মাদকের আখড়া গণকটুলী-নীলদংশন থেকে মুক্তি চাই

বিজিবি সদর দফতরের কাছেই অবস্থিত গণকটুলিতে প্রায় প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা ও ব্যবহার চলছে দীর্ঘদিন থেকেই। মাঝে মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলে। কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী ধরাও পড়ে। আবার অদৃশ্য কারণে এরা এক সময় ছাড়াও পেয়ে যায়। ফের তাদের অনেকে একই নেশার জগতে যুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে সুইপার কলোনি হিসেবে পরিচিত গণকটুলীবাসীরা মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারে না। এ যেন এক নিদারুণ অভিশাপ!


বুধবার সমকালে গণকটুলীতে মাদকের কারণে কীভাবে সে এলাকার ছেলে-বুড়ো সবাই নীল হচ্ছে তার বিবরণ প্রকাশ পেয়েছে। মাদক ব্যবহারকারীরা কেউ কেউ এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে গিয়ে নিজেরাই চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ায় এসব এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক। হাজারীবাগ থানার কর্মকর্তা এ ধরনের অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু কীভাবে এটা নির্মূল করা যায় সে ব্যাপারে তিনিও কোনো পথ নির্দেশ করতে পারেননি। মাদক ব্যবসার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের একটি অংশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ থাকেই। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে সে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। এদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেফতার যে হয় না, তা নয়। কিন্তু মাদক ব্যবসা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় না। গ্রেফতারকৃত নেতাদের নামেই ব্যবসাটি চলে। তাই এখানে শুধু গ্রেফতার করেই দায়িত্ব সারা হয়েছে ভাবলে চলবে না। মাদক ব্যবসার বখরা নেওয়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর পুরোপুরি মাদকাসক্তদের মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সাহায্যে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এভাবেই শুধু গণকটুলী নয়, ঢাকার সবক'টি প্রতিষ্ঠিত মাদকের হাট বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব। তবে এ জন্য প্রয়োজন প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ। দেশের মানুষ বিশেষ করে, তরুণদের মাদকের নীলদংশনমুক্ত রাখতে হলে আমাদের এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতেই হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.