটি শুনেছিলেন ফোনের ওপাশ থেকে। বস্তুত নোবেল কমিটি চায়, পুরস্কার বিজয়ীরাই তাদের অর্জনের খবর সবার আগে জানতে পারুক। তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে। বিশ্বের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার মাত্র কয়েক মিনিট আগে নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে ফোন কল করা হয়। যাকে ফোন
করা হয়েছে; তার জন্য সেটা অনেক সময়ই বড্ড অসময় হতে পারে, হতে পারে তিনি তখন অনানুষ্ঠানিক মুহূর্ত পার করছেন। যে কারণে অনেকেই খবরটি আর সরাসরি পান না। এ বছর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তিনজনের অন্যতম ইয়েমেনি সাংবাদিক কাম রাজনীতিক কাম মানবাধিকার কর্মী তাওয়াক্কুল আবদেল-সালাম কারমানের ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটেছিল। তিনি খবরটি প্রথম বিবিসি আরবি সার্ভিসের একজন সাংবাদিকের কাছে শোনেন। এবং তিনি তখন নিজের ফেসবুক পেজে ব্যস্ত ছিলেন। নোবেল শান্তি পুরস্কারের জুরিবোর্ড যেমনটি বলেছে_ 'আরব বসন্তর আগে ও পরে রাজপথে তৎপর থেকে তাওয়াক্কুল কারমান ইয়েমেনে নারী অধিকার, গণতন্ত্র ও শান্তির সংগ্রাম এগিয়ে নিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছেন। মাত্র ৩২ বছর বয়সী এবং নোবেল বিজয়ী প্রথম আরব নারী কারমান সন্তান লালনের পাশাপাশি রাজনীতি, সাংবাদিকতা ও রাজপথই কেবল সামলান না; অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেন।'
প্রত্যেকবার, বিশেষ করে নোবেল শান্তি, সাহিত্য ও অর্থনীতি পুরস্কার ঘোষণার আগে সম্ভাব্য প্রাপক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়ে থাকে। বাজি ধরার ঘটনাও বিরল নয়। এ ধরনের বিশ্লেষকের বেশিরভাগই এবার একমত ছিলেন যে আরব জাগরণের সঙ্গে যুক্ত কেউ শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন। এই জাগরণের পেছনে যেহেতু ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বড় ভূমিকা পালন করেছে, এই জগতে তৎপর কয়েকজন ব্লগার ও ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্টের নামও জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছিল। অনুমান বিফলে যায়নি। শান্তি পুরস্কার বিজয়ী তিনজনের একজন আরব জাগরণে রাজপথের সোচ্চার কণ্ঠস্বর, আবার ফেসবুকেও সমান তৎপর।
যখন অসলোতে শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়, তাওয়াক্কুল কারমান তখন তার ফেসবুক পেজে ব্যস্ত ছিলেন। মাত্র তিন দিন আগে তিনি পেজটি খুলেছেন। কারণ তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে 'ঝামেলা' হচ্ছিল। তিনি ওই অ্যাকাউন্টে শেষ স্ট্যাটাস দেন_ 'এই অ্যাকাউন্টের ঝামেলা নিয়ে আর পারছি না। আরেকটি পেজ খুলেছি। প্রিয় বিপ্লবীরা, আমি এখন থেকে সেখানেই সক্রিয় থাকব। আপনাদের সেখানে পেলে খুশি হব।' শুক্রবার সকাল, ছুটির দিন, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি বোমা হামলার বিরুদ্ধে নতুন পেজে একটি 'স্ট্যাটাস' দিয়েছিলেন। তিনি যে কতটা জনপ্রিয়, সেটাতে কমেন্টের বন্যা দেখেই বোঝা যায়। তুমুল আলোচনা যখন চলছে, ততক্ষণে শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয়ে গেছে। আলোচনার এক পর্যায়ে একজন তাকে অভিনন্দন জানায় এবং সবাইকে খবরটি দিয়ে দেয়।
তাওয়াক্কুল কারমানের পরের স্ট্যাটাস নোবেল পুরস্কার নিয়েই। তিনি সেখানে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী, আন্দোলনকারী, বাবা-মা, সন্তান, স্বামী, ভাই, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী_ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, পরিবর্তনের স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। আর মঙ্গলবার পোস্ট করা শেষ স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের চেয়ে লাখ গুণ বেশি গর্ব বোধ করেন তার তরুণ সহযোদ্ধাদের নিয়ে।
বলা বাহুল্য, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর থেকে নতুন পেজের সদস্য সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। মাত্র এক সপ্তাহে তা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাড়ছে লাইক ও কমেন্টের সংখ্যাও। সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি পছন্দ করেছেন এক হাজারের বেশি জন আর কমেন্ট করেছেন আরও পাঁচ শতাধিক। সন্দেহ কি, বাড়ছে সহযোদ্ধার সংখ্যাও; যাদের তিনি নোবেল পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান মনে করেন।
প্রত্যেকবার, বিশেষ করে নোবেল শান্তি, সাহিত্য ও অর্থনীতি পুরস্কার ঘোষণার আগে সম্ভাব্য প্রাপক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়ে থাকে। বাজি ধরার ঘটনাও বিরল নয়। এ ধরনের বিশ্লেষকের বেশিরভাগই এবার একমত ছিলেন যে আরব জাগরণের সঙ্গে যুক্ত কেউ শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন। এই জাগরণের পেছনে যেহেতু ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বড় ভূমিকা পালন করেছে, এই জগতে তৎপর কয়েকজন ব্লগার ও ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্টের নামও জোরেশোরে উচ্চারিত হয়েছিল। অনুমান বিফলে যায়নি। শান্তি পুরস্কার বিজয়ী তিনজনের একজন আরব জাগরণে রাজপথের সোচ্চার কণ্ঠস্বর, আবার ফেসবুকেও সমান তৎপর।
যখন অসলোতে শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়, তাওয়াক্কুল কারমান তখন তার ফেসবুক পেজে ব্যস্ত ছিলেন। মাত্র তিন দিন আগে তিনি পেজটি খুলেছেন। কারণ তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে 'ঝামেলা' হচ্ছিল। তিনি ওই অ্যাকাউন্টে শেষ স্ট্যাটাস দেন_ 'এই অ্যাকাউন্টের ঝামেলা নিয়ে আর পারছি না। আরেকটি পেজ খুলেছি। প্রিয় বিপ্লবীরা, আমি এখন থেকে সেখানেই সক্রিয় থাকব। আপনাদের সেখানে পেলে খুশি হব।' শুক্রবার সকাল, ছুটির দিন, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি বোমা হামলার বিরুদ্ধে নতুন পেজে একটি 'স্ট্যাটাস' দিয়েছিলেন। তিনি যে কতটা জনপ্রিয়, সেটাতে কমেন্টের বন্যা দেখেই বোঝা যায়। তুমুল আলোচনা যখন চলছে, ততক্ষণে শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয়ে গেছে। আলোচনার এক পর্যায়ে একজন তাকে অভিনন্দন জানায় এবং সবাইকে খবরটি দিয়ে দেয়।
তাওয়াক্কুল কারমানের পরের স্ট্যাটাস নোবেল পুরস্কার নিয়েই। তিনি সেখানে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী, আন্দোলনকারী, বাবা-মা, সন্তান, স্বামী, ভাই, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী_ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, পরিবর্তনের স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। আর মঙ্গলবার পোস্ট করা শেষ স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের চেয়ে লাখ গুণ বেশি গর্ব বোধ করেন তার তরুণ সহযোদ্ধাদের নিয়ে।
বলা বাহুল্য, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর থেকে নতুন পেজের সদস্য সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। মাত্র এক সপ্তাহে তা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাড়ছে লাইক ও কমেন্টের সংখ্যাও। সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি পছন্দ করেছেন এক হাজারের বেশি জন আর কমেন্ট করেছেন আরও পাঁচ শতাধিক। সন্দেহ কি, বাড়ছে সহযোদ্ধার সংখ্যাও; যাদের তিনি নোবেল পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান মনে করেন।
No comments